মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের ভারত সফরের মাত্র কয়েক দিন আগে ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম তাদের ইন্ডিয়া ফ্যাক্টশিট প্রকাশ করেছে, যেখানে মূলত বিতর্কিত সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
মোদি সরকার যখন তার দেশের সবচেয়ে ভালো চেহারাটা দেখানোর জন্য চেষ্টা করছেন এবং এমনকি বস্তির দৃশ্য আড়াল করার জন্য দেয়াল পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে, তখন ইউএসসিআইআরএফ এবং তাদের প্রকাশিত তথ্যপত্রে সিএএ এবং সংশ্লিষ্ট ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্সের কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউএসসিআইআরএফ নিজেদেরকে স্বাধীন, পক্ষপাতমুক্ত কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা হিসেবে উল্লেখ করেছে। দেশের বাইরে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর হুমকির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ এবং এ বিষয়ে রিপোর্টে দেয়ার জন্য এটা প্রতিষ্ঠা করেছে মার্কিন কংগ্রেস। ইউএসসিআইআরএফ মার্কিন সরকারকে পররাষ্ট্র নীতি গ্রহণের ব্যাপারে সুপারিশ করে থাকে এবং ‘ধর্মীয় নির্যাতন প্রতিরোধ এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে’।
রিপোর্টে বিশেষভাবে বলা হয়েছে যে, বিজেপির মুসলিম-বিদ্বেষী মানসিকতা দেশের আইনের উপর প্রভাব ফেলছে। এই প্রকাশনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও বলা হয়েছে যে, এনআরসি থেকে অমুসলিমরা বাদ পড়লে তাদের সুরক্ষার জন্য এই সিএএ কাজ করছে। এতে বলা হয়েছে যে, বিজেপি এমনভাবে এই আইনকে রাজনীতিকীকরণ করেছে যে, আসামে এনআরসি তালিকা থেকে যখন মুসলিম ও হিন্দু উভয়েই বাদ পড়ে, তখন তাদের বক্তব্য পুরোপুরি পাল্টে যায়।
রিপোর্টে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের নেতা মোহান ভগবৎকে উদ্ধৃত করা হয়েছে, যিনি বলেছেন, ‘এনআরসি থেকে নাম বাদ পড়লেও কোন হিন্দুকে বহিষ্কার করা হবে না’। রিপোর্টে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলা হয়েছে যে, তারা তাদের অবস্থান বদলে ফেলেছেন এবং তারা দাবি করেছেন যে, আসামের চুড়ান্ত এনআসি তালিকায় ‘প্রচুর ভুল রয়েছে’ এবং এগুলো ‘পুনরায় যাচাই করতে হবে’।
তালিকা থেকে বাদ পড়াদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে ব্যার্থ হওয়ায় বিজেপি সরকারকে দায়ি করে রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ‘আজ পর্যন্ত সরকার চুড়ান্ত এনআরসি তালিকা নিয়ে কোন নোটিশ দেয়নি। ফলে তালিকা থেকে বাদ পড়া ব্যক্তিরা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে গিয়ে আপিল করার সুযোগ পাচ্ছে না’।
যারা ভারতের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাননি, তাদের পরিণতি কি হতে পারে, সে বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরে ইউএসসিআইআরএফ বিশেষ করে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের উপর নজর দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, তালিকা তৈরির প্রক্রিয়ায় ‘সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, স্বচ্ছতা, সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল প্রক্রিয়া’ নিয়ে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ইউএসসিআইআরএফ একই সাথে উল্লেখ করেছে যে, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে পেশাদার ও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির অভাব রয়েছে এবং এতে কর্মরতদের যোগ্যতার মাত্রা কমিয়ে আনা এবং তাদেরকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে ব্যার্থ হওয়ায় ভারত সরকারের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে রিপোর্টে।
কমিশন আরও উল্লেখ করেছে যে, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল মুসলিমদেরকে টার্গেট করতে পারে, যাদেরকে এখনই বিদেশী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এতে আরও বলা হয়েছে যে, ‘সিএএ’তে তালিকাভুক্ত অমুসলিম ধর্মীয় গ্রুপগুলোকে অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের কোন প্রমাণ দিতে হবে না। এই তালিকা থেকেও মুসলিমদেরকে বাদ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে শিয়া ও আহমাদিয়া মুসলিমরা এই সুযোগ পাবে না যারা আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
সিএএ নিয়ে যখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিতর্ক চলছে, বিশেষ করে ইউরোপিও পার্লামেন্টে এই আইন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতারেস এটা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতা এবং সিয়াটল ও কেমব্রিজের মতো শহরগুলো এই আইন বাতিলের জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তখন ইউএসসিআইআরএফ-এর রিপোর্টটি আরেকটি বড় আঘাত হিসেবে এসেছে। সূত্র: এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।