মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মহাকাশ-সংশ্লিষ্ট শক্তি ও মর্যাদা অর্জনে এশিয়ায় প্রতিযোগিতা দিন দিন বাড়ছে। স্নায়ুযুদ্ধের সময়ও মহাশূন্য নিয়ে এমন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। ১৯৬১ সালে তরুণ ক্যারিশম্যাটিক নেতা জন এফ কেনেডি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পরপরই চন্দ্র জয়ের অঙ্গীকার করেন। অথচ প্রথম নভোচারী পাঠিয়েছিলো তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। আর পাকিস্তানের বিশ্বখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী আব্দুস সালাম প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানকে রাজি করিয়েছিলেন জাতীয় মহাকাশ সংস্থা স্থাপনের জন্য, যা ছিলো এই উপমহাদেশে প্রথম।
১৯৬১ সালের সেপ্টেম্বরে করাচিতে স্পেস এন্ড আপার এটমোসফিয়ার রিসার্স কমিশন (সুপারকো) কাজ শুরু করে। এটা ভারতের স্পেস রিসার্স অর্গানাইজেশন (ইসরো)-এর ৮ বছর আগের ঘটনা। পাকিস্তান তখন প্রশিক্ষণের জন্য শীর্ষ চার বিজ্ঞানীকে নাসা পাঠায়। তখন বিজ্ঞানী মহলে আব্দুস সালমের কাজ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছিল। ১৯৭৯ সালে তিনি পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ফলে তার পক্ষে সুপারকোতে পাকিস্তানের তরুণ মেধাবীদের আকৃষ্ট করা আরো সহজ হয়।
পাকিস্তান ১৯৬২ সালে এশিয়ার তৃতীয় দেশ হিসেবে রকেট রেহবার-১ উৎক্ষেপন করে। প্রথম দিকে এত এগিয়ে থাকার পরও আজ ইসরো থেকে অনেক পিছিয়ে গেছে সুপারকো। এটা হয়েছে শিক্ষাখাতে তহবিল বরাদ্দের অভাব ও বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য হাসিলে সামরিক নেতৃত্বের বার বার হস্তক্ষেপের কারণে।
সুপারকো তখন পারমাণবিক বোমা প্রকল্পে মননিবেশ করে। কিন্তু সংস্থাটির কার্যক্রম একেবাকে নিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হকের সময় ১৯৮০ থেকে ও ১৯৯০ এর মাঝামাঝি সময়ে। এর যোগাযোগ স্যাটেলাইট নির্মাণের বড় প্রকল্পটিতে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দেয়া হয়। বিজ্ঞানীদের সরিয়ে সংস্থা প্রধানের পদে সামরিক জেনারেলদের বসানো হয়। ভারতকে মোকাবেলার জন্য প্রচলিত ও পারমাণবিক শক্তি অর্জনের কাজে লাগানো হয় একে। এর বিপরীতে ১৯৮১ সালে ইসরো প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময় করে তারা অনেক এগিয়ে যায়। আর পাকিস্তান ১৯৯০ সালে তাও আবার চীনের সহযোগিতায় তার প্রথম স্যাটেলাইট বদর-১ উৎক্ষেপন করে।
১৯৯১ সালে চীনের মহাকাশ শিল্প মন্ত্রণালয় ও পাকিস্তানের সুপারকোর মধ্যে একটি সহযোগিতা চুক্তি সই হয়। কিন্তু এর পরের ২০ বছর এই সহযোগিতা মূলত কর্মী প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্যেই সীমিত ছিলো। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ, ইরান, মঙ্গোলিয়া, পাকিস্তান, পেরু, থাইল্যান্ড ও তুরস্ককে নিয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক স্পেস কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (আপসকো) শুরু করে। মহাকাশ প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বেইজিংয়ে এই চুক্তি সই হয়। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির পর এটা একই ধরনের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্ত:সরকার ও বহুপক্ষীয় মহাকাশ সংস্থা।
পাকিস্তানের মহাকাশ কর্মসূচি ২০৪০-এর অংশ হিসেবে ২০১১ সালে পাকিস্তানের জন্য পাকস্যাট-১আর তৈরি করে চীন এবং উৎক্ষেপন করে। এটা ছিলো পাকিস্তান-চীন মহাকাশ সহযোগিতার মাইলফলক। এর জীবনকাল ১৫ বছর এবং এটা দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া, পূর্ব ইউরোপ, পূর্ব আফ্রিকা ও পূর্ব এশিয়ায় সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
২০১২ সালে চায়না ন্যাশনাল স্পেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ) ও সুপারকোর মধ্যে মহাকাশ সহযোগিতা বিষয়ক ২০১২-২০ রোডম্যাপ সই হয়। ২০১৮ সালে ইমরান খানের বেইজিং সফরের সময় ওই চুক্তি আরো এগিয়ে নিতে দুই পক্ষ একমত হয়। এরই অংশ হিসেবে চীনের মহাকাশ যানে করে নভোচারী পাঠাবে পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির জন্য দুটি রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইটও উৎক্ষেপন করেছে চীন। ২০১৯ সালের এপ্রিলে দুই দেশ মাহকাশ অনুসন্ধান বিষয়ক একটি চুক্তি সই করে মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণায় নতুন ক্ষেত্রে প্রবেশ করেছে।
চীন তার বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) স্বার্থে একটি ‘স্পেস সিল্ক রোড’ তৈরির পরিকল্পনা করেছে। এতে সবগুলো বিআরআই দেশকে যুক্ত করে সেগুলোর সাবমেরিন থেকে বিমান পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচলে সহায়তা করা হবে। এভাবেই মহাকাশ ক্ষেত্রে পাকিস্তান ও চীনের সর্ব মওসুমের বন্ধুত্ব সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। সূত্র: এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।