Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনাভাইরাস আক্রান্তদের এইডসের ওষুধ ব্যবহার করছে চীন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০২০, ৪:১২ পিএম

করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের নিউমোনিয়ার মতো স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসায় এইডসের (এইচআইভি) ওষুধ ব্যবহার করছে চীন। এতে সুফল মিলছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। একটি বিখ্যাত আন্তর্জাতিক জার্নালেও বলা হয়েছে, এ ভাইরাসের সংক্রমণ চিকিৎসায় এইচআইভির ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে।

চীনে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে নতুন করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে ৮১ জনের মৃত্যু এবং ২ হাজার ৭০০ জন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে চীন। এই ভাইরাসের প্রতিকার খুঁজতে তোড়জোর চলছে পুরো বিশ্বে। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক ও জরুরি ভিত্তিতে এইচআইভি (এইডস) ভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিচ্ছেন চীনের চিকিৎসকরা।

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের (এনএইচসি) বেইজিং শাখা বলছে, অ্যাবভাই ইনকরপোরেশনের ক্যালেট্রা ব্র্যান্ড নামে বাজারে প্রচলিত এইচআইভির ওষুধ লোপিনাভির এবং রিটোনাভির সমন্বয়ে তারা চিকিৎসা দিচ্ছেন। নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা পরিকল্পনায় এটি তাদের সর্বশেষ সংযোজন। কোনো কার্যকর ভাইরাসরোধী ওষুধ না পাওয়া পর্যন্ত তারা এই ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিতে থাকবেন। রোগীদের দিনে দু’বার লোপিনাভির এবং রিটোনাভির ট্যাবলেট এবং নেবুলাইজারের মাধ্যমে আলফা-ইন্টারফেরনের একটি ডোজ প্রতিদিন দুইবার নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট গত শুক্রবার জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় লোপিনাভির এবং রিটোনাভির সমন্বিত ব্যবহারের একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এদিকে গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র দ্রæত এ ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করবে। বেইজিংয়ে পেকিং
ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট হসপিটালের শ্বাসতন্ত্র বিশেষজ্ঞ ওয়াং গুয়াংফা উহানে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের পরীক্ষা করতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি চায়না নিউজ উইককে বলেন, তার চিকিৎসক তাকে এইচআইভির ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিয়েছেন। পরামর্শ অনুযায়ী তিনি ওষুধ সেবন করে সুফলও পেয়েছেন।

চীনের গণমাধ্যম সিনহুয়ায় এক বিশেষজ্ঞের বরাতে বলা হয়েছে, আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ আকার ধারণ করতে পারে। চীন ছাড়াও ১৮ টি দেশের ৭৮ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং তাইওয়ানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ইসরায়েলেও এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এ ভাইরাসের নাম দিয়েছে ২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে চীনে সফর করেছেন এমন লোকজনের মাধ্যমেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। সে কারণে অনেক দেশই এ ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন সফরে নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

এদিকে, প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে গবেষণাগারে করোনাভাইরাস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। একে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন তারা।
সূত্র: ব্লুমবার্গ



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ