নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মুজিববর্ষের প্রথম ক্রীড়া আসর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয় করল যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিন। গতকাল বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ফাইনালে এশিয়ার জায়ান্ট ফিলিস্তিন ৩-১ গোলে আফ্রিকান শক্তি বুরুন্ডিকে হারিয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে শিরোপা জিতে নেয়। বিজয়ী দলের হয়ে ফরোয়ার্ড খালেদ সালেম, অধিনায়ক সামেহ মারাবা ও ফরোয়ার্ড লেথ খারুব একটি করে গোল করেন। বুরুন্ডির পক্ষে সান্তনাসূচক একমাত্র গোলটি শোধ দেন ডিফেন্ডার নিদিকুমানা। ফাইনাল খেলা শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের হাতে ট্রফি ও প্রাইজমানি তুলে দেন ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি, সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশিদ এবং বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
ধারে-ভারে এবং শক্তিতে এবারো ফিলিস্তিন ছিল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের টপ ফেভারিট দল। তারা ২০১৮ সালে টুর্নামেন্টের পঞ্চম আসরে যার প্রমাণ রেখেছে। ওইবছর প্রথমাবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জিতে দেশে ফিরেছিল। ওটাই ছিল দেশের বাইরে কোনো আন্তর্জাতিক আসরে ফিলিস্তিনের প্রথম সাফল্য। সেই ট্রফি তারা নিজেদের দখলেই রেখে দিল। টুর্নামেন্টের পরপর দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। সেমিফাইনালে স্বাগতিক বাংলাদেশকে ৩-০ গোলে গুড়িয়ে দেয়া আফ্রিকান ফুটবল শক্তি বুরুন্ডি ফাইনালে দাঁড়াতেই পারেনি ফিলিস্তিনের সামনে। প্রথমার্ধেই ৩ গোল হজম করে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে আফ্রিকার দেশটি। স্কোরই বলে দেয় প্রথমার্ধে কতটা আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় বিজয়ীরা। যদিও ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে ফিলিস্তিনকে চেপে ধরে বুরুন্ডি। একটি গোলও শোধ দেয় তারা। ব্যস, ওটুকুই। ফিলিস্তিনের শক্ত রক্ষণদূর্গ ওই একবারই ভেদ করতে পারে আফ্রিকার শক্তি। চেষ্টা করেও দ্বিতীয় গোলের দেখা পায়নি তারা। তাই শেষ পর্যন্ত লিড ধরে রেখেই শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে ফিলিস্তিন। ফাইনালে এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের লড়াইয়ে জয় হয় এশিয়ারই।
কাল ফাইনালে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় ফিলিস্তিন। ফলে গোল পেতে দেরী হয়নি তাদের। ৩ মিনিটেই গোল পায় দলটি। যা দলের গতি বাড়ানো জন্য যথেষ্ট। তাদের প্রথম গোলের নায়ক খালেদ সালেম। অধিনায়ক সামেহ মারাবার ক্রস থেকে সালেমের প্লেসিং শটের গোলে এগিয়ে যায় চ্যাম্পিয়নরা (১-০)। ধারাবাহিক আক্রমণের মুখে অধিনায়ক মারাবা গোলে ম্যাচের ১০ মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় ফিলিস্তিন (২-০)। আর ২৬ মিনিটে খারুবের গোলে ৩-০ ব্যবধানের লিড নেয় তারা। এই ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে আর গোল পায়নি ফিলিস্তিন। উল্টো এক গোল হজম করে তারা। ম্যাচে ফিরতে হলে তিন গোল। তাতে অন্তত অতিরিক্ত সময়ে টেনে নেয়া যাবে খেলা। আর জয়ের জন্য দরকার চার গোল। এমন সমীকারণ নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু করে বুরুন্ডি। এই অর্ধের শুরু থেকেই তারা ধারালো আক্রমণ চালায় প্রতিপক্ষের রক্ষণদূর্গে। বলা যায় ফিলিস্তিনের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের অমনোযোগীর সুযোগে তাদের বক্সেই দ্বিতীয়ার্ধের বেশী সময় পার করে বুরুন্ডির ফরোয়ার্ডরা। কিন্তু তারা সাফল্য পান মাত্র একবারই। ম্যাচের ৬০ মিনিটে নিদিকুমানা গোল করে ব্যবধান কমানো ছাড়া ফিলিস্তিকে আর বিপদে ফেলতে পারেননি (১-৩)। এরপর ফিলিস্তিন সাবধানী হয়ে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করলেও আর ভুল করেনি বুরুন্ডির রক্ষণভাগ। ফলে শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলের জয় নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ফিলিস্তিনই প্রথম দল যারা টানা দুইবার শিরোপা জিতল। এর আগে মালয়েশিয়া থেকে আসা দু’টি দল নিয়ে গেছে জাতির পিতার নামে টুর্নামেন্টের ট্রফি। ১৯৯৬-৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মালয়েশিয়া লাল দল। আর ২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় মালয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-২৩ দল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।