Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রাণঘাতী ভাইরাসে ৯ জনের মৃত্যু, ছড়িয়ে পড়ছে দেশে দেশে, জরুরী বৈঠক তলব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৩৯ পিএম

চীনে ছড়িয়ে পড়া ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ভাইরাস রূপান্তরিত হয়ে আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে চীনের কর্মকর্তারা। এজন্য ভাইরাসটিকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে রাখতে পদক্ষেপ জোরদার করেছে দেশটি।

চীনের উহানের একটি মাছ বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৪৪০ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া চীনের বিভিন্ন প্রদেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর দিয়েছে দেশটির কর্মকর্তারা। তবে চীন ছাড়াও এখন পর্যন্ত জাপান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়েছে।

এদিকে পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিতে থাকায় চীনা কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে যে, দেশটি এখন প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে’ রয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার দেশটি জানায়, এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে যাওয়া ঘটনা শনাক্ত করেছে তারা।

জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, হাসপাতালগুলোতে কর্মরত বেশ কয়েকজন কর্মীর শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত করা গেছে। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বুধবার জেনেভাভিত্তিক জাতিসঙ্ঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা বলছে, এই ভাইরাসের প্রকোপ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কতটা হুমকি তা পরিমাপ করতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই বৈঠক ডাকা হয়েছে।

চীনে ভ্রমণ বা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আনা হয়নি। তবে ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন দল এ বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। জং ন্যানসান জানিয়েছেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশে দুই ব্যক্তি তাদের পরিবারের সদস্যদের দ্বারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, নতুন ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে এবং লোকজনের জীবন বাঁচানোকেই সবচেয়ে বেশি গুরত্ব দেয়া হচ্ছে। সোমবার পর্যন্ত নতুন করে আরো ২১৭ জনের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১৯৮ জনই উহান প্রদেশের বাসিন্দা।

অপর দিকে বেইজিংয়ে নতুন করে আরো পাঁচজন এবং গুয়াংডং প্রদেশে আরো ১৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্বব্যাপী ২২২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত সোমবার প্রথম একজনের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

এদিকে গত কয়েক দিনে উহান শহর থেকে উদ্ভূত এ ভাইরাসটিতে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে থাকার খবরে এশিয়ার বাজারগুলোতে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। চীনা নববর্ষের ছুটি উপলক্ষে দেশটির কোটি কোটি নাগরিক এক শহর থেকে অন্য শহরে ভ্রমণের প্রস্তুতি নেয়ায় প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বেগ মারাত্মক আকার ধারণ করছে। আগামী শুক্রবার থেকে চীনে নববর্ষের ছুটি শুরু হচ্ছে।

ভাইরাসটি ছোঁয়াচে, জানার পর থেকে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলো নতুন এ করোনা ভাইরাস শনাক্তে পরীক্ষা-নিরীক্ষার গতি বাড়িয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ বুধবার বৈঠক ডেকেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও)। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটির সংক্রমণের সাথে ২০০৩ সালের দিকে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া সিভিয়ার অ্যাকুট রেসপারেটরি সিনড্রোমের (সার্স) সাদৃশ্য রয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ায় তার ছাপ এশিয়ার শেয়ারবাজারেও পড়ছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে। এ/পি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ