পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : স্থানীয় হিন্দু নেতার প্ররোচনায় গেন্ডারিয়া থানার ওসি কর্তৃক মসজিদ ভাঙচুর মুসল্লিদের অস্ত্রের মুখে জোর করে বের করে দেয়া এবং নির্মাণ কাজ বন্ধের তীব্র প্রতিবাদ ও ওসিকে বরখাস্ত করার দাবি করেছেন ইসলামী দল ও সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, মসজিদ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই
রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় একটি মসজিদ থেকে মুসল্লিদের টেনে-হিঁচড়ে পুলিশ কর্তৃক বের করে দেয়া এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, নির্মাণাধীন এ মসজিদে কোনো ধরনের কাজ না করার জন্য নির্দেশ দিয়ে পুলিশ হিন্দু নেতার পক্ষ নিয়ে অপকর্ম করেছেন। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে এভাবে প্রকাশ্যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। মসজিদ আল্লাহর ঘর। একবার মসজিদ স্থাপন হয়ে গেলে এটা ভাঙার কারো এখতিয়ার নেই।
তিনি কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, তার চেয়ে আর বড় জালেম কে হতে পারে, যারা আল্লাহর ঘর মসজিদে তাঁর নাম নিতে বাধা দেয় এবং তা ভেঙে ফেলে। তিনি বলেন, অবিলম্বে গেন্ডারিয়ায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া এবং মসজিদে নামাজ আদায়ে বাধা প্রদান করে দেয়া মসজিদ মুসলমানের হাতে ফিরিয়ে দিতে ব্যর্থ হলে ধর্মপ্রাণ তাওহিদী জনতা প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুললে তাগুতি শক্তির আখের রক্ষা হবে না।
খেলাফত আন্দোলন
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা আতাউল্লাহ বলেন, শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানদের বাংলাদেশে গেন্ডারিয়ায় রোজাদার-মুসল্লিদের লাঞ্ছিত করে মসজিদ থেকে বের করে মসজিদ ভাঙচুর, কোরআন অবমাননা করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, রোজাদার মুসল্লিদের উপর এরূপ হামলা এদেশের মুসলমানদের হৃদয়ে মারাত্মক আঘাত হেনেছে। বাংলাদেশের মতো মুসলিম দেশে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা সহ্য করা যায় না।
গতকাল রাজধানীর ঢাকার কামরাঙ্গীরচর মাদরাসায় খেলাফত আন্দোলনের এক জরুরি বৈঠকে সভাপতির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- দলের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ জাফরুল্লাহ খান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি ফখরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা সুলতান মহিউদ্দীন ও মাওলানা সানাউল্লাহ প্রমুখ।
মাওলানা আতাউল্লাহ আরও বলেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মুসল্লিদের সাথে এরূপ দুর্বব্যবহার না করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিষয়টিকে সমাধা করতে পারতেন। পুলিশের আচরণে প্রমাণ হয়, মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে মুসলমানদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা হিন্দুদের খুশি করতে চান। সুতরাং যারা আইন হাতে তুলে এ ন্যক্কারজনক হামলা করেছে তারাই জঙ্গি ও সন্ত্রাসী।
নেতৃবৃন্দ মসজিদে হামলা ও কোরআন অবমাননার দায়ে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মিজানসহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এবং মুসলমানদের প্রয়োজনেই সরকারিভাবে মসজিদ নির্মাণ করে দেয়ার দাবি করেন।
ইসলামী ঐক্যজোট
ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী ও মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ গতকাল বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেন, মসজিদের নগরীতে মসজিদ নির্মাণে বাধা ও প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে ভীতি প্রদর্শন করে মুসল্লিদের বের করে দিয়ে কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা শুধু ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধেই অবস্থান নেয়নি। আমাদের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে চায়। তারা বলেন, আমরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি এবং আল্লাহর ঘর মসজিদের নিরাপত্তার সার্বিক বিধানে প্রসাশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
খেলাফত ইসলামী
খেলাফত ইসলামীর চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেছেন গেন্ডারিয়ায় মসজিদ নির্মাণে বাধা ও মুসল্লিদের অস্ত্রের মুখে মসজিদ থেকে বের করে দেশে হিন্দু-রাজত্ব কায়েমের বন্দোবস্ত চলছে। হিন্দু শিক্ষক রাসূলকে গালি দেয়, প্রতিবাদ করলে বলা হয় জঙ্গি। হিন্দু শিক্ষক ছাত্রী ধর্ষণ করে, অপরাধীকে গ্রেফতার করে বিচারের নামে চলে আইওয়াশ। শিক্ষানীতির নামে পাঠপুস্তকে হিন্দুত্ববাদের দীক্ষার আয়োজন চূড়ান্ত। আলেমদের শত প্রতিবাদেও ঠোঁট নড়ে না অপদার্থ শিক্ষামন্ত্রীর। এবার সরাসরি আঘাত এসেছে গেন্ডারিয়ায় আল্লাহর ঘর মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের উপর। গতকাল স্থানীয় হিন্দু নেতার প্ররোচনায় একজন পুলিশ কর্তকর্তা দলবল নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মুসল্লিদের মসজিদ ছাড়তে বাধ্য করেছেন, মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। সেখানে পুলিশের আচরণ দেখে মনে হয়েছে মুসল্লিরা দেশের নাগরিক নয়, হিন্দুত্বাবাদীদের আশ্রিত প্রজা। এভাবে হিন্দুদের প্রাধান্য চলছে সব জায়গায়। আর বঞ্চিত রয়ে যাচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা। সরকারের এমন নীতি দেশের জন্য ভয়ঙ্কর হবে। তিনি মসজিদ ও নামাজবিরোধী পুলিশ কর্মকর্তার অপসারণ এবং ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
খেলাফত মজলিস
খেলাফত মজলিস মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, বর্তমান সরকারের আমলে একের পর এক ইসলাম ও মুসলমানদের উপর আঘাত করা হচ্ছে। হিন্দুদের প্ররোচনায় পুলিশ গেন্ডারিয়ায় নির্মাণাধীন একটি মসজিদ থেকে অস্ত্রের মুখে জোর করে মুসল্লিদের বের করে দিয়ে ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়েছে। সেখানে মসজিদের অভ্যন্তরের জিনিসপত্র তছনছ করা হয়েছে। তিনি এ ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি সরকারকে বলেন, মুসলমানদের সেন্টিমেন্ট নিয়ে খেলা করবেন না। অনতিবিলম্বে মসজিদ নির্মাণে বাঁধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।