পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : পঁচানব্বই ভাগ মুসলমানের এদেশে মসজিদ নির্মাণে মৌলবাদী হিন্দুদের বাধা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। গেন্ডারিয়ায় অবিলম্বে মুসলমানদের মসজিদ খুলে দিতে হবে। পাশপাশি মসজিদ বন্ধের চক্রান্তে জড়িত এবং মৌলবাদী হিন্দুগং ও বন্দুক উচিয়ে মুসল্লিদের উপর হামলাকারী গেন্ডারিয়ার ওসি মিজানকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
কট্টর সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের উস্কানিমূলক জিডির এবং প্রশাসনের মাধ্যমে গেন্ডারিয়ায় মসজিদ বন্ধের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সংগ্রামী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা, পীরজাদা পীর আখতার হোসেন বুখারী ও ওলামা লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আলহাজ ক্বাজী মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী এবং সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাজী হাবিবুল্লাহ রূপগঞ্জী ও দফতর সম্পাদক মাওলানা শওকত আলী শেখ এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ভারতে একের পর মসজিদ বন্ধের ন্যায় এবার গেন্ডরিয়ায় মুসলমানদের মসজিদ বন্ধ করে দেয়া এদেশি মৌলবাদী হিন্দুদের ভয়াবহ চক্রান্ত। ভারতে কোথাও কোনো মসজিদ হলে সেটাকে মন্দিরের জমি বলে মসজিদ নির্মাণ বন্ধ করে দেয় মৌলবাদী হিন্দুরা। ২০১০ সাল পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা রোডে, ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাসূলপুরে, ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায়, গত মাসে পশ্চিমবঙ্গের মঙ্গলকোটে উগ্র মৌলবাদী হিন্দুরা মন্দিরের জমির নামে মুসলমানদের মসজিদ নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছে। গেন্ডারিয়ার মসজিদের স্থানটি সরকার থেকে কমিটির লোকের নিলেও নামাজ বন্ধ কেন?
তারা বলেন, গেন্ডারিয়াতেও তারা একই চক্রান্ত করেছে। স্থানীয় মুসল্লিরা সরকারি জমিতে লিজ নিয়ে মসজিদ নির্মাণ করলেও মৌলবাদী হিন্দুরা সেটা মন্দিরের জমি বলে মসজিদ নির্মাণে বাধা দেয়। কিন্তু মন্দিরের জমির কোনো কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি। তারপরও গেন্ডারিয়ার হিন্দুত্ববাদী ওসি মিজান কট্টর সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের জিডিকে তদন্ত না করে বন্দুক উঁচিয়ে মুসল্লিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, যা ন্যক্কারজনক এবং এদেশের পঁচানব্বই ভাগ মুসলমানের উপর আঘাতের শামিল।
তারা বলেন, মসজিদ বন্ধসহ নানামূখী চক্রান্তের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদসহ মৌলবাদী হিন্দু সংগঠনগুলো মোসাদের সাথে জড়িত হয়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্তে লিপ্ত। তারা জামাত-জোট আমলে এসব না করলেও বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে।
তারা আরো বলেন, গেন্ডারিয়ার ঐ মসজিদের পাশের মন্দিরেরই কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এমনকি রমনা কালি মন্দিরসহ দেশের অধিকাংশ মন্দিরেরই বৈধ কাগজপত্র নেই। হিন্দুদের দাবি অনুযায়ী গেন্ডারিয়ায় মুসলমানদের মসজিদ বন্ধ করলে সারাদেশের অবৈধ মন্দিরও বন্ধ করে দিতে হবে। গেন্ডারিয়ার মসজিদে নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা না হলে ওলামা লীগ ভিন্ন কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।
তারা বলেন, সরকারি জমিতে লিজ নিয়ে মসজিদ নির্মাণ আইনত অবৈধ নয়। তাহলে ঢাকা জেলা প্রশাসন কীভাবে মসজিদে নামাজ বন্ধ করলো? পার্শ্ববর্তী অবৈধ মন্দির তো বন্ধ করলো না। প্রশাসনের এরূপ হিন্দুত্ববাদ তোষণ মেনে নেয়া যায় না। প্রশাসনকে অবিলম্বে মসজিদ বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি মিথ্যা অভিযোগকারী মৌলবাদী হিন্দুদের গ্রেফতার করতে হবে। মুসল্লিদের উপর হামলাকারী ওসি মিজানকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
ঢাকার গেন্ডারিয়ায় মসজিদ থেকে রোজাদার মুসল্লিদের পুলিশ কর্র্তৃক টেনেহেঁচড়ে বের করে দেয়া এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমান ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক। তারা বলেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে পুলিশ রোজাদার মুসল্লিদের টেনেহেঁচড়ে মসজিদ থেকে বের করে ও মসজিদের জিনিসপত্র ভেঙে পবিত্রতা নষ্ট এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে থানার ওসি হিন্দুদের খুশি করতে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ৯২% মুসলমানের ট্যাক্সের টাকায় বেতন-ভাতা নিবে আর কাজ করবে মুসলমান ও ইসলামের বিরুদ্ধে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এদেরকে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
খাদেমুল ইসলাম
গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মোহতামিম ও খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুফতি রুহুল আমীন বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের রাজধানী বিশ^ব্যাপী মসজিদের নগরী হিসেবে খ্যাত ঢাকায় মসজিদ নির্মাণে বাধা দেওয়া এবং মুসল্লিদের নির্যাতন করা মধ্যযুগীয় বর্বতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এমতাবস্থায় সরকার যদি দায়ি পুলিশ কর্মকর্তা এবং হামলাকারীদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় না আনে তবে যেকোনো অবস্থার জন্য সরকারকেই দায়ি থাকতে হবে।
খেলাফতে ইসলামী
খেলাফতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ও ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেছেন, দেশে হিন্দুরাজত্ব কায়েমের বন্দোবস্ত চলছে। হিন্দু শিক্ষক রাসূলকে গালি দেয়, প্রতিবাদ করলে বলা হয় জঙ্গি। হিন্দু শিক্ষক ছাত্রী ধর্ষণ করে, অপরাধীকে গ্রেফতার করে বিচারের নামে চলে আইওয়াশ। শিক্ষানীতির নামে পাঠপুস্তকে হিন্দুত্ববাদের দীক্ষার আয়োজন চূড়ান্ত। আলেমদের শত প্রতিবাদেও ঠোঁট নড়ে না অপদার্থ শিক্ষামন্ত্রীর। এবার সরাসরি আঘাত এসেছে গেন্ডারিয়ায় আল্লাহর ঘর মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের উপর। মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়েছে। এভাবে হিন্দুদের প্রাধান্য চলছে সব জায়গায়। আর বঞ্চিত রয়ে যাচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা। সরকারের এমন দ্বিমুখি নীতি দেশের জন্য অকল্যাণ বয়ে আনবে না।
মসজিদের জায়গা নিয়ে অতি উৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তা মুসল্লিদের সাথে যে জঘণ্য আচরণ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে। কাজেই তাকে গ্রেফতার করতে এর চেয়ে বড় আর কোনো ডকুমেন্টের প্রয়োজন নেই। তাই এ পুলিশ কর্মকর্তার অপসারণসহ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।