Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক

বাপ্পির মৃত্যু সোয়াইন ফ্লু’তে নয়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর অ্যাডভেকেট ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পির মৃত্যু সোয়াইন ফ্লুতে নয়। তার মৃত্যু হয়েছে শ্বাসতন্ত্র সংক্রান্ত জটিলতায়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল রোগতত্ত¡, রোগয়িন্ত্রন ও গবেষণা ইনষ্টিটিউটে (আইইডিসিআর) আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জনান। এ সময় আইইডিসিআর’র পরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা, প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. এস এম আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

মহাপরিচালক বলেন, কিছু গণমাধ্যমে সোয়াইন ফ্লুতে অ্যাডভেকেট ফজিলাতুন্নেছার মৃত্যু হয়েছে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে। যা সত্য নয়। তাছাড়া এ ধরনের তথ্য জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করতে পারে। তবে তার শরীরে ইনফ্লয়েঞ্জার (ঐ১ঘ১) জীবানু পাওয়া গেছে। যা মূলতো বাংলাদেশের ঋতুকালীন সাধারণ ফ্লু। এরসঙ্গে সোয়াইন ফ্লুর কোন সম্পর্ক নেই।
প্রফেসর আজাদ বলেন, ২০০৯ সালে সারা পৃথিবীতে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী হিসাবে দেখা দেয়। তখনকার ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসকে কেউ কেউ সোয়াইন ফ্লু নামে আখ্যায়িত করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ২০১০ সালে মহামারী শেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসকে মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা নামে অভিহিত করতে নির্দেশনা জারি করে। এরপর ২০১১ সাল থেকে এই ভাইরাসটি মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা নামে পরিচিত।

প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। সেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশে মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা শুরু হয় এপ্রিল মাসে এবং সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। বছরের অন্যান্য সময়ে এই সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা সাধারণত ৪/৫ দিন পরে এমনি ভালো হয়ে যায়। কিন্তু উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য কখনো কখনো মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসের রোগ, কিডনি রোগ, গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক লোকজন, ২ বছরের নিচে শিশুদেরকে সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণদের ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরী। তিনি বলেন, বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে (আমেরিকা, ইউরোপে) মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। যা আমেরিকাতে ৪০ শতাংশ এবং ইউরোপে ১৫ শতাংশ। এই মৌসুমে প্রবাস থেকে অনেকে দেশে আসেন। যাদের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।

তিনি বলেন, এই ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম কিন্তু সতর্ক থাকা জরুরি। বিশেষ করে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনসাধারণ এ রকম সম্ভাবনা দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে আইইডিসিআর-এ যোগাযোগ করতে হবে। হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় আক্রান্ত ব্যক্তিকে পরিষ্কার রুমাল-গামছা-কাপড় বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নিতে হবে। রুমাল-গামছা-কাপড় বা টিস্যু পেপার না থাকলে জামার হাতা/শাড়ির আঁচল দিয়ে নাক-মুখ ঢাকতে হবে এবং ঘরে ফিরে ওই জামা-শাড়ি সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
যেখানে-সেখানে কফ্-থুতু ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে। ব্যবহƒত টিস্যু পেপার যেখানে সেখানে না ফেলে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।
হাঁচি-কাশির পর অবশ্যই সাবান-পানি দিয়ে দু’হাত ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর অবশ্যই সাবান-পানি দিয়ে দু’হাত ভালকরে ধুয়ে নিতে হবে। জ্বর-সর্দি-কাশি হলে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি (পাঁচ বছরের নিচের শিশু, গর্ভবতী নারী, ৬৫ বছরের অধিক বয়স্ক ব্যক্তি এবং আগে থেকেই হাঁপানী বা শ্বাসকষ্ট অথবা অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী রোগ যেমন- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হƒদরোগ, ¯œায়ুর রোগ, ক্যান্সার ইত্যাদিতে ভুগছেন) যদি ফ্লু আক্রান্ত হন তাহলে জরুরিভিত্তিতে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ