পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
রোহিঙ্গা নিপীড়নে গণহত্যার অভিযোগ তুলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করায় গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছে রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। এক ভিডিও বার্তায় আরসার প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার বলেন, ‘আমি গাম্বিয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। একমাত্র গাম্বিয়ান সরকারই দেখেছে ও বুঝেছে যে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমানর সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসী সরকার গণহত্যা চালাচ্ছে।’ ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যাকা-, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-এ মামলা করে গাম্বিয়া। মামলায় নিজ দেশের আইনি লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। আতাউল্লাহ বলেন, তারা শুধুমাত্র আমাদের পরিস্থিতিই বোঝেনি। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলাও করেছে। তাদের প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। এছাড়া বিশ্বজুড়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা অধিকার কর্মী ও রাজনীতিবিদদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। সত্য রায়ের জন্য সবাইকে কাজ করার আহ্বানও জানান। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের কোনও ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আরসা নেতা বলেন, মিথ্যা স্বাক্ষ্য থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ভিডিও বার্তার শেষে তিনি বলেন, আমি আমার ভাইদের মনে করিয়ে তিনি চাই আরাকান আমাদের জন্মভূমি। আমরাই এর মালিক। আমরা আমাদের প্রাপ্যটা যেভাবে হোক বুঝে নেবো। অপর এক খবরে বলা হয়, রোহিঙ্গারা বিশ্বাস করেন অং সান সুচি গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এর বিরুদ্ধে রায় দেবেন হেগে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) বিচারকরা। বুধবার এই আদালতে সেই সেনাবাহিনীর পক্ষে ওকালতি করেন সুচি, যারা তাকে ১৫ বছর গৃহবন্দি করে রেখেছিল। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। এদিকে রোহিঙ্গারা সুচির বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সুচি আদালতে বলেন, বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ‘মুসলিমরা’ প্রতিবেশী বাংলাদেশে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। ২০১৭ সালে সেনাবাহিনী বেসামরিক ব্যক্তিদের হত্যা, নারীদের ধর্ষণ ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এ অভিযোগ বেমালুম অস্বীকার করেন তিনি। তার এমন বক্তব্যের জবাবে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোহিবুল্লাহ বলেছেন, সুচির দাবি কোনো গণহত্যা হয়নি। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বিশ্ব তার এ দাবির বিচার করবে। কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প থেকে তিনি বার্তা সংস্থা এপি’কে এসব কথা বলেন। মোহিবুল্লাহ আরো বলেন, কোনো চোর কখনো চুরির কথা স্বীকার করে না। কিন্তু তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ন্যায়বিচার দেয়া যায়। আমাদের কাছ থেকে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে বিশ্ব। সুচি মিথ্যা বললে তাকেও ছেড়ে দেয়া উচিত হবে না। তাকে অবশ্যই ন্যায়বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তার বিরুদ্ধে বিশ্বকে ব্যবস্থা নিতে হবে। কুতুপালংয়ে আরেকজন শরণার্থী নূর কামাল প্রত্যাখ্যান করেন অং সান সুচির বক্তব্য। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী লোকজনকে ঘেরাও করে রাখে। তারপর তাদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। আগুন দিয়ে পোড়ায়। এটা কি গণহত্যা নয়? সুচি বললে তাই কি সত্য হয়ে যাবে? বিশ্ব এমন বক্তব্য গ্রহণ করবে না। আমাদের ওপর কি মাত্রার নির্যাতন হয়েছে তা দেখেছে বিশ্ব। এখনও এই নির্যাতন চলছে। এপি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।