Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

লন্ডন ব্রিজে পথচারীদের ওপর হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০১৯, ১১:৫৯ এএম

যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যবাহী লন্ডন ব্রিজে দুই ব্যক্তিকে হত্যা করা হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ২৮ বছর বয়সী ওই হামলাকারীর নাম উসমান খান। সন্ত্রাসী কার্যক্রমের দায়ে এর আগেও জেল খেটেছেন তিনি। খবর বিবিসির

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা দুইটার দিকে লন্ডন ব্রিজে বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করেন ওসমান। এ ঘটনায় একজন পুরুষ ও একজন নারী নিহত হন। আহত হন তিনজন। ঘটনার পর লোকজন ওসমানকে ঠেকানোর চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই হামলাকারী নিহত হন। পুলিশ তাঁকে ওসমান খান বলে শনাক্ত করে।

গুলির শব্দ শুনে ব্রিজের ওপর লোকজন ছোটাছুটি শুরু করে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে পুলিশ। পরে তারা সাধারণ মানুষকে ওই এলাকা ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। এ ঘটনার পর ব্রিজে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার নেল বাসু বলেন, সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে ২০১২ সালে গ্রেফতার হয়েছিলেন উসমান। পরে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

দ্যা টাইমস জানিয়েছে, চলাফেরা পর্যবেক্ষণে শরীরে ইলেকট্রিক ডিভাইস লাগাতে রাজি হওয়ার পর গত বছর জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন ওসমান। এর আগে শুক্রবার দুপুরে যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যবাহী লন্ডন ব্রিজে পথচারীদের ওপর ছুরি নিয়ে হামলায় অন্তত পাঁচজন আহত হন। এর মধ্যে দু'জন পরে মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে সে নিহত হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এটি সন্ত্রাসী হামলা।

মেট পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার নেইল বাসুর তথ্য অনুযায়ী, ওসমান খান কর্তৃপক্ষের কাছে পরিচিত ছিলেন। ২০১২ সালে একটি সন্ত্রাসী ঘটনায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পান তিনি। কীভাবে তিনি এ ধরনের হামলা চালালেন তা এখন তদন্তের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দ্য টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর ইলেকট্রনিক ট্যাগ শরীরের লাগিয়ে রাখার শর্তে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এতে তাঁর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ ছিল। খানের আবাসস্থল স্ট্যাফোর্ডশায়ারে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

নেইল বাসু বলেন, তদন্ত এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। এ হামলায় আর কেউ জড়িত কি না, দেখা হচ্ছে। তবে জনসাধারণের জন্য আর কোনো ঝুঁকি নেই।
শুক্রবারের ঘটনায় হামলাকারীকে রুখে দেওয়া মানুষের উচ্ছ¡সিত প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনসহ অনেকে।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক টুইট বার্তায় বলেন, ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবগত। ঘটনার পর পুলিশ ও জরুরি সেবায় কর্মরত ব্যক্তিরা ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়ায় তাঁদের ধন্যবাদ জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

বরিস জনসন বলেন, সন্ত্রাসীদের পূর্ণ সাজা খাটতে হবে। মারাত্মক ও সহিংস অপরাধীদের ক্ষেত্রে দ্রæত মুক্তির বিষয়টি ভুল সিদ্ধান্ত। সন্ত্রাসী ও মারাত্মক অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এক ব্যক্তি ছুরি নিয়ে পথচারীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধস্তাধস্তি চলতে থাকে। কয়েকজন পথচারী তাকে জড়িয়ে ধরে রাস্তায় ফেলে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় ছুরি হাতে থাকা ব্যক্তি আহত হয়। পরে তার মৃত্যু হয়।
ভিডিও ফুটেজের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল জানায়, ব্রিজের ওপর আহত এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ব্রিজের দক্ষিণাংশে এক ব্যক্তিকে কয়েকজন মিলে পেটাচ্ছিল। লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস একে 'বড় ঘটনা' বলে ঘোষণা করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইংল্যান্ড


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ