Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইরাকে ৪৫ বিক্ষোভকারী নিহত, ইরানী কনস্যুলেটে আগুন, কারফিউ ভেঙে রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৬ পিএম

ইরাকে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার দিনটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী ও রক্তাক্ত দিবস। নাটকীয়ভাবে একটি ইরানি কনস্যুলেটে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা  বাহিনীর ধরপাকড়ে অন্তত ৪৫ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপির খবরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজধানী বাগদাদ ও দক্ষিণাঞ্চল ব্যাপক বিক্ষোভে কেঁপে উঠেছে। ২০০৩ সালে মার্কিন হামলায় প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাতের পর এটাই ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ সড়ক সহিংসতা।
পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে দক্ষিণের শহর নাসিরিয়াতে একটি সেতু অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভকারীরা পুলিশ স্টেশনের বাইরে জড়ো হয়। এসময় তাদের ওপর গুলি ছোড়ে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে নিহত হয় অন্তত ২৯ জন। এখানে আহত হয় প্রায় অর্ধশত। নাসিরিয়াতে নিহতদের দাফন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হাজার হাজার মানুষ কারফিউ ভঙ্গ করে রাস্তায় নেমে আসে।
রাজধানী বাগদাদে টাইগ্রিস নদীর কাছে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে চার জন। এছাড়া নাজাফে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ১২ জন।
বুধবার রাতে নাজাফে ইরানি কনস্যুলেটে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। ভবনটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার পর বিক্ষোভকারীরা ‘ইরাক থেকে বের হও ইরান’ শ্লোগান দেয়। এর আগে চলতি মাসের প্রথম দিকে কারবালা শহরের ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা।
ইরাকি সরকার ও তাদের সমর্থক প্রতিবেশী ইরানের বিরুদ্ধে নিজেদে ক্ষোভ ঝাড়তে বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় মেতে ওঠেন প্রতিবাদকারীরা। জবাবে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির হিসাব বলছে, গত অক্টোবরের শুরু থেকে এই বিক্ষোভে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৯০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন দেড় হাজারের বেশি।
ইরাকি মানবাধিকার কমিশনের তথ্যানুসারে, বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নাসিরিয়ায়। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে ২৯ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
ইরাকে তেহরানের রাজনৈতিক প্রভাবের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভকারীরা ¯েøাগান দেন। তারা চিৎকার করেন বলেন, ইরাকের জয় হোক, ইরান নিপাত যাক। জবাবে বেশ কয়েকটি উত্তাল শহরে সেনা মোতায়েন করতে সেনাপ্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদি।
নাসিরিয়ায় ব্যাপক হত্যাকান্ডের পর জেনারেল জামিল শুমারি নামের এক কমান্ডারকে বহিষ্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানকার রাজধানী ধিকার প্রদেশের গভর্নর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেছেন।
ভিডিওতে দেখা গেছে, অগ্নিসংযোগের পর কনস্যুলেট ভবন থেকে যখন ধোঁয়ার কুন্ডলী বেরিয়ে আসছিল, বিক্ষোভকারীদের তখন উল্লাস করতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে নিরাপত্তাজনিত কারণে ইরাক সীমান্তের মেহরান সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ইরান।
ইরানী আধা সরকারি বার্তা সংস্থা মেহরের খবরে বলা হয়েছে, ইরাকের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও উত্তপ্ত অবস্থার কারণে মেহরান সীমান্ত আজ রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরাক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ