জনতার বিক্ষোভের মুখে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি পদত্যাগ করতে রাজি হয়েছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট বারহাম সালিহ গতকাল বৃহস্পতিবার এ কথা জানান। এর ফলে ইরাকে সৃষ্ট অচলাবস্থার নিরসন হতে পারে। খবর পার্সটুডের।
প্রেসিডেন্ট সালিহ বৃহস্পতিবার রাতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি নিজের পদত্যাগের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। মাহদি বলেছেন, ইরাকের রাজনৈতিক দলগুলো যদি সাংবিধানিক কাঠামোর আওতায় একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে সম্মত হয় এবং কোনো সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি না হয় তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন।
আগামী সপ্তাহে ইরাকের পার্লামেন্টে নতুন নির্বাচনি আইন উত্থাপন করা হবে জানিয়ে প্রেসিডেন্ট সালিহ বলেন, ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। বিক্ষোভরত জনতার ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রেসিডেন্ট সালিহ বলেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সহিংস আচরণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বলপ্রয়োগ করে কোনো সমস্যার সমাধান হয় না উল্লেখ করে ইরাকের প্রেসিডেন্ট বলেন, আইনি কাঠামোর আওতায় সব অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে এবং যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছে তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলেও তিনি জানান।
প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন দলের সঙ্গে ইরাকের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য আইন পাসে বৈঠক ও আলোচনা করছি। আগামী সপ্তাহে পার্লামেন্টে একটি নির্বাচনী আইন উপস্থান করা হবে।
প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে বেকারত্ব, নিম্নমানের জনসেবা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এ মাসের শুরু থেকে বিক্ষোভ শুরু হয় ইরাকে। সহিংস এই বিক্ষোভে প্রাণ হারায় বহু মানুষ। বিক্ষোভকারীরা রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আনেন। আরো অভিযোগ করেন রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে সাধারণ জনগণের জীবনমান উন্নত করার দিকে নজর দেন না। তারা আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। এছাড়া, চলমান সরকারের পদত্যাগ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা থেকে মার্কিন প্রভাব দূর করার দাবি জানিয়েছে। কয়েকদিন আগে তাদের দাবিতে সমর্থন জানিয়েছে, দেশটির প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুক্তাদা আল-সদর। এরপরই বৃহ¯পতিবার টিভিতে ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট সালিহ।