Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুষেই মেলে সার্টিফিকেট

শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১:৪৮ এএম | আপডেট : ১:৫১ এএম, ১ নভেম্বর, ২০১৯

গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিলেও ঘুষ ছাড়া সনদ না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসা শেষে চারমাস পর ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিলেও প্রকৃত জখমের চিকিৎসা সনদ না দিয়ে সাধারণ জখমের সনদ নিতে হয়েছে ভুক্তভোগীদের। এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের কাছে কয়েকটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার বরমী ইউনিয়নের গাড়ারন গ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী কামরুন্নাহার সন্ত্রাসীদের দ্বারা গুরুতর জখম অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ বাপারে আইয়ুব আলীর পুত্র বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিলে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা হাসপাতালে জখমের সনদের জন্য আবেদন করলে হাসপাতালের অফিস সহকারী শাহনাজ পারভীন ভুক্তভোগী শরীফের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। টাকা দিতে না পারায় সার্টিফিকেট দেয়নি। প্রায় ৪ মাস পর ২০ হাজার টাকা দেওয়ার দিলে জখম অনুসারে সনদ না দিয়ে সাধারন জখমের সনদ প্রদান করে।
এদিকে পৌর এলাকার ভাংনাহাটি গ্রামের হাবিবুর রহমানের পুত্র সাহিদ আহম্মেদের সাথে তার ফুফু জহুরা খাতুনের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মারপিটের ঘটনা না ঘটলেও দাঁত ভাংগাসহ নানা জখমের অভিযোগ করে অফিস সহকারী শাহনাজ পারভীনকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে জখমী সনদ বাগিয়ে নেয়।

স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, টাকা না দিলে জখমী সনদ পাওয়া যায় না। দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। আর টাকা দিলে জখম না হলেও সার্টিফিকেট বানানো যায় শাহনাজ পারভীনকে দিয়ে। অফিস সহকারী শাহনাজ পারভীন হাসপাতালে কর্মরত লিয়াকত আলী, জাহাঙ্গীর, নজরুল, সুলতানা, সীমা, হালিম, রক্ষিতসহ আরও কতিপয় অসাদু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজসে দিনের পর দিন এভাবেই ঘুষ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।

এসব ব্যাপারে অফিস সহকারী শাহনাজ পারভীনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন এবং তার ক্ষমতার দাপট দেখান।

আরও অভিযোগ রয়েছে, ওই হাসপাতালের সেকমো লিয়াকত আলী চাকুরীর শুরু থেকে একই অফিসে পথকে রেকর্ড স্থাপন করেছেন। চিকিৎসা সহকারী পদে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন ওই কর্মচারী। দুই একবার বদলী হলেও অদৃশ্য শক্তির কারণে গাজীপুর জেলার বাইরে তাকে যেতে হয়নি। তিনি তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী সমিতির বিভিন্ন পদে থেকে সর্বোচ্চ সুবিধাদি গ্রহন করে মালিক হয়েছেন অঢেল সম্পদের। এ ব্যাপারে লিয়াকত আলীর সাথে কথা বললে তিনি অনেক হাসপাতালে বদলী হয়েছেন বলে জানান।

২০১২ সালে ৩১ শয্যা থেকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। হাসপাতালের কলেবর বৃদ্ধি পেলেও জনবল সংকট ও অসাদু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে উপজেলার প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রটি সেবার বদলে ঘুষ বানিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে।

এসব ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মইনুল হক খান জানান, তিনি হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে অর্থের বিনিময়ে সার্টিফিকেট পদয়া হয়নি এবং স্বচ্ছতা যাছাই করেই সনদ দেয়া হয়। যেহেতু এসব ব্যাপারে মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে উনি তদন্ত কমিটি গঠন করে নিশ্চয় ব্যবস্থা নিবেন।

গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা: সৈয়দ খায়রুজ্জামান জানান, বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয় হবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সার্টিফিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ