Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লিবিয়ায় বন্দিশিবিরে নির্যাতন এবং ধর্ষণের অভিযোগ

২০১৪ সাল থেকে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৩ সহস্রাধিক মানুষ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ইউরোপে প্রবেশে প্রধানতম একটি ট্রানজিট পয়েন্ট হচ্ছে লিবিয়া। এখান থেকে ইউরোপে প্রবেশ করতে গিয়ে আটক হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদেরকে আটকাতে লিবিয়ার কোস্টগার্ডদের অর্থ ও প্রশিক্ষণ দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা কাজ করে জাতিসংঘ স্বীকৃতি লিবিয়ার সরকারের অধীনে। প্রতি বছর অভিবাসীদের ইউরোপে প্রবেশ থেকে ফেরাতে লিবিয়ার কোস্টগার্ডদের ২৫০ মিলিয়ন ডলার দেয় ইইউ। অভিবাসীদের আটকের পর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় সরকার পরিচালিত কারাগারগুলোতে। এগুলোর বেশির ভাগই ত্রিপোলির আশেপাশেই অবস্থিত। এই কেন্দ্রগুলোও ইইউ থেকে অর্থ পায়। এসব কারাগারে এখন ৬ লাখ ৫৫ হাজারেরও অধিক অভিবাসী বন্দি রয়েছে। তারা এসেছে প্রায় ৪০টি দেশ থেকে। তারা এখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকা পড়ে আছেন। এ ছাড়া নারী ও শিশুবন্দিদের জন্য নেই বিশেষ কোনো সুব্যবস্থাও। এ নিয়ে রয়েছে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনাও। তবে এরপরেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেখানে তাদের নীতি পরিবর্তন করেনি। বরঞ্চ লিবিয়ার বাহিনীর সঙ্গে অভিবাসীদের আটকাতে আরো কঠিন চুক্তি করছে ইতালি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। লিবিয়ায় ইইউ’র অর্থায়নে চলছে স্বেচ্ছাচারী আটক। বন্দিশিবিরগুলোতে চলছে ধর্ষণ ও জোরপ‚র্বক শ্রম আদায়, ধর্ষণ-নির্যাতন। এ নিয়ে ইইউ’র সঙ্গে সিএনএন যোগাযোগের চেষ্টা করলে তারা কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। ইইউ জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসন থেকে নিজেদের রক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে। লিবিয়ার সরকারও এ নিয়ে সিএনএনের কাছে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে ভ‚মধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৩ হাজারেরও অধিক মানুষ। তারা সকলেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসনের লক্ষ্যে ঘর ছেড়েছিলেন। তারা যে ধরনের নৌকায় করে সমুদ্র পাড়ি দিতে চান তাতে মৃত্যু অস্বাভাবিক কোনো পরিণতি নয়। এমনকি ওইসব নৌকায় কেউ লাইফ জ্যাকেটও পরেন না। তাদেরকে যখন লিবিয়ার কোস্টগার্ড আটকানোর চেষ্টা করে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে। কখনো হয়তো তাদের নৌকা আটকে দিতে সক্ষম হয় লিবিয়ার কোস্টগার্ডরা। তারা অভিবাসীদের জীবন রক্ষার্থে কাজ করেন। কিন্তু অভিবাসীদের কাছে এটি মৃত্যুর থেকেও খারাপ। তারা মানবপাচারকারীদের হাজার হাজার ডলার দিয়েছেন ইউরোপে পৌঁছে দিতে। এ ছাড়া তাদের আর কোনো ভবিষ্যৎও নেই। স¤প্রতি এমন একটি নৌকা আটক করা হয় ভ‚মধ্যসাগরে। এতে ছিল ২২ সোমালিয়ান, ৫ বাংলাদেশি ও এক ইয়েমেনি নাগরিক। এরমধ্যে একজন সোমালিয়ার আব্দেল সামাদ। তিনি ৬ বছর কাজ করে যে অর্থ উপার্জন করেছেন তা তিনি পাচারকারীদের দিয়েছেন তাকে ইউরোপ পৌঁছে দেয়ার জন্য। পাচারকারীরা তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। তবে তাদেরকে যারা বাঁচান সেই লিবিয়ার কোস্টগার্ডরাও তাদের জন্য বড় আতঙ্ক। আব্দেল সামাদ বলেন, লিবিয়ানরা আমাদেরকে প্রচন্ড মারধর করে। আমরা লিবিয়াকে অভিশপ্ত ভ‚মিতে পরিণত করেছি বলে গালাগাল দিতে থাকে। সমুদ্র পাহারা দিয়ে অভিবাসীদের আটকে দিয়ে তারা তাদের ওপর কোনো মমতাই প্রদর্শন করে না। সিএনএন।



 

Show all comments
  • Abu Baker Siddiqui ১৪ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
    আজ বিশ্বব্যাপী মানবতা চরমভাবে বিপন্ন। কে করবে উদ্ধার আল্লাহই ভালো জানেন।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ নাজমুল ইসলাম ১৪ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
    এসব বন্দিশিবির গুড়িয়ে দিয়ে ওদের মুক্ত করতে মুসলিম নেতাদের উদ্যোগ নেওূয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • জিন্নাতারা ১৪ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    মানুষ দিন দিন কত অমানবিক হয়ে উঠছে। পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট জীবের মতো আচরণ করছে।
    Total Reply(0) Reply
  • নিশা চর ১৪ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    বন্দিদের ওপর যারা নির্যাতন চালাই তারা ধ্বংস হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • মনিরুল ইসলাম ১৪ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    আল্লাহতায়ালা তাদের রক্ষা করুন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ