ইসরাইলকে বর্জনের রীতি লঙ্ঘন করে ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একটি ফুটবল ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে সউদী আরবের জাতীয় ফুটবল দল। আগামী ১৫ অক্টোবর এই খেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে সউদী ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ শুক্রবার জানিয়েছে।
পশ্চিমতীরের রামাল্লা শহরে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপসাগরীয় দেশটির ফিলিস্তিন নীতিতে একটা পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে। এর আগে তৃতীয় কোনো দেশে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে খেলতেন সউদী খেলোয়াড়রা।
এক টুইটবার্তায় সউদী ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ জানায়, ফিলিস্তিনি ফেডারেশনের ভাইদের অনুরোধে সউদী ফুটবল ফেডারেশন ২০২২ সালের বিশ্বকাপের এশীয় কোয়ালিফায়ারে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ রামাল্লায় খেলতে রাজি হয়েছে। আগামী ১৫ অক্টোবর ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ফুটবল দল নিজ দেশে খেলার সুযোগ থেকে যাতে বঞ্চিত না হয় এবং নিজ ভূমিতে বসে তাদের ভক্তরা যেন খেলা দেখার সুবিধা পায়, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরবের ফুটবল ক্লাব ও জাতীয় দলগুলো ঐতিহাসিকভাবে পশ্চিমতীরে খেলতে অস্বীকার করে আসছে। কারণ যেখানে ফিলিস্তিনি জাতীয় দল ফুটবল খেলে সেখানে যেতে হলে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে হয়।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলি নৃশংসতার প্রতিবাদে ইহুদি রাষ্ট্রটিকে কয়েক দশক ধরে বর্জনের রীতির লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে অনুমোদন চেয়ে এই আবেদনকে।
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্লাব কিংবা জাতীয় দল বলা হোক না কেন, ইরাক, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ফিলিস্তিনি সফর করেছে।
মিসর ও লেবানন এখনো বর্জন প্রথা অব্যাহত রেখে চলছে। বছরচারেক আগে পশ্চিমতীরে প্রবেশ না করতে সউদীদের ওপর চাপের কারণে জর্ডানে এমন একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান জিবরিল রাজৌব ঘোষণা করেন, ১৩ অক্টোবর সউদী ফুটবল দল আসবে।
ফিফার স্বীকৃতি পাওয়া আল-রাম স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। তবে এতে ইসরাইলকে বর্জন করার নীতি লঙ্ঘন হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।
১৯৬৭ সালে পশ্চিমতীর দখল করে নেয়া বর্ণবাদী ও দখলদার রাষ্ট্র ইসরাইল। এরপর থেকে ফিলিস্তিনি শহরগুলোতে কেউ সফরে যেতে চাইলে ইসরাইলি অনুমোদন নিতে হচ্ছে।
সৌদি আরব এখন পর্যন্ত ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নি। এছাড়া ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথাই বলে আসছে।
কিন্তু চিরবৈরী ইরানকে ঠেকাতে ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে সউদী গোপন যোগসাজশ তৈরি হয়েছে বলে বলা হচ্ছে।
এর আগে গত সপ্তাহে গাজাভিত্তিক খাদামাত রাফেহ ক্লাবকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে নাবলুস’স এফসি কাপ বালাটার সঙ্গে ফিলিস্তিনি কাপ ফাইনাল ম্যাচ খেলতে অনুমতি দেয়নি ইসরাইল।
গাজা ক্লাবের ৩৫ সদস্যের ২৩ জনেরই অনুমতির আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। কেবল পাঁচজন খেলোয়ার খেলতে যেতে অনুমতি পেয়েছিলেন।