পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টানা বৃষ্টির সঙ্গে ফারাক্কার গেট খুলে অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে মরা পদ্মায় এখন বান ডেকেছে। হু হু করে বাড়ছে পানি। ছ্ুঁই ছ্্্ুঁই করছে বিপদসীমা। গতকাল সন্ধ্যায় রাজশাহীতে ৪০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। যে কোন সময় বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এমনটি জানালেন পানি উন্নয়নবোর্ডের গেজরিডার এনামুল হক। ভারতের বিহার রাজ্যের বন্যার চাপ কমাতে বরাবরের মত এবারো ফারাক্কার গেট গুলো খুলে দিয়ে উদার হস্তে ঠেলে দিচ্ছে পানি।
পানি উন্নয়নবোর্ড সূত্র জানায়, চলতি বছর আগস্ট মাসে পদ্মার পানি দ্বিতীয় বারের মত বেড়েিেছল। তখন উচ্চতা উঠেছিল ১৬ দশমিক ২৯ মিটার। পরে পানি আবার কমতে শুরু করে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ফের পানি বাড়তে শুরু করেছে বিপদ সীমা অতিক্রম করতে চলেছে। গত ১৭ বছরে রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার অতিক্রম করেছে মাত্র দুবার। ২০০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পানির উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার। আর ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ছিল ১৮ দশমিক ৭০ মি:।
এদিকে পদ্মার নাব্যতা হারানোর কারণে একসাথে পানি ধারণ করতে না পেরে দুকূল ছাপিয়ে চলছে। ডুবছে গ্রামীণ জনপদ ভাংছে পাড়। চোখের পলকে নদী গিলে খাচ্ছে সাজানো সংসার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর ফসলের ক্ষেত। সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে উদ্বাস্ত হচ্ছে হাজারো মানুষ। শুকনো মওসুমে ফারাক্কার সব পানি শোষণ করে ভাটির দেশ বাংলাদেশকে শুকিয়ে মারা। আবার বর্ষার সময় ওপারের বন্যার চাপ কমাতে সব গেটখুলে দিয়ে এপারে মানুষকে ডুবিয়ে মারার খেলা চালিয়ে যাচ্ছে যুগের পর যুগ ধরে ভারতের পানি জল্লাদরা। এক ফারাক্কা ব্যারেজ দিয়ে দফা রফা করে দিয়েছে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের। আমাদের সংবাদদাতারা জানিয়েছেন পদ্মার ভয়ংকর পরিস্থিতির কথা :
পাবনা : হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে ২ সেন্টিমিটারউপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবো প্রকৌশলীরা জানান, ভারতের উজানের প্রবল বর্ষণ, অভ্যন্তরীণ বর্ষণ মিলিয়ে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তার মতে পাবনা জেলাকে ঘেরে থাকা ১৫৮ কিলোমিটার মুজিব বাঁধের কারণে পদ্মা এলাকায় পাবনা শহরের কোনো এলাকা প্লাবিত হয়নি। তবে পদ্মার শাখা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৮টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল (বাঁধের বাইরে) প্লাবিত হচ্ছে । পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা প্রাথমিক ক্ষতি নিরুপন করে বলেছেন, এই উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের আখ, ফুল কপি,বেগুন, শিম , কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য শীতকালীন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। প্রান্তিক কুষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: বন্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলের ১১ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পাদ্মায় পানি বেড়েছে ১৮ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় পদ্মা ২২ দশমিক ১২ সেন্টি মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তা বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহেদুল আলম জানান, আগের দিন যে হারে পানি বেড়েছিলো, সে হার কমে গেছে। এখন স্বাভাবিক হারেই পানি বাড়ছে। কমপক্ষে আরো চারদিন পানি বাড়বে। তিনি আরো জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিপদসীমা থেকে আধা মিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও ভয়াবহ বন্যা হবে না। কারণ এরইমধ্যে নদীর বামতীরে বাধ নির্মাণ করা হয়েছে। তবে দ্রুত গতিতে পানি বাড়লে অর্থাৎ স্রোতের তীব্রতা থাকলে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তবে এ নিয়ে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
লালপুর (নাটোর): ভারতের ফারাক্কা বাঁধের সব কয়টি লক গেট খুলে দেওয়ায় নাটোরের লালপুরের পদ্মা নদীর সবকটি চরের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে পানি বন্দি হয়ে পরেছে প্রায় ৩ হাজার পরিবার। নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের পদ্মার চরে বসবাসকারী সব মানুষকে সরিয়ে নিতে খুলে দেওয়া হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র।
নাটোর উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান বলেন,‘লালপুরে পদ্মা নদীর পানি চারঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া হার্ডিঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমা বরাবর অবস্থান করছে। প্রতিনিয়ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে পিবদসীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে তিনি জানান।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।