পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
সমস্যা নিয়েই মানুষ বাস করে। মানুষকে ঘিরে চক্রের মতো চলে কাজ, কর্তব্য ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি। এর মাঝে চার দেয়ালের বাইরে বেড়াবার কার মনে না আকাক্সক্ষা জাগে? চাকরিজীবী মানুষ ঈদ উৎসবাদিতে ছুটি পেলে বড়জোর গ্রামের বাড়িতে ঘুরে আসে। কিন্তু পর্যটন বলতে যা বোঝায় তার আস্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা সকলের হয় না। কারণ এর সঙ্গে আর্থিক সঙ্গতি ছাড়াও আনুষঙ্গিক ব্যাপার জড়িত রয়ে গেছে।
পর্যটন একটি শিল্প। প্রকৃতি পাগল মানুষ সময়-সুযোগ পেলেই ঘুরে বেড়ায়। দেশ থেকে বিদেশ-বিভুঁইয়ে পাড়ি দিয়ে ঘুরে বেড়ানো, খাওয়া, থাকা, বিনোদন ও যাতায়াতের কড়িটি সঙ্গে নিয়ে যিনি পর্যটন করেন তিনিই পর্যটক। পায়ে হেঁটে পর্যটনের দিন শেষ। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন পর্যটনকে ‘শিল্প’ হিসাবে সম্মানিত করেছে। পর্যটন একটি আকর্ষণ এবং একজন পর্যটক ‘জ্ঞান পিপাসু’। পত্র-পত্রিকা বা বই পড়ে জ্ঞান লাভ আর ভ্রমণে জ্ঞান লাভের মধ্যে আদিগন্ত তফাৎ বিদ্যমান। তাই জানার নেশায় পর্যটক ঘুরে বেড়ান দেশ দেশান্তরে। নিজ দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি দেয়া, থাকা-খাওয়া, বিনোদন সব কিছুর খরচ বহন করতে হয় নিজেকেই। তার ব্যয়িত অর্থই হয় অন্য দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎস। কাজেই যে কোনো দেশের জন্য পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ একটি লাভজনক ব্যাপার। এক সমীক্ষায় জানা গেছে, যে কোনো বর্ধনশীল আয়ের রফতানি বাণিজ্যের চেয়েও বেশি লাভজনক এই পর্যটন শিল্প।
প্রকৃতির প্রসারিত হস্ত চুম্বনকারী হিমালয় কন্যা নেপাল ও বৈচিত্র্যপূর্ণ থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালদ্বীপ, মালেশিয়াকে এর উদাহরণ হিসাবে দেখানো যেতে পারে। এ ক’টি দেশের বৃহত্তর রাজস্ব আয় অর্জিত হচ্ছে পর্যটন শিল্প থেকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ পর্যটকের আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য সযতেœ রক্ষা করছেন ঐতিহাসিক পুরার্কীতি, প্রতœ-নিদর্শনসমূহ, গড়ে তুলছেন নিত্য-নতুন আকর্ষণীয় কীর্তিসমূহ। সচক্ষে জ্ঞান আহরণ ও চিত্ত বিনোদনের জন্য মানুষ তাই দেখতে ছুটে যাচ্ছে, আসছে। ভ্রমণের ফলে পরিচিত হচ্ছে ভিন্ন প্রকৃতির সঙ্গে। অনুসন্ধিৎসু মানুষ আহরণ করছে অন্য দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জ্ঞান। এরই ফলে মানুষে মানুষে বাড়ছে সম্প্রীতি, ভালোবাসা। বিকশিত হচ্ছে জ্ঞানের ভাÐার। সম্প্রসারিত হচ্ছে সভ্যতা, বাড়ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। জানা গেছে, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে বিশ্বব্যাপী ১৩ কোটিরও বেশি মানুষ সরাসরি জড়িয়ে রয়েছে। ২০১০ সালে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ করেছেন ৯০ কোটি লোক। এ শিল্প থেকে আয় হয়েছে ৫০ হাজার কোটির বেশি মার্কিন ডলার। বিশ্বব্যাপী এই শিল্পের প্রসারতা প্রমাণ করে, প্রকৃতির কাছ থেকে চিত্তবিনোদনের ও জ্ঞানের পাঠ নেয়ার প্রতি ঝোঁক দিনের পর দিন আরও বাড়বে। ভুটান, নেপাল ও ভারতের কাছাকাছি দেশ বাংলাদেশ। বহির্বিশ্বের মিডিয়াগুলোতে বাংলাদেশকে প্রচার করা হয় ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ¡াস, বন্যা, বৃষ্টি, খরা, বস্তি, ভূখা-নাঙ্গা মানুষ, বর্জ্য, ভূমিকম্প ও হরতালের দেশ হিসাবে। এদিক থেকে ছোট আমাদের দেশটিতে বহির্বিশ্বেও মানুষদের ভ্রমণের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত হবার যথেষ্ট কারণ আছে। যেখানে সচ্ছলতা, শান্ত ও নিরুদ্বিগ্ন পরিবেশ সেখানেই মানুষ যেতে চায়। অশান্তি, কোলাহল ও কদর্যতায় পা বাড়াতে না চাওয়াই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের এমন নাজুক উপস্থাপনায় বিদেশে বাংলাদেশি মাত্রই লজ্জিত হন। পর্যটকদের কথা বাদ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অসম্ভব নি¤œ চাপের শিকার এদেশের জনগণ তা অস্বীকার করার উপায় নেই। এদেশে ঝড়-ঝলোচ্ছ¦াস আছে, কিন্তু এর মাঝেও বহমান জীবন একেবারে তিক্ত নয়। বাইরের মিডিয়াগুলোতে বাংলাদেশের উপস্থাপনা সেভাবেও হতে পারে যাতে পর্যটকের আকর্ষণ বাড়ে। কারণ এদেশের ভূমি ও হাজার বছরের ঐতিহাসিক ও পুরাতাত্তি¡ক নিদর্শনে সমৃদ্ধ। বগুড়ার মহাস্থানগড়, কুমিল্লার বৌদ্ধ বিহার, ঢাকার লালবাগ কেল্লা, ছোট কাটারা, বড় কাটারা, মোগল পাঠান যুগের ঐতিহাসিক মসজিদ, ঈদগাহ, সোনারগাঁ ইত্যাদির ঐতিহ্য এখানে রয়েছে। রয়েছে একটি অনন্য সাধারণ সুন্দরবন- যার সমপর্যায়ের আর একটি অঞ্চল পৃথিবীতে নেই। আছে কুয়াকাটা ও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, পাহাড় ঘেরা পার্বত্য এলাকা চট্টগ্রাম, সিলেটের চা-বাগানসমূহের অপার সৌন্দর্য, রামু, গজনী, দুর্গাপুর, বিজয়পুর, মাধবকুন্ড। এর কোনটিতে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র কিন্তু অনেকগুলোতেই পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার সুবিধা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। না হলে এদেশ নিতান্ত ছোট দেশ মালদ্বীপের চেয়ে কেমন করে এত পিছনে পড়ে থাকে পর্যটনের আয়ে? প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝখানে কয়েক মাইল পরিধির টোগো দ্বীপ পর্যটন খাতে প্রতি বছর বাংলাদেশি টাকায় আয় করছে ২ হাজার কোটি টাকা আর বাংলাদেশে এ খাতে যে আয় হয়ে থাকে তা নগণ্য। এ হিসাব আমাদের জন্য লজ্জাজনক। স্বাধীনতার পর থেকে এদেশের পর্যটন শিল্পে উন্নয়নের বরাদ্দ তেমন নেই। কোনো শিল্পকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বাহন হিসাবে নিতে হলে তার বিশেষ যতœ ও পরিচর্যার দরকার। পরিকল্পিত ও বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মোদ্যোগ গ্রহণ না করে ফল পেতে চাইলে তা কখনো সম্ভব হয় না। শুধুমাত্র উন্নয়নের প্রতিশ্রæতি, বক্তৃতা-বিবৃতি, সেমিনার, কিছু হোটেল-মোটেল নির্মাণ করলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। পর্যটকদের যাতায়াত, নিরাপত্তা, থাকা-খাওয়ার সুবিধাসহ সব কিছুর সুবন্দোবস্ত থাকা আবশ্যক। শহর, নগরগুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পর্যটকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা ইত্যাদি নিশ্চিত করা গেলে পর্যটনের ভালো ভবিষ্যৎ আশা করা যেতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকতে কুয়াকাটা দুর্গম এলাকা-বিশেষত যাতায়াত ব্যবস্থার সুবন্দোবস্ত না থাকায় এ সৈকত এখনো পর্যটকের নিকট দুর্গম বলে প্রিয় হয়ে উঠেনি। কক্সবাজারের সি-বিচে নিরাপত্তার অনিশ্চয়তা বেশি বলে প্রকাশ। এখানে বেড়াতে এসে অনেকে দুর্বৃত্তের কবলে পড়ে থাকেন। পর্যটকদের জন্য ‘নুলিয়া’দের সাহায্য পাবার সম্ভাবনা কম। কক্সবাজারে সমুদ্র ¯œানে গিয়ে এ জন্য অনেকেই বিপদে পড়েন ও জীবন হারান। কাজেই স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ অবস্থা নিশ্চিত করা ছাড়া পর্যটন শিল্প বিকাশের কথা ভাবাই ঠিক না। এ ছাড়াও যে সমস্ত স্থানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে সেগুলোর সৌন্দর্য ও স্বাভাবিকতা বজায় রাখা আবশ্যক। একই সঙ্গে দর্শনীয় ও ঐহিহাসিক স্থানে সময়োচিত বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে পর্যটন শিল্প বিকাশের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ব্যাখ্যা করে বলার কিছু নেই। অর্থনৈতিক কার্মকাÐ শিল্প বিকাশের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। অর্থনৈতিকভাবে কমজোরী মেরুদÐের হতাশাবিদ্ধ দেশে সমস্যার পর সমস্যা রয়ে গেছে। উৎপাদন ব্যাহত, কলকব্জা বন্ধ- এমন অবস্থা প্রায় প্রায়ই ঘটছে। লাভের চেয়ে লোকসান গুণতে হচ্ছে বেশি। বৈদেশিক সাহায্য আর ঋণ ছাড়া দেশের চাকা চলে না। তখন পর্যটন শিল্প থেকে যথেষ্ট আয় বাড়াবার চিন্তা এদেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যটনের বিষয় ছাড়াও আভ্যন্তরীণ পর্যটন বিষয়ক ভাবনা-চিন্তা করার সময় এসেছে। আমাদের দেশে এখনও ব্যাপকভাবে পর্যটনের প্রতি আগ্রহ দেখা যায় না। এর জন্য বিভিন্ন স্পট তৈরি করে আনুষঙ্গিক সুবিধা ও নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে এবং এর প্রচার চেষ্টা চালাতে হবে। অভয়ারণ্য তৈরি করে সেখানে বাংলো বা ভ্রমণের ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। প্রকৃতিকে প্রকৃতির মতো থাকতে দিয়ে তার ভিতরেই তৈরি করতে হবে আকর্ষণী পর্যটন কেন্দ্র। ভ্রমণ যাতে সুলভ ও আনন্দদায়ক হয় সে ব্যবস্থা করা গেলে স্থানীয় বা দেশীয় পর্যটক আকর্ষণ করা সহজ হবে। পর্যটন পর্যটকের জন্য রহস্যময়, রোমাঞ্চকর এবং অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ পাঠ্য পুস্তকের মতো। শুধু এর অভিজ্ঞতাটা চাক্ষুষ। অর্ন্তচক্ষু, কল্পনা আর পরতে পরতে অভিজ্ঞতার তুলিতে আঁকা পর্যটন একটি গাঁথা। এ যেন পর্যটকের কাছে ‘দেবে আর নেবে, মিলবে, মিলাবে’র মতো। মানুষের প্রতিদিনের জীবন শৃঙ্খলাবন্দি। একটু বেহিসেবি হলেই যেন সব কিছু ওলট-পালট হয়ে যাবে। অথচ মানুষের মন বলে একটি কথা আছে। মানুষের মন বৈচিত্র্যমুখী। তীব্র পিয়াসী, সৌন্দর্য সন্ধানী। তাই ভ্রমণ ‘বিলাস’ হলেও কাম্য। আর এই বিলাসের অর্থই একটি দেশের আয়ের উল্লেখযোগ্য উৎস হয়ে দেশটিকে কিছুটা হলেও উন্নতির পথে নিয়ে যেতে পারে।
একুশ শতককে পর্যটনের স্বর্ণ সম্ভাবনা ক্ষেত্র হিসাবে বিশ্বব্যাপীই দেখা হচ্ছে। বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশক থেকে পর্যটনে মানুষের আগ্রহ ও অংশগ্রহণে ব্যাপকতা দেখা দেয়। বিমান চলাচল মানুষের দুর্নিবার ভ্রমণের আকাক্সক্ষাকে পূরণ করতে সক্ষম হচ্ছে। দেশে দেশে সীমান্ত বিধি-নিষেধ হয়েছে সহজ, প্রতিযোগিতামূলকভাবে ভ্রমণের ব্যয় হ্রাস করা হচ্ছে। যাতায়াত সহজ আনন্দ ভ্রমণের সুযোগ প্রায় অবারিত হয়ে পড়ায় সপরিবারে বিদেশ ভ্রমণের উৎসাহ উদ্দীপনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগে মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ করতো না। এখন অবকাশ যাপনে বিদেশ গমন অনেকটা সহজ হয়ে এসেছে। এর মাঝে মধ্যবিত্ত শ্রেণিও জড়িত হচ্ছে। উন্নত দেশ ছাড়াও মাঝারি দেশগুলোতে মধ্যবিত্তের আয় বাড়তি থাকায় আনন্দ ভ্রমণের সুযোগ গ্রহণ করছে অনেকেই।
উন্নত বিশ্বের পর্যটকদের কাছে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিশেষ গুরুত্ব লাভ করছে। এ অঞ্চলের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থা প্রাচীন, আছে বিপুল ঐতিহাসিক সম্পদ ও নিদর্শন। প্রাকৃতিক পরিমÐলে প্রকৃতি নির্ভর জীবন পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র বিন্দু। নানা বৈচিত্র্য মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য, অকৃপণ পানিরাশি, বন, পাহাড়ের ভূ-স্বৈর্গিক সমাহার পাশ্চাত্যের পর্যটকদের এমন আকৃষ্ট করছে। এক সময় যা ছিল যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, পরবর্তীতে জাপানের একচেটিয়া তা এখন অন্যান্য অঞ্চলে সম্প্রসারিত হচ্ছে।
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো থেমে নেই। তারাও এ প্রতিযোগিতামূলক শিল্পকে হাতের মুঠোয় বাগাতে চায়। এই শিল্পকে লুফে নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, নেপাল, মালদ্বীপ। যে সমস্ত দেশ কঠোর রক্ষণশীল বলে পরিচিতি ছিল তারাও পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যৎ বুঝতে পেরে অপেক্ষাকৃত নমনীয়ভাব প্রদর্শন করছে। যেমন- চীন, ভিয়েতনাম ও মায়ানমার। এ দেশগুলো এক সময় বহির্বিশ্বের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যও বন্ধ রেখেছিল। বর্তমানে তারা বাস্তবতা উপলব্ধি করে তাদের সীমান্ত দ্বারে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে। এর ফলে এসব দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভ্রমণ আগের চেয়ে সহজ হয়ে উঠেছে। এশিয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পর্যটনের নতুন দিগন্ত খুলে যাওয়ায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিনিয়োগ বাড়ছে। শিল্পে প্রতিযোগিতা হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে যে এগিয়ে যাবে জয়ও তার সাথে অগ্রসর হবে। পর্যটন শিল্প বিকাশের সুযোগ ও সম্ভাবনা বাংলাদেশের কপালে জ্বল জ্বল করছে। এখন এটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হলে এ শিল্প এখানে বিকশিত হবার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশে পর্যটনের ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগই একমাত্র উদ্যোগ। সরকার বা সরকারি উদ্যোগের সীমাবদ্ধতার কথা সব ক্ষেত্রেই আমাদের শোনা অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে। তাই পর্যটনে কিছু বৈচিত্র্য ও সুযোগ সৃষ্টির জন্য বেসরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে হয়। এ ক্ষেত্রে নিভৃত অঞ্চলের সৌন্দর্যমন্ডিত স্থানগুলোতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলাসহ সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির জন্য বেসরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে হয়। এ ক্ষেত্রে নিভৃত অঞ্চলের সৌন্দর্যমন্ডিত স্থানগুলোতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলাসহ সুযোগ-সুবিধাও সৃষ্টি করার কথা আমরা বলেছি।
যেমন সমুদ্র বেষ্টিত সেন্টমার্টিনস দ্বীপ, সোনরগাঁ, সিলেটের জাফলং, মাধবকুন্ড, হামহাম বা শেরপুরের ঝিনাইগাতি, নকলা বা গজনীকে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রে রূপায়িত করা যেতে পারে। স্থানীয়ভাবে জায়গাগুলোর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগ্রাম, পঞ্চগড় এলাকার চা-বাগান, হাওর বা বিল এলাকা বা আকর্ষণীয় স্থানে পর্যটন সুবিধা নিশ্চিত করে এ শিল্পের বিকাশ সাধন করা যেতে পারে। আমরা এর আগেও বলেছি যে, সামাজিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ববাহী শিল্প বিকাশের অন্যতম শর্ত দেশের প্রশান্ত পরিবেশ। পরিবেশ সুন্দর থাকলে, মানবিক পরিবেশ সুস্থ থাকলে তবেই পর্যটন শিল্পের বিকাশ লাভ কণ্টকমুক্ত হবে, সন্দেহ নেই।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।