পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে সংঘটিত সব গুমের অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। আজ ৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম বা বলপূর্বক অন্তর্ধান প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত কয়েক বছরে গুম বা বলপূর্বক অন্তর্ধান জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক, উদ্বেগ আর নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। ২০১৪ থেকে ২০১৯ (জুলাই) পর্যন্ত ৩৪৪ জন গুমের শিকার হয়েছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম বা বলপূর্বক অন্তর্ধান প্রতিরোধ দিবস। এ দিবসের প্রাক্কালে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গুমের শিকার সকল নিখোঁজ ব্যক্তিকে জরুরি ভিত্তিতে খুঁজে বের করা, প্রতিটি গুমের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠন, দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গুমের শিকার ব্যক্তি ও তার পরিবারের যথাযথ পুনর্বাসন নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার আহŸান জানাচ্ছে আসক।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,‘‘বিগত কয়েক বছরে গুম বা বলপূর্বক অন্তর্ধান জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক, উদ্বেগ আর নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০১৯ (জুলাই) পর্যন্ত ৩৪৪ জন গুমের শিকার হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনরা অভিযোগ তুলেছেন। এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৪৪ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে, ৬০ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং ৩৫ জন ফেরত এসেছে। এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবার, স্বজন বা প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন যে, বিশেষ বাহিনী-র্যাব, ডিবি পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের পরিচয়ে সাদা পোশাকে ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের তুলে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, গণমাধ্যমসূত্রে এবং আমাদের নিজস্ব অনুসন্ধানে আমরা দেখেছি, প্রায়শ সংশ্লিষ্ট বাহিনী তাদের গ্রেফতার বা আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে থানা এসব ঘটনায় কোনও অভিযোগ নেয় না, স্বজনরা জিডি করতে গেলেও কোনও বিশেষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাম যারা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের নাম উল্লেখ করে জিডি করা যায় না। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বা প্রভাবশালী ব্যক্তি ছাড়া খুব কম ক্ষেত্রেই উদ্ধারের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে গুম হওয়ার অনেকদিন পর হঠাৎ করেই তাদের কোনও মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় বা ক্রসফায়ারে তাদের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়। কয়েকজনকে আমরা সৌভাগ্যবশত ফিরে আসতে দেখলেও কী ঘটেছিল সে সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণ নীরবতা বজায় রেখেছেন।”
আসকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘গুমের প্রভাব সমাজ ও রাষ্ট্রে সুদূরপ্রসারী। রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরাগভাজন তথা নিখোঁজ হওয়ার ভয়ে মানুষ মুক্তবুদ্ধির চর্চা, মতপ্রকাশ কিংবা সরকারের বা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কর্মকান্ডের যে কোনও ধরনের সমালোচনা করা থেকে নিজেদের বিরত রাখে। যা প্রকৃতপক্ষে মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও সুশাসনের বিকাশ ব্যাহত করে।’
এতে বলা হয়, ‘গত কয়েক বছরে দেশে গুম একটি বড় মানবাধিকার সমস্যা হিসেবে দেখা দিলেও এবং দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন, গণমাধ্যম, জাতিসংঘ বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করা সত্তে¡ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর গুমের ঘটনা সরকার বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। তারা বরং এ ধরনের ঘটনাকে অপহরণ বলে অভিহিত করছেন।
হতাশাজনক হচ্ছে, জাতিসংঘের যে ৯টি প্রধান সনদ আছে তার ৮টিই বাংলাদেশ সরকার অনুমোদন করে নিলেও বলপূর্বক অন্তর্ধান থেকে ব্যক্তিবর্গকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে গৃহীত আন্তর্জাতিক সনদ অনুমোদন করেনি।’
আসক বলছে,‘জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটির ৬৭তম অধিবেশনে নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তি বিরোধী সনদের আওতায় বাংলাদেশের অগ্রগতি পর্যালোচনায় অঘোষিত আটক, যাকে কমিটি অন্তর্ধান বা গুম হিসেবে বর্ণনা করেছে, সেই বিষয়টিতে কমিটি বলেছে, এ রকম ব্যক্তিকে যদি হত্যা করা হয় অথবা তিনি আবার ফিরে আসেন-যেটাই হোক না কেন, তাকে আন্তর্জাতিকভাবে গুম হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কমিটি তাদের চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণে সকল আটক ও আটকাবস্থায় মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ঘটনাগুলো একটি স্বাধীন তদন্ত সংস্থা দ্বারা দ্রæততার সঙ্গে পরিপূর্ণ তদন্ত করা ও গুম সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইনের মাধ্যমে ‘গুম’কে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদটি স্বাক্ষর করার সুপারিশ করে।’
বিজ্ঞপ্তিতে সকল গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র। গুমের ঘটনা প্রতিরোধে ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের জন্য আসক সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে। পাশাপাশি গুম সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ স্বাক্ষর করে গুম প্রতিরোধে সরকারের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।