মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পাশাপাশি রাজ্যের সম্মানও কেড়ে নিয়েছে মোদি সরকার। এরপর তিন সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন কাশ্মীরিরা। ভারতীয় বাহিনীর দমন-পীড়নে ভূস্বর্গ কাশ্মীরে যখন মানবাধিকারের চরম অবনতি ঘটেছে ঠিক তখন আমিরাত সফরে দেশটির সর্বোচ্চ সম্মাননা পেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপরই তিনি প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাহরাইন সফরে যান। এই সফরে মোদিকে আমিরাতের মতো সর্বোচ্চ সম্মাননা দিয়েছে বাহরাইনও। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিশ্বের অর্থশালী মুসলিম দেশগুলোর একটি আরব আমিরাত কাশ্মীর সঙ্কটের মূল নায়ক ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশে দাঁড়ানোয় তীব্র সমালোচনা চলছে মুসলিম বিশ্বে। ফেইসবুকে মুসলিম দুই দেশের এমন কীর্তিতে বিরূপ মন্তব্য করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন নেটিজেনরা।
গত শনিবার আবু ধাবিতে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে মোদিকে সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অর্ডার অব জায়েদ’ দেওয়া হয়। এই সম্মাননা প্রদান করেন দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। অনুষ্ঠানে যুবরাজ আল নাহিয়ান ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সোনার মেডেল পরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমার ভাই তার দ্বিতীয় বাড়িতে এসেছেন। আমি কৃতজ্ঞ। আপনিই এই সম্মানের যোগ্য।’
বিস্ময় প্রকাশ করে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট মেহেদী হাসান পলাশ মন্তব্য করেছেন, ‘‘কাশ্মীর দখলের পুরস্কার এল একটি মুসলিম দেশ থেকে!!’’
সিরাজুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘মোদির হাত কাশ্মীরের মুসলিম ভাইদের রক্তে রঞ্জিত, আমিরাতের শেখ তাকে মেডেল দিয়ে ঈমান বিরোধী কাজ করেছেন।’’
‘‘ভাইয়েরা অবাক হওয়ার কিছু নেই।কারণ নাম মুসলিম হলেই সে মুসলমান নয়। মুসলমান হিসেবে পরিচিত হবে তার কাজ দিয়ে।এই ধরনের মুনাফিক মার্কা মানুষ সব সময় ছিল আর থাকবে।তবে পরিশেষে এরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে’’ এমন মন্তব্য করেছেন ফেইসবুক ব্যবহারকারী শাহরিয়ার তারেক।
সুমাইয়া সিদ্দীকা লিখেছেন, ‘‘এই ভাইয়ের সাথেই হাশরের মাঠে একসাথে থাকার জন্য প্রস্তুত থাক।’’
ক্ষোভ প্রকাশ করে হামিদ উল্লাহ লিখেছেন, ‘‘বলার ভাষা নাই, বুকের ভিতরটা ছটফট করতেছে, এ অবস্থায় আরব আমিরাত কিভাবে মোদিকে সম্মাননা দেয়। তাদের কাশ্মীরের মা-বোনদের জন্য মনটা একটু ব্যথিত হলনা, কাঁদলনা, আমরা কী রকম মুসলিম? অন্য মুসলিমের জন্য মন কাঁদেনা, মোদি কসাইর বন্ধুত্ব নিজের স্বার্থের জন্য। আজকে আরব আমিরাত ভারতের পক্ষে, মুসলিমের বিপক্ষে। আল্লাহ বিচার তুমি কর।’’
তবে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে মো. ফারিন লিখেছেন, ‘‘অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত কাজ, এখন মোদীর ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও ভারতের মুসলমানদের ব্যাপারে কঠোর কোন পদক্ষেপ নিতে পারবেন না।’’
‘‘এ সার্টিফিকেট কাশ্মিরের মুসলিমদের হত্যার অনুমোদন স্বরুপ, তীব্র প্রতিবাদ জানাই নর পশুকে সম্মাননা জানানোর জন্য। যদিও আমার প্রতিবাদে কিছু যায় আসে না নারী লোভী আমিরাতিদের। তবে মুসলিম হিসেবে ঘৃণা জানানো আমার ঈমানী দায়িত্ব’’ লিখেছেন মোহাম্মাদ আজিজ।
ফেইসবুক ব্যবহারকারী এসকে জামাল লিখেছেন, ‘‘কাশ্মীর আজকে অসহায়, কাশ্মীরের জনগণ অসহায়। ইহুদিবাদী সরকারের সাথে মুসলমানদের আরব আমিরাত আজকের সাথে হাত মিলিয়ে মুসলমানদেরকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে যাচ্ছে। যুগেযুগে মুসলমানদের মধ্যে এসব ফেরাউন থাকবে। তাদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করে দেবে একদিন- ইনশাআল্লাহ।’’
মো. মিলন লিখেছেন, ‘‘হে আল্লাহ তুমি আমাকে শক্তি দাও যে শক্তি দিয়ে আমি আরব আমিরাতের বাদশাকে উচিত শিক্ষা দিতে পারি। ওরা মুসলমানদের হত্যা করতেছে আর জালিমের দল পুরস্কার দিতেছে। আল্লাহ তুমি এর বিচার কর।’’
পবিত্র কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে সাজিদ সামিম লিখেছেন, ‘‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের বাপ ও ভাইদের ও বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না যদি তারা ঈমানের তুলনায় কুফরীকে প্রধান্য দেয়..।যদি তোমরা তাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ কর তবে তোমরা আল্লাহর কাছে যালেম হিসেবে গণ্য হবে..। সূরা তওবা -২৩।’’
‘‘রোজ কিয়ামোত খুব কাছে তাই একজন মুসলিম হয়ে কী করে আর একটা মুসলিমকে সাপোর্ট করেনা ওদের কঠিন হিসাব দিতে হবে কাল কিয়ামতের দিন। তখন যেন মোদি ওকে বাঁচায়। সেই দিন দেখবো কে কাকে সাপোর্ট দেয়’’ মন্তব্য শেরালি শেখের।
এদিকে, মোদিকে সর্বোচ্চ সম্মাননা দেয়ার সমালোচনা ও নিন্দা করেছে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সর্বদলীয় হুররিয়াত কনফারেন্স।
সংগঠনটির নেতা সাইয়্যেদ আবদুল্লাহ গিলানি বলেছেন, মোদিকে পদকটি দেয়া হয়েছে রাজতান্ত্রিক সরকারের পক্ষ থেকে। এতে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন নেই। তবে আমিরাতের এই পদক্ষেপে কাশ্মিরী জনগণ হতাশ।
এর আগে, ব্রিটিশ আইনপ্রনেতা নাজ শাহ এক খোলা চিঠিতে মোদিকে এই সম্মাননা না দিতে আমিরাত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। চিঠিতে তিনি বলেন, ‘আমাদের সাথে বসবাসরত হাজারো কাশ্মিরী নয়, বরং আমি নিজেকে একজন কাশ্মিরী হিসেবে চিন্তা করে আপনাদের সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছি।’
উল্লেখ্য, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে পাকিস্তান। কাশ্মীর ইস্যুতে তবে ওআইসির বৈঠকে ভারতকে সমর্থন করে আমিরাত ও বাহরাইন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।