পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আটক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে দেশটির প্রধান বিরোধী দলগুলো। একইসঙ্গে সেখানকার যোগাযোগ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করারও দাবি জানায় তারা। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে এক বিক্ষোভে অঙ্ক নেয় বিরোধী দলগুলো। এটি আয়োজন করে তামিলনাড়ুর স্থানীয় দল দ্রাবিড় মুনেত্রা কাজাঘাম। রাজনীতিবিদ ছাড়া এখানে যোগ দেয় সমাজকর্মী ও অনেক কাশ্মীরি শিক্ষার্থীও। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এর আগ মুহূর্তে জম্মু-কাশ্মীরে আধাসামরিক বাহিনীর অতিরিক্ত ৩৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়। পরে নতুন করে সেখানে নিয়োজিত হয় আধাসামরিক বাহিনীর আরও ৮ হাজার সদস্য। উপত্যকায় কারফিউ জারির পাশাপাশি টেলিফোন-ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে। এতসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও সেখানে বিক্ষোভ ঠেকাতে পারছে না ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। গ্রেফতার করা হয়েছে সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রীসহ অনেককে।
ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের গোলাম নবি আজাদ বলেন, ‘বিজেপি ও তার আদর্শিক সঙ্গী আরএসএস ৩৮৭০ ধারা বাতিল করে উদযাপন করছে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই জানতো না আসলে সেটা কি। তারা এই মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তারা বলছে সব যোগাযোগ স্বাভাবিক। অথচ শুধু কর্মকর্তাদেরই ফোন সংযোগ আছে। আর কারও নেই।
আন্দোলনে বিক্ষোভকারীরা রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি ও যোগাযোগ সেবা খুলে দেওয়ার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। এছাড়া ঐক্যেরও ডাক দেয় তারা। কাশ্মীরের ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’কে প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির বিরোধীদলৈগুলো। আটককৃত রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তিরও দাবি জানায় তারা।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আছে সংসদ সদস্য ফারুক আব্দুল্লাহ, সাবেক মুখমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দুল্লাহ, সাবেক সচিব ও রাজনীতিবিদ শাহ ফয়সাল। এছাড়াও আরও হাজার হাজার কাশ্মীরিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের দিনেশ ত্রিবেদী বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো কাশ্মীরের নেতারা এমন কি করেছে যে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। এই প্রশ্ন আমাদের অধিকার। তারা অপরাধে করলে তার সাজ া হবে কিন্তু তারা কি অপরাধ করেছে তা জানতে হবে আমাদের।
একই কথা বলেন সর্বভারতীয় ডেমোক্রেটিক উইমেন্স এসোসিয়েশনে সদস্য ও মানবাধিকার কর্মী মাইমুনা মোল্লাহ। তিনি বলেন, নেতারা কেন কারাগারে। সরকারের যদি এই প্রশ্নের জবাব না থাকে তবে বুঝতে হবে এখানে অন্য কোনও উদ্দেশ্য আছে।
স¤প্রতি কাশ্মীর সফরে গিয়েছিলেন মাইমুনা মোল্লাহ। সুশিল সমাজের চারসদস্যের দলে ছিলেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা সেখানে গিয়ে জনগণের কাছে যা শুনতে পাই তা হচ্ছে, অত্যাচারীম নিষ্ঠুরতা, বেইমানী। সমাবেশে কমিউন্সি নেতা ডি রাজা বলেন, আরএসএসকে অনুসরণ করে মোদি দেশের জাতীয় স্বার্থ নষ্ট করছেন। তিনি বলেন, আমরা কাশ্মীরের সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়েছি। তাদের নেতাকে কারাগারে রেখেছি। যদি সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এমন বিপদে পড়ে তাহলে সাধারণ মানুষ না জানি কি অবস্থায় আছে।
বিজেটি মুখপাত্র হারিশ খুরানা আল-জাজিরাকে বলেন, এই নেতাদের ঘিরে গুজব ছিলো তাই তাদের আটক করতে হয়েছে। দিল্লির এই আন্দোলনে যোগ দেয় অনেক কাশ্মীরি শিক্ষার্থীও। জুবায়ের নামে এক কাশ্মীরি বলেন, কাশ্মীরের ৮০ লাখ মানুষই এখন উন্মুক্ত এক কারাগারে বাস করছেন। সূত্র : আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।