পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে আজ বাদ জুমা কারফিউ অমান্য করে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হতে শ্রীনগরে হুরিয়ত নেতাদের নামে পোস্টার লাগানো হয়েছে। শহরের কয়েকটি এলাকায় স্বাধীনতাকামী নেতাদের যৌথ সংগঠন ‘জয়েন্ট রেজিস্ট্যান্স লিডারশিপের’র নামে ওই ধরনের পোস্টার চোখে পড়ছে। তবে যেহেতু ওই নেতারা এখনও আটক বা গৃহবন্দী, তাই সত্যিই তারা ওই ডাক দিয়েছেন কি না তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
দুসপ্তাহ আগে শ্রীনগরেরই সৌরা এলাকায় বাদ জুমা বেশ কয়েকশ’ মানুষ প্রতিবাদ বিক্ষোভে সামিল হয়েছিল, যে ভিডিও বিবিসিতে প্রকাশিত হলে তা আলোড়ন ফেলে। আজ জুমার আগেও নিরাপত্তাবাহিনী শ্রীনগরসহ গোটা কাশ্মীরকে কঠোর নিরাপত্তা ও কারফিউতে মুড়ে রেখেছে।
গত ৫ আগস্ট ভারত সরকারের কাশ্মীরের স্বশাসন কেড়ে নেয়ার বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ঘোষণার অনেক আগে থেকেই সেখানকার হুরিয়তপন্থী স্বাধীনতাকামী নেতাদের হয় গৃহবন্দী, নয় জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। ফলে সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, মিরওয়াইজ ওমর ফারুক বা ইয়াসিন মালিকের মতো কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতারা ‘জয়েন্ট রেজিস্ট্যান্স লিডারশিপ’ নামে যে যৌথ নেতৃত্ব গঠন করেছিলেন তাদের দিক থেকে এযাবত কোনও কর্মসূচির ঘোষণা আসেনি। কিন্তু ভারতের পার্লামেন্টে জম্মু ও কাশ্মীরকে বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার দু’সপ্তাহ পর অবশেষে সেই যৌথ নেতৃত্বের নামে পোস্টার লাগানো হয়েছে, সাধারণ মানুষকে আহŸান জানানো হয়েছে তারা যেন বাদ জুমা বিপুল সংখ্যায় সরকার-বিরোধী প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেন।
রয়টার্স জানাচ্ছে, শ্রীনগরের দেওয়ালে সাঁটা এমনই একটি পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘প্রত্যেক কাশ্মীরি - তরুণ বা বৃদ্ধ, পুরুষ বা মহিলা - সবাইকে বলা হচ্ছে শুক্রবারের নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে।’
সেই প্রতিবাদ যে ‘হুকুমত› বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে সেটাও। শ্রীনগরে জাতিসংঘের যে সামরিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর (ইউএনএমওজি) কার্যালয় আছে, প্রতিবাদ মিছিল সেই অভিমুখে যাবে বলেও জানানো হয়েছে। ১৯৪৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে প্রথম যুদ্ধের পরই জাতিসংঘের এই কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছিল।
গত কয়েকদিনে কাশ্মীরের যেখানেই মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করেছে - নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তা ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। চালানো হয়েছে পেলেট গান বা ছররা বন্দুকও, যাতে ঘায়েল হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অনেকেই। শ্রীনগরে আজ এমন কোনও সংঘাত দেখা যাবে কি না, সেই আশঙ্কা রয়েছে পুরোদস্তুরই।
দখলদারিত্ব অবসানের আহ্বান মার্কিন আইনপ্রণেতাদের
এবার মার্কিন কংগ্রেসেও কাশ্মীরে ভারতীয় দখলদারিত্বের অবসান ঘটানোর দাবি উঠেছে। মঙ্গলবার ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে আহŸান জানিয়ে হাউস আর্মড সার্ভিসেস কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান অ্যাডাম স্মিথ বলেন, অধিকৃত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের ভারতীয় সিদ্ধান্ত তিনি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন। সেখানে চলমান যোগাযোগ অচলাবস্থা, ক্রমবর্ধমান সামরিকায়ন ও কারফিউ নিয়ে যুক্তিসঙ্গত উদ্বেগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্মিথ।
সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য বব মেনেনডেজ, হাউস পররাষ্ট্র কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেস সদস্য এলিওট এল এনজেলও জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। এ দুই আইনপ্রণেতা বলেন, জমায়েত হওয়ার স্বাধীনতা, তথ্য পাওয়া, আইনের অধীন অধিকার পাওয়াসহ সব নাগরিকের সমঅধিকার সুরক্ষা ও এগিয়ে নেয়ার একটি সুযোগ ভারতের রয়েছে। তারা বলেন, গণতন্ত্রের প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিপ্রস্তর হচ্ছে রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতা। কাজেই জম্মু ও কাশ্মীরে ভারত সরকার এই নীতি অনুসরণ করবে বলে আমরা আশা রাখছি।
পাকিস্তানকে হাইড্রোলজিক্যাল ডাটা দেবে না ভারত
অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এ জন্যই পাকিস্তানের সঙ্গে ‘হাইড্রোলজিক্যাল ডাটা’ আদান-প্রদানের চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। গত বুধবার ‘ইন্দাস ওয়াটার’-এর ভারতের কমিশনার পি কে সাক্সেনা এ কথা জানিয়েছেন। ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের এ চুক্তি হয়েছিল। হাইড্রোলজিক্যাল ডাটা চুক্তির ফলে আগাম বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তুতি নিতে পারত পাকিস্তান। তবে এ চুক্তি নাবায়ন না হলে কৃষি ও সেচে ক্ষতির মুখে পড়বে পাকিস্তান। সূত্র : ডন, বিবিসি, রয়টার্স ও এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।