নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে শ্রীলঙ্কার কাছে সিরিজ হারালো বাংলাদেশ। ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ের পর এলোমেলো বোলিং ও হতাশার ফিল্ডিংয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে তামিম ইকবালের দল। বৃথা গেছে মুশফিকুর রহিমের হার না মানা ৯৮ রানের ইনিংস।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে রোববার বাংলাদেশের করা ৮ উইকেটে ২৩৮ রানের জবাবে ৩২ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় লঙ্কানরা।
বোলিং-ফিল্ডিংয়ে উন্নতি চোখে পড়েনি এই ম্যাচেও। সিরিজ শুরুর আগে দলের ব্যাটিং নিয়ে যে আত্মবিশ্বাসের ঝংকার তোলা হয়েছিল তা টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। প্রথম ম্যাচের মত এবারও বুক চিতিয়ে লড়েছেন কেবল মুশফিকুর রহিম। সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটিং সত্ত্বাটা বেরিয়ে না এলে বড় লজ্জায় পড়তে হত দলকে।
জবাবে তরুণ ওপেনার অভিষিকা ফার্নান্ডোর (৭৫ বলে ৮২) ঝড়ো ব্যাটে জয়ের ভীত পেয়ে যায় লঙ্কানরা। সেই ভীতের উপর দাঁড়িয়েই কুসল মেন্ডিস (৪১) ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের অবিচ্ছিন্ন ৯৬ রানের জুটিতে হেসেখেলেই সিরিজ নিশ্চিত করে দিমুথ করুনারতেœর দল। উইকেট না পেলেও দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন তাইজুল ইসলাম (০/৩৫)। ৮ ওভারে ৫০ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে দলের সেরা বোলার মুস্তাফিজুর রহমান।
দলের এহেন ব্যাটিং দশার জন্য হয়ত নিজেকেই দুষবেন এই সিরিজ দিয়েই অধিনায়কত্বে অভিষেক হওয়া তামিম। বিশ্বকাপে হাসেনি তার ব্যাট। লঙ্কান সফরেও সেই ধারাবাহীকতা মেনে টানা ছয় ম্যাচে হলেন বোল্ড আউট। ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ৩১বার বোল্ড আউট হয়ে ছাড়িয়ে গেছেন মাশরাফিকে (৩০)। দেশের হয়ে যা সর্বোচ্চ বোল্ড আউটের রেকর্ড। অথচ ব্যাটিং কোচ নাকি তামিমের ব্যাটিংয়ে কোনো টেকনিক্যাল সমস্যা খুঁজে পান না!
দলপতি সামনে থেকে নেতৃত্ব না দিলে বাকিরাও হতাশ হয়ে পড়ে। তার প্রতিফলনই ঘটেছে এদিনও। কলম্বোর প্রেমাদাসার কিছুটা মন্থর হয়ে আসা উইকেটে থিতু হয়েও প্রত্যেকে আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটুভাবে। ইনিংসে তৃতীয় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ তামিমের, ১৯। অথচ তামিম ছাড়াও আরও চার ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন দুই অঙ্কে পৌঁছে। অনবদ্য ইনিংসের পথে মুশফিকও বেশ কয়েকবার বেঁচে গেছেন রান আউটের হাত থেকে।
প্রথম ম্যাচে লাসিথ মালিঙ্গার ভয়ঙ্কর ইয়োর্কারে লেগ স্টাম হারিয়েছিলেন দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য সরকার। এদিন মালিঙ্গা ছিলেন না। ভালো কিছুর আভাস দিয়েও নুয়ান প্রদীপের ফুলটস বলে লেগ বিফোর হয়ে যান সৌম্য (১১)। উইকেটে আঁকড়ে থাকার আভাস দিয়েও তামিম বোল্ড হয়েছেন স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে এনে। টপ অর্ডারে সাকিব আল হাসানের শূন্যতা পূরণের জন্য তিনে আনা হয়েছিল মোহাম্মাদ মিথুনকে। অনুশীলন ম্যাচে ৯১ রানের ইনিংসে ভরসাও জুগিয়েছিলেন। কিন্তু মূল মঞ্চে হয়েছেন ব্যর্থ। আগের ম্যাচে ১০ রান করার পর এবার বলে আউট হয়েছেন ১২ রানে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফেরা সেই একই বোলার দনাঞ্জয়ারকে কাট করতে গিয়ে অফ স্টাম হারিয়ে দলকে বিপদে ফেলে যান উত্থান পতনের মধ্যে থাকা মাহমুদউল্লাহ (৬)। দলীয় ৮৮ রানে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে রান আউট সাব্বির (১১)। মোসাদ্দেক ফেরেন ইশুরু উদানার স্লোয়ার শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে। দলীয় স্কোর তখন ৬ উইকেটে ১১৭। আথচ আগের দিন দুই কোচকে নিয়ে শর্ট বলে ব্যাটিং অনুশীলন করেন মোসাদ্দেক।
এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের এমন আসা-যাওয়া দেখছিলেন মুশফিক। এরপরই পেয়ে যান মিরাজকে। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের সহায়তার মিরাজও জাগিয়ে তোলেন নিজের ব্যাটিং প্রতিভা। দুজনে সপ্তম উইকেটে গড়েন ৮৩ বলে ৮৪ রানের জুটি।
আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করতে থাকা মিরাজের বিদায়ে জুটি বিচ্ছিন্ন হয়। এরপর তাইজুল (৩) ও মুস্তাফিজকে (২) নিয়ে মুশফিক যোগ করেন আরও ৩৭ রান। ৪৯তম ওভারে উদানাকে টানা দুই চার ও এক ছক্কা হাঁকিয়ে তিন অঙ্কের কাছে চলে যান মুশফিক। কিন্তু এরপর চারবার স্ট্রাইক পেয়েও সেঞ্চুরির জন্য প্রয়োজনীয় ৫ রান নিতে পারেননি। অবশ্য সেঞ্চুরির চেয়ে দলীয় সংগ্রহের দিকে বেশি নজর থাকায় সিঙ্গেল নিতে দ্বিধা করেননি মুশফিক। ১১০ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে করা ৯৮ রানের পথে সাকিব ও তামিমের পর দেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিক এদিন পেরিয়ে যান একদিনের ক্রিকেটে ছয় হাজার রানের মাইলফলক। দনাঞ্জয়া ছাড়াও নুয়ান প্রদীপ ও উদানাও দিয়েছেন দুটি করে উইকেট। দুইজন হয়েছেন রান আউটের শিকার।
আগামী বুধবার সিরিজের শেষ ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে লড়বে টাইগাররা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।