পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আবারও এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এবার মৃত্যু হয়েছে এক নারী চিকিৎসকের। এ নিয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গতকাল পর্যন্ত মোট তিনজন চিকিৎসকের মৃত্যু হলো। এর আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক নারীসহ দু’জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়।
পরিবার ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তানিয়া সুলতানা (২৮) নামে এক নারী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ধানমন্ডির বেসরকারি আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত তানিয়া সুলতানা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ৪৭ ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজে এফসিপিএস পার্ট-২ এর শিক্ষার্থী ও একই হাসপাতালে অনারারি চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে স্বামী আমিনুল বাহার হিমন ও সাড়ে তিন বছরের ছেলের সঙ্গে থাকতেন তিনি।
নিহতের স্বামী ব্যবসায়ী আমিনুল বাহার হিমন গতকাল শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, গত ২২ জুলাই থেকে জ্বরে ভুগছিলেন তানিয়া। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার ডেঙ্গু পজিটিভ আসে। ২৪ জুলাই তাকে রাজধানীর মগবাজারে কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার তাকে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাক্তার আব্দুল কাহার আকন্দের অধীনে তার চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাত ১০টায় তার মৃত্যু হয়। হিমন আরও বলেন, জ্বরের কারণে তানিয়ার এভাবে মৃত্যু হবে তা কখনও কল্পনাও করিনি। তার মৃত্যুতে আমাদের সাড়ে তিন বছরের ছেলেটি মা হারা হয়ে গেলো। গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চলতি মৌসুমের গত তিন সপ্তাহে তিনজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে গত ৩ জুলাই স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. নিগার নাহিদ দিপু। পরবর্তীতে গত ২২ জুলাই শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় হবিগঞ্জ জেলার নবাগত সিভিল সার্জন শাহাদাত হোসেন (৫৩)। সবশেষ বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় চিকিৎসক তানিয়া সুলতানার।
তানিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডাক্তার আয়েশা আক্তার বলেন, তানিয়া সুলতানা ডেঙ্গু সাসপেক্ট রোগী হিসেবে ভর্তি ছিলেন। রোগ তত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) মৃত্যু রিভিউ কমিটির রিপোর্ট দেয়ার আগে তানিয়ার মৃত্যু ডেঙ্গুতে হয়েছে কি-না, তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব না।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত মাত্র ৮ জন বলা হলেও বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা কমপক্ষে তিন গুণ বলা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, বেসরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বলার কিছু নেই। তবে আমাদের ডেথ রিভিউ কমিটি মৃত ব্যক্তির চিকিৎসা-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হলেই ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত চলতি মৌসুমে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ২৫৬ জন। মোট আক্রান্ত রোগীর মধ্যে চলতি মাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক ৭ হাজার ১১২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।