Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাছ শিকার করতেই ভারতীয় জেলেদের অবৈধ প্রবেশ

নিয়মিত ঘটনা বলেও অভিযোগ মৎস্যজীবীদের

বিশেষ সংবাদদাতা, বরিশাল থেকে : | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

পটুয়াখালীর কলাপাড়া সংলগ্ন রাবনাবাদ চ্যানেলের মুখে বঙ্গোপসাগর উপক‚ল থেকে আটক ভারতীয় জেলে ও ট্রলারগুলো অবৈধভাবে বাংলদেশের নৌ সীমায় মাছ শিকার করতে এসেই ঝড়ের কবলে পড়ে বলে দাবি পাথরঘাটা, কলাপাড়া, আলীপুর, মহীপুর ও গলাচিপাসহ উপক‚লের মৎসজীবীদের। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় জেলেদের মাছ শিকার নিয়মিত ঘটনা বলেও অভিযোগ মৎসজীবীদের।
গত ২০ মে থেকে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। যা আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন কার্যকর থাকবে। কিন্তু এ সময়ে বাংলাদেশি মৎসজীবীরা সাগরে না গেলেও ভারতীয় জেলেরা অনেক আধুনিক ট্রলার নিয়ে বাংলাদেশের নৌ সীমায় বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ লুটে নিচ্ছে বলে আগেও অভিযোগ ছিল উপক‚লের জেলেদের। এমনকি আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার আগে-পরে যে ২২ দিন উপক‚লের ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার ইলিশ প্রজনন এলাকায় সব ধরনের মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকার মধ্যেও ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের নৌ সীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে বলে অভিযোগ।
সর্বশেষ গত শনিবার কলাপাড়ার অদূরে রাবনাবাদ চ্যানেলের মুখ থেকে ৫১৯ জন জেলেসহ ভারতীয় পতাকাবাহী ৩২টি মাছধরা ট্রলার আটক করে কোস্টগার্ড পায়রা বন্দর এলাকায় তাদের ঘাটিতে নিয়ে আসে। কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন ভারতের পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকার এসব জেলেদের নাম ঠিকানা নথিভুক্ত করে তাদেরকে কোস্ট গার্ডের তত্ত¡াবধানে রেখেছে। গত মঙ্গলবার খুলনার ভারতীয় উপ-দূতাবাসের সহকারী হাই কমিশনার আর কে রায়নাসহ একটি প্রতিনিধি দল জেলেদের খোঁজখবর নিতে কলাপাড়া আসেন।
তবে উপক‚লের মৎসজীবীরা অভিযোগ করেছেন, রাবনাবাদ চ্যানেল থেকে বাংলাদেশÑভারত নৌ সীমান্ত প্রায় পৌঁনে ৩শ’ কিলোমিটার পশ্চিমে। গত শনিবার বঙ্গোপসাগরে বাতাসের যে গতিবেগ ছিল, তাতে ট্রলারগুলো ঝড়ের কবলে পড়ে এত দীর্ঘ সাগরপথ ভেসে আসার কথা নয়। সবগুলো ট্রলারের ইঞ্জিনও সচল ছিল। উপক‚লের মৎস্যজীবীদের দাবি, এরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এলাকায় মাছ শিকার করতে এসেছে। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় টিকতে না পেরে দক্ষিণ-পশ্চিমের বাতাস অতিক্রম করে ভারতীয় এলাকায় পৌঁছতে না পেরে রাবনাবাদ চ্যানেলের মুখে এসে আশ্রয় নেয়। রাবনাবাদ চ্যানেলে পৌঁছার আগে একটি ভারতীয় ট্রলার সাগরে ডুবেও যায়। যার ৪ জেলেকে অপর ট্রলার উদ্ধার করে নিয়ে আসে। রাবনাবাদ চ্যানেলের মুখ থেকে কোস্টগার্ডের জওয়ানরা তাদের আটক করে নিরাপদ হেফাজতে নেয়।
মৎসজীবীদের অভিযোগ, ঝড়ের কবলে পড়ে ইতঃপূর্বে বাংলাদেশের অনেক জেলে ভারতীয় এলাকায় প্রবেশের সাথে সাথেই ভারতীয় কোস্টগার্ড তাদের আটক করে নিয়ে গেছে। এখনো দক্ষিণ উপক‚লের অনেক জেলে ভারতীয় বিভিন্ন কারাগারে আটক আছে। ভারতীয় জেলেদের বিনিময়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন মৎসজীবীরা।
এ ব্যাপারে গতকাল বুধবার কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান জানান, রাবনাবাদ চ্যানেলের মুখ থেকে ভারতীয় মাছধরা ট্রলারগুলোকে আটক করে নিয়ে এসেছে কোস্ট গার্ডের টহল দল। তাদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে কোস্ট গার্ডের জিম্মাতেই রাখা হয়েছে। বিষয়টি সরকারের উর্ধ্বতন মহলে জানানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে সরকারি নির্দেশ পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন।
তবে ‘এসব মাছধরা ট্রলার বাংলাদেশের নৌ সীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ ধরছিল’ বলে অভিযোগ প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য না করে সব বিষয়ই সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খতিয়ে দেখছে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৎস্যজীবী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ