পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকায় একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন মঞ্জুর হাসান। থাকতেন রাজধানীর মুগদা মানিকনগর এলাকার একটি ভাড়া বাসায়। স্বল্প আয়ে স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুমি ও তিন বছরের ফুটফুটে মেয়ে রোজা ফারদিনকে নিয়ে সুখেই ছিলেন তিনি। কিন্তু বিধি বাম। সুখ বেশিদিন কপালে সয়নি। ১ মাস আগে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান মঞ্জুর হাসান। তার মৃত্যুর পরে পরিবারে নেমে আসে ঘোর অমাবস্যা। কোনো মতে বেঁচে থাকতে আত্মীয় স্বজনের কাছে ধরণা দিতে থাকেন রোকসানা। কিন্তু এতকিছুর পরেও কোন কূল কিনারা পাচ্ছিলেন না তিনি।
অবশেষে পৈতৃক সূত্রে পাওনা কমলাপুরের আধা কাঁঠা জমিতে মেয়েকে নিয়ে থাকার জন্য ভাই স্বপনের কাছে দাবি তোলেন। কিন্তু জমিটা কোনোমতেই দিতে রাজি হয়নি স্বপন। দুইদিন আগে গত শনিবারও স্বপনের কাছে বেঁচে থাকার আকুতি নিয়ে শেষ বারের মতো জমিটা চান। কিন্তু স্বপনের মনের বরফ গলেনি। অন্য কোনো দিকেও ছিলোনা আশার আলো। তাই বাধ্য হয়ে অভাবের তাড়নায় মেয়ে রোজাকে আইসক্রিমের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেন রোকসানা। এরপর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
গত রোববার দিবাগত রাতে মুগদার ওই বাসায় মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটার পর পুলিশকে দেয়া রোকসানার স্বীকারোক্তি ও পারিবারিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
নিহত রোজার চাচা মো. সোহেল ভোরের কাগজকে বলেন, তাদের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার উত্তরপাড়া এলাকায়। রোজার বাবা মঞ্জুর হাসান গত ১ মাস আগে হৃদরোগো আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর থেকে মেয়েকে নিয়ে মানিকনগর মিয়াজান গলির বাসাতেই থাকতেন। কিন্তু পরিবারের কোনো আয় না থাকায় অভাব অনটনে দিন কাটছিলো। এজন্য রোকসানা পৈতৃক সূত্রে পাওয়া কমলাপুরের আধা কাঠা জমিটি চাইছিলেন ভাইদের কাছে। কিন্তু তারা দিচ্ছিলো না। সর্বশেষ শনিবারেও রোকসানা কমলাপুরে এসে ভাই স্বপনের সঙ্গে বাকবিতন্ডা করে গেছে বলে ওখানকার প্রতিবেশিরা জানিয়েছে।
এরপরেই হয়তো সে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে বলে আমাদের ধারণা। সোহেল আরো জানান, কমলাপুরের ওই জায়গাতে রোজার বাবার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এজন্য গতকাল রোজার লাশ বাবার পাশে দাফন করার জন্য নিয়ে গেলে বাধা দেন স্বপন। ওখানকার কমিটি এই লাশ দাফন করতে রাজি না বলে রোজার লাশ অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন স্বপন। তিনি বলেন, ওই জমির দরকার নেই আমাদের। শুধু রোজাকে ওর বাবার কাছে দাফন করতে চাই বলে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
মুগদা থানার ওসি প্রলয় কুমার সরকার ভোরের কাগজকে বলেন, এ ঘটনায় নিহত শিশুর চাচা সোহেল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত রোকসানাকে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার অবস্থা ভালোর দিকে। আজ (মঙ্গলবার) তাকে আদালতে পাঠানো হতে পারে। ওসি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে রোকসানা জানিয়েছে, স্বামীর মৃত্যুর পর কেউ তাদের আশ্রয় দেয়নি। এমনকি কমলাপুরে পৈতৃক সম্পত্তির আধা কাঁঠা জমি ভাগাভাগির সমস্যা দেখিয়ে দিতে রাজি হয়নি তার ভাই। এজন্য আত্মহননের পথ বেছে নেয় সে। তবে, এর পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, রোববার দিবাগত রাতে কাপ আইসক্রিমের সঙ্গে ১০টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে রোজাকে খাইয়ে নিজেও খায় রোকসানা। এরপর রোজাকে কোলে করে ঘর থেকে বের হয়ে সন্দেহজনক আচরণ করতে থাকেন তিনি। এসময় মা-মেয়ের মুখে ফেনা দেখে আশপাশের বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। পরে দ্রæত তাদের উদ্ধার করে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজাকে মৃত ঘোষণা করেন। রোকসানা ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।