Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রস্তাবিত বাজেট জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে - বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০১৯, ৬:৪৭ পিএম | আপডেট : ৬:৫০ পিএম, ১৪ জুন, ২০১৯

২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি

শুক্রবার (১৪ জুন) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির পক্ষ থেকে বাজেটের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এ দাবি করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সরকারকে অনির্বাচিত আখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, এই সরকারের বাজেট দেয়ার নৈতিক অধিকার নেই। এই বাজেটে জনগণের ওপর করের বোঝা বাড়বে। ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়বে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে গণমানুষের কোনও আগ্রহ নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বছর শেষে এই বাজেট কাটছাঁট করা হয়। এবারের বাজেট উচ্চাভিলাষী। বাজেটে সরকারের ব্যয় করার উচ্চাভিলাষ থাকলেও আয় করার সামর্থ্য কমে গেছে।’

বাজেটে আরও ঘাটতি বাড়বে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বাজেটের স্লোগান, ‘সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের।’ আসলে এটা তাদের (আওয়ামী লীগ), একমাত্র তাদের। এটা জনগণের বুঝতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না।’’

সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে প্রকল্প ব্যয় বহুগুণ বাড়িয়ে বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। করের মাধ্যমে, ভ্যাটের মাধ্যমে বা অন্যান্য মাধ্যমে এই টাকা সরকার সাধারণ মানুষের পকেট কেটে নেবে। অনির্বাচিত সরকার একটি অনির্বাচিত সংসদে এই বাজেট দিয়েছে। গণতন্ত্র না থাকায় সুশাসন নেই দেশে। সু-শাসনের অভাবে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি বাধাগ্রস্ত। ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ বন্ধ, শেয়ার বাজারে অস্থিরতা, ব্যাংকে তারল্য সংকট চলছে। সরকার দেশকে ঋণনির্ভর অর্থনীতির বৃত্তে আবদ্ধ করে রেখেছে। এই ঋণ শোধ দিতে দেশের মানুষের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে। নাগরিকদের ভুগতে হবে চরমভাবে।’

তিনি বলেন, ‘রফতানির চেয়ে আমদানি বেশি হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বেশি বেকার বাংলাদেশে। প্রবৃদ্ধির যে কথা বলা হচ্ছে, তার সত্যতা নিয়ে মারাত্বক প্রশ্ন আছে। দেশের অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা একটি শ্রেণীর কাছে জিম্মি হয়ে রয়েছে। অনির্বাচিত সরকারের নৈতিক অধিকার নেই বাজেট দেয়ার। সরকার জনগণকে বাইরে রেখে যেভাবে নির্বাচন করেছে, একইভাবে বাজেটও দিচ্ছে। যেভাবে জনগণ এই নির্বাচন গ্রহণ করেনি, তেমনি বাজেটও তারা গ্রহণ করবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রতিবছরই বাজেটে বিপুল পরিমাণ ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। ঘাটতি মেটাতে ঋণের পরিমাণও বাড়ছে। বাজেট বাস্তবায়নের হারেও দেখা যায় নিম্নমুখিতা। বেসরকারি বিনিয়োগ স্থবির হয়ে আছে। কোথাও যেন আস্থার অভাব আছে। প্রকৃতপক্ষে সরকারের ওপর কেউ আস্থা রাখতে পারছে না। কারণ সরকারই যে জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় এবং এর ফলে জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতাও নেই।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঘোষিত বাজেটের শিরোনাম দেয়া হয়েছে “সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ- সময় এখন আমাদের সময় এখন বাংলাদেশের”। বর্তমান অর্থমন্ত্রী পরিকল্পনামন্ত্রী থাকাকালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দেয়ালে লেখা দেখা গেছে “সময় এখন আমাদের : সময় এখন বাংলাদেশের”। আবার বছর খানেক আগে টিভির পর্দায় একটি পণ্যের অ্যাডভার্টাইজমেন্ট হিসেবেও শোনা গেছে “সময় এখন আমাদের”। আসলে সময় এখন তাহাদের এবং একমাত্র তাহাদেরই। সেটা বাংলাদেশের মানুষের বুঝতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না। বাজেটের শিরোনাম থেকেই উন্নয়নের 'গীত' প্রকৃষ্ট হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই তথাকথিত উন্নয়নের ‘গীত’ আর মানুষ শুনতে চায় না। কর আর দ্রব্যমূল্যের চাপে ভোক্তা সাধারণের এমনিতেই নাভিশ্বাস উঠেছে। আয়-বৈষম্য, বেকারত্ব, অর্থনৈতিক নৈরাজ্যের কারণে সামাজিক অস্থিরতার মুখোমুখি জনগণ এখন আর উন্নয়নের মিষ্টি কথায় সন্তুষ্ট হতে পারছে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ