গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর শাহবাগের শিশু পার্কটি চলতি বছরের শুরু থেকে বন্ধ। কিন্তু সেকথা জানা নেই অনেকেরই। ঈদের দিন থেকে শুরু করে গত দুদিন ধরে শত শত মানুষ পার্কে বেড়াতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। শিশুপার্কটি বন্ধ দেখে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গতকাল শুক্রবারও শিশুপার্কের সামনে শত শত মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
শাহবাগের শিশুপার্কটি যে বন্ধ সে কথা জানা ছিল না মিরপুর থেকে আসা আসিফ হোসেনের। ঈদের ছুটিতে গত বৃহস্পতিবার ছোট্ট দুই মেয়ে তাবাস্সুম ও তাসমিনকে নিয়ে ঘুরতে এসে দেখেন মূল ফটকে তালা। জানতে পারেন পার্কটি বন্ধ। শুনে মেজাজ যেমন চড়া হয়েছে, তেমনি আবদার রক্ষা করতে না পেরে মন খারাপ হয়েছে তার। আর সাত বছরের মেয়ে তো রেগে লাল হয়ে গেছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেখা গেছে, পার্কে ঘুরতে না পেরে মন খারাপ হওয়া মেয়েকে শান্ত করতে ব্যস্ত জাকির দম্পতি। পরে স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে পাশের রমনা পার্কে ঘুরতে চলে যান। ক্ষোভ প্রকাশ করে আসিফ বলেন, পার্ক যে বন্ধ এটা আমরা জানি না। আগে পত্র পত্রিকায় দিলেও ঈদের সময় এটা আবার প্রচার করলে আমাদের এই দুর্ভোগে পড়তে হতো না। সেই মিরপুর থেকে আসছি মেয়েদের নিয়ে।
শুধু আসিফ হোসেন নয়, সরেজমিন দেখা গেছে কয়েক শ মানুষ তাদের বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে শিশু পার্কে ঘুরতে এসে দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
পার্কের ভেতরে কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা বলছেন, এটা তো আগে থেকেই বন্ধ। যারা জানে না তারা এসে ফিরে যাচ্ছেন।
১৯৭৯ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে শাহবাগে শিশুপার্কটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। জিয়া শিশু পার্ক নাম থাকলেও বর্তমান সরকার জিয়া নামটি বাদ দিয়ে শুধু শিশু পার্ক করেছে। আর এটি বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে চালু হয় ১৯৮৩ সালে। এখানে মোট রাইড ছিল ১২টি। পার্কটির তত্ত¡াবধানের দায়িত্বে আছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। তবে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শিশুপার্ক আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয়েছে। সেদিন থেকেই শিশুপার্কটি বন্ধ।
সে সময়েও পার্কটিতে ঘুরতে এসে অনেকে বিপাকে পড়েছেন। কারণ বন্ধের খবরটি খুব একটা প্রচার হয়নি। পরে অবশ্য বেশ কিছু পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। পার্কের মূল গেটের দেয়ালে টানানো নোটিশে এসব পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার তারিখসহ লেখা আছে।
দেখা গেছে, পার্কের ভেতরে এখন খননযন্ত্র দিয়ে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে। পাশে ‘ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের নকশা দেখা গেছে। তাতে প্রকল্পের অংশ হিসেবে অত্যাধুনিক রাইডসহ শিশুপার্কের আধুনিকায়ন করার তথ্য রয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদকাল জানুয়ারি ২০১৮ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯। তবে এখানকার লোকজন বলছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। সেক্ষেত্রে আরও বেশ কিছুদিন পার্কটি দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকবে।
টঙ্গী থেকে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন নূর মোহাম্মদ। তারও কষ্ট আগে জানতে পারলে এত দূর থেকে আসতাম না। তিনি বলেন, ভাই এখন আর কত মানুষ দেখছেন। দুপুরের পর থেকে দেখবেন হাজার হাজার মানুষ আসবে। তাদেরও তো ফিরে যেতে হবে।
পাশে দাঁড়ানো একজন নারী বলেন, ডেমরা থেকে আইছি সবাইকে নিয়ে। বন্ধ জানলে কি আমরা আসতাম?। আইসা দেখতেছি গেট বন্ধ। এখন আর কোথাও যাওয়ার থাকলে ঘুরে যেতে হবে।
তাদের মতো অনেকেই শিশু পার্কে এসে ঘুরে যান। পরে এসব দর্শনার্থীদের কেউ কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে যান রমনা পার্কে, কেউ আবার ঢুকছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সেখানে বসেই বাচ্চাদের নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।