Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চীন-যুক্তরাষ্ট্র পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আধিপত্য ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আবারো একে অপরকে হুঁশিয়ার করেছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের অংশগ্রহণে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক সম্মেলনে মার্কিন ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানান বলেন, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের হস্তক্ষেপ কোনভাবেই মেনে নেবে না যুক্তরাষ্ট্র। অপরদিকে চীনের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ না করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেন চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই শাংগ্রি। বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের অংশগ্রহণে সিঙ্গাপুরে শুরু হওয়া ১৮তম বার্ষিক শাংরি লা সংলাপে অংশ নিয়ে আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা প্রধানদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন মার্কিন ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানান। চীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে এশিয়া অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ইন্দো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ কোনভাবেই মেনে নেবে না তার দেশ। সদ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা চীনা মুঠোফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মেধাস্বত্ব চুরির অভিযোগ করেন শানান। তিনি বলেন, ইন্দো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক শক্তির ভয় দেখানোসহ নানা কৌশলে ক্রমাগত বিভিন্ন দেশের ক্ষতি করে চলেছে চীন। এর ফলে দেশগুলো আর্থিক ও কূটনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিজদের স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করে আসছে।

তবে আমি বলতে চাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক গড়ার এখনো সুযোগ রয়েছে। এতে করে চীনেরই মঙ্গল হবে। অপরদিকে, চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো ও সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ না করতে যুক্তরাষ্ট্রকে হুশিয়ার করেন চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেঙ্ঘি। সম্মেলন শুরুর আগে শুক্রবার মার্কিন ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেন তিনি। চীনা প্রতিরক্ষা দফতরের মুখপাত্র জানান, শানানের সঙ্গে বৈঠকে বাণিজ্য ছাড়াও তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া বিভিন্ন নেতিবাচক পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেন ওয়েই ফেঙ্ঘি। চীনা পররাষ্ট্র দফতর মুখপাত্র উ কিয়ান বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য স্থিতিশীল সামরিক সম্পর্ক অত্যন্ত জরুরি। তবে আমাদের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা ছাড় দিতে রাজি নই। আমাদের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখন্ডতায় যুক্তরাষ্ট্রের কখনোই হস্তক্ষেপ করা উচিৎ নয়। একইদিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাণিজ্য ক্ষেত্রে গুন্ডামির অভিযোগ করে চীনা পররাষ্ট্র দফতর। বেইজিংয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্যাতনমূলক আচরণের শিকার শুধু চীনই নয় মেক্সিকোও।

সবশেষ মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র পাঁচ শতাংশ শুল্কারোপের যে ঘোষণা দিয়েছে এটি তারই বহিঃপ্রকাশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সিঙ্গাপুরে সাংগ্রি-লা ডায়ালগে বক্তৃতা দিতে গিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সরাসরি চীনের নাম উল্লেখ না করে এ অঞ্চলের ‘অ্যাক্টরস’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। যেসব অ্যাক্টরস এ অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা করছে, তিনি তাদের অভিযুক্ত করার পাশাপাশি চীন বিষয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে চীনের কোনো রকম অনভিপ্রেত আচরণ নীরবে মেনে নেবে না। তবে তিনি এও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে ইচ্ছুক। স্বশাসিত তাইওয়ানকে সমর্থন দেওয়ার জন্য ও বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠানো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করলেও দেশটির সঙ্গে চীনের সংঘাত বা যুদ্ধ বিপর্যয়কর হয়ে উঠতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। রোববার সিঙ্গাপুরে এশিয়ার শীর্ষ প্রতিরক্ষা সম্মেলন শাংগ্রি-লা ডায়লগে প্রতিরক্ষমন্ত্রী ওয়েই ফেন এ মন্তব্য করেছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। চীন থেকে তাইওয়ানকে কেউ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করলে চীন ‘শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে’ বলে জানিয়েছেন তিনি। স্বশাসিত তাইওয়ানকে চীনের ভূখন্ডের অন্তর্ভূক্ত বলে মনে করে বেইজিং। প্রয়োজন হলে শক্তি প্রয়োগ করে ভূখন্ডটিকে নিজেদের অধিকারে নিয়ে আসার কথাও বলেছে তারা। “চীনকে খন্ডিত করার কোনো উদ্যোগ সফল হবে না। রয়টার্স।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ