মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নির্বাচনে ভূমিধস জয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সামনে এগুনোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু এ যাত্রায় তার সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। তার মধ্যে রয়েছে মুসলিম সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক। কয়েক কোটি যুবক যুবতীর চাকরির ব্যবস্থা করা। আছে নির্বাচনী প্রচারণাকালে বিভক্তি সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ইস্যু।
দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির মতো বিষয়। আছে জাতীয় নিরাপত্তার মতো গুরুত্বর ইস্যু। পাকিস্তানের সঙ্গে যে দা-কুমড়ো সম্পর্ক তা কোনদিকে মোড় নেয় তা দেখার বিষয়। কয়েকদিন আগে পারমাণবিক শক্তিধর ওই দেশটির সঙ্গে ভারতের যুদ্ধতো বেধেই গিয়েছিল, অল্পের জন্য সেখান থেকে ফিরেছে দেশ দুটি। এখন নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তান ইস্যুতে কি পদক্ষেপ নেন তা দেখার বিষয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, ব্যবসায় নীতি নিয়ে বিদেশী কিছু প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে অভিযোগ করেছে। তার মধ্যে রয়েছে অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, মাস্টারকার্ড। তারা ব্যবসায়নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছে, এসব নীতি গ্রহণ করা হয়েছে শুধু ভারতের ভিতরে তাদের বিরোধীপক্ষকে সুবিধা দেয়ার জন্য।
এ ছাড়া কয়েক কোটি যুবক যুবতীকে কর্মসংস্থান করতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। এসব যুবক-যুবতী আগামী দু’এক বছরের মধ্যে চাকরির বাজারে আসছে বলে বলা হচ্ছে। মুম্বইয়ের কেয়ার রেটিংস-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ মদন সাবনাভিস বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনে তাৎক্ষণিকভাবে যে চ্যালেঞ্জগুলো আসবে তা হলো কর্মক্ষেত্র, কৃষিখাতের আয় ও ব্যাংকিং খাতকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলা।
তবে ঐক্য গড়ে তোলার জন্য মোদি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা অর্জন করা খুব জটিল বিষয়। নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিজেপি বিভক্তি সৃষ্টিকারী ইস্যু সামনে এনেছে। বিশেষ করে ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুরা আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠদের সন্তুষ্ট করেতে যে নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, তাতে তাদের জীবনজীবিকা বিপন্ন হতে পারে।
নরেন্দ্র মোদি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে যে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন তাতে পারমাণবিক অস্ত্রধর প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনাকেই শুধু উস্কে দিয়েছে, যদিও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বিজয়ী হওয়ার কারণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অভিনন্দন জানিয়েছেন। টুইটারে ইমরান খান বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য তার (মোদি) সঙ্গে আগামী দিনগুলোতে কাজ করতে চাই।
জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে বিজেপির রয়েছে কঠোর নীতি। তা ছাড়াও বিজেপির সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন অথবা তারা চাইবেন যে, অযোগ্যয় যেখানে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে, সেখানেই রামমন্দির নির্মাণের একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হোক। রাজধানী নয়া দিল্লিতে বিজেপির একজন কর্মী শেখর চাহাল। তিনি বলেন, আমি চাই কাশ্মীর থেকে সন্ত্রাস নিমূর্ল করুন মোদি। পাকিস্তানকে চাপে রাখুন। আমি আস্থাশীল যে, মোদি অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণ করবেন। তবে এমন উদ্যোগ নিলে তাতে ফের উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে।
বিজেপিতে এবার যারা বিজয়ী হয়েছেন তার মধ্যে এমন একজন আছেন যিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে বোমা হামলা পরিকল্পনায় জড়িত বলে অভিযোগ আছে। আসামে বিজেপি এনআরসি বা নাগরিকপঞ্জি সম্পন্ন করেছে। সমালোচনা আছে যে, এর উদ্দেশ্য সেখানে বসবাসকারী বাংলাভাষী মুসলিমদের বহিষ্কার করা। এক্ষেত্রে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসী। শুধু আসামই নয়, এনআরসি ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও সম্পন্ন করার প্রচারণা চালিয়েছে বিজেপি।
বিশেষ করে বাংলাদেশের সঙ্গে লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গে এই প্রচারণায়ই বিজেপি খুব বেশি সুবিধা পেয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। সেখানে বসবাসকারী কথিত অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীদের বের করে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিজেপি নেতারা। তবে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হাতে যেসব মুসলিম নির্যাতিত হয়েছেন, নিহত হয়েছেন তাদের নৃশংসতায়, সে বিষয়ে কোন কথা বলে নি বিজেপি। এমন কি প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও এ বিষয়ে কথা বলে নি। কারণ, তাদের ভয় ছিল, মুসলিম নির্যাতন ইস্যুতে কথা বললে তাদের গায়ে সাম্প্রদায়িকতার তকমা লেগে যেতে পারে। ফলে নানা কৌশলের কাছে এবার মার খেয়েছে বিরোধীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।