গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য কেনায় দুর্নীতি নিয়ে গেল কয়েক দিন ধরে বেশ বিতর্ক চলছে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরই মধ্যে আজ সোমবার (২০ মে) ওই প্রকল্পের আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য কেনা দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সব বিল আটকে দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে ফেসবুকে সন্তোষ প্রকাশ করছেন অনেকে। তবে দুর্নীতিতে জড়িতদের কঠোর শাস্তিও দাবি করছেন তারা।
ইতিমধ্যে বালিশ হাতে নিয়ে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছেন গণঐক্য ও নাগরিক পরিষদ নামে দুটি সংগঠন। এমন বিতর্ক ও বিক্ষোভের পর ওই কাজের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সব বিল আটকে দেয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। রোববার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বিল আটকানোর খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ফেসবুক ব্যবহারকারী ইমরান হোসাইন লিখেছেন, ‘‘মূল কথা হচ্ছে ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে মন্ত্রণালয় খুব তৎপরতা দেখায়। হাজার হাজার ঘটনা ফাঁস হচ্ছে না সেগুলোর টাকা ঠিকই সব টেবিলে টেবিলে ভাগ হয়।’’
‘‘জাতি শুধু বালিশের খবর পাইল বলিয়া আজ আপনাদের টনক নড়েছে, এভাবে খাট, সোফা, চেয়ার, টিস্যু.. কেনায় যে দুর্নীতি হয় সেগুলো জাতি কখনো কি জানতে পারিবে?’’ প্রশ্ন জাহিদুল ইসলামের।
দুর্নীতিবাজদের শাস্তির দাবি জানিয়ে মো তাওফিকুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘জনগণের সাথে মশকারা নয় তো আবার? যারা এমন বিল তৈরিতে জড়িত, তাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে দেখিয়ে দিন আপনারা সঠিক বিচারকারী।’’
‘‘শুধু বিল আটকে দিলেই চলবে না, যারা রাষ্টের সম্পদ লুটকারী তাদের বিচারের আওতায় আনে দৃষ্টান্তমূলক পানিশমেন্ট নিশ্চিত করতে হবে’’ এমন দাবি মিলন খানে।
এদিকে ফেসবুক ব্যবহারকারী মেহেদী হাসানের দাবি, ‘‘শুধু কেটলি বালিশ এগুলার বিল আটকালে হবে না প্রকল্প পরিচালক ড্রাইভার বাবুর্চি পত্রিকায় দেখলাম যে বেতন দিয়ে তাদেরকে রাখছে এত টাকা খরচ করে তাদের রাখার কোন দরকার নাই।’’
‘‘বিল আটকিবে না।কিছু দিন পর বিল ছাড়া হবে।তবে অংশীদার বাড়বে।আমাদের বাংলাদেশে এর চেয়ে ও বড় বড় ঘটনা চাপা পড়ে যায়। আর এই টা তো একটা বালিশের ঘটনা।’’ আক্ষেপের সাথে কথাগুলো লিখেছেন আবদুর রহিম।
প্রসঙ্গত গত কয়েক দিন ধরে দেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য অস্বাভাবিক দামে কেনা ও সেগুলো ফ্ল্যাটে তোলার ব্যয় নিয়ে বেশ বিতর্ক চলছে।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ওই ভবনের জন্য এক হাজার ৩২০টি বালিশ কেনা হয়েছে। এদের প্রতিটির মূল্য দেখানো হয়েছে ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর সেই প্রতিটি বালিশ নিচ থেকে ভবনের ওপরে তুলতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা!
প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, শুধু বালিশের বিষয়েই নয় প্রকল্পের আসবাবপত্র কেনার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসবাবপত্র কেনা ও ফ্ল্যাটে তোলার ব্যয়ে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।
সরকারি আসবাবপত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে অর্থ ব্যয়ের এমন অসঙ্গতির ঘটনা ঘটিয়েছেন গণপূর্ত অধিদফতরের পাবনা জেলার পূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় মূল প্রকল্প এলাকার বাইরে হচ্ছে গ্রিন সিটি আবাসন পল্লী। সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্রেটির কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য ১১টি ২০তলা ও ৮টি ১৬তলা ভবন করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে ২০তলা ৮টি ভবন ও ১৬তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এই ৯টি ভবনে তৈরি হয়েছে ৯৬৬টি ফ্ল্যাট। সেই ৯৬৬টি ফ্ল্যাটের জন্য আসবাবপত্র কিনেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে ২০তলা একটি ভবনের ১১০টি ফ্ল্যাটের আসবাবপত্র কেনা ও তা ভবনে ওঠাতে সব মিলে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৫ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ২৯২ টাকা।
ওই ১১০টি ফ্ল্যাটের জন্য কেনা টিভি, ফ্রিজ ওয়াশিং মেশিন ও মাইক্রোওয়েভ কেনা হয়েছে। সেসব আসবাবের ক্রয়মূল্য ও সেগুলোকে ফ্ল্যাটে তুলতে যে ব্যয় দেখানো হয়েছে তা রীতিমতো অস্বাভাবিক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।