Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিআইডব্লিউটিএ প্রকল্প-১ জটিলতার বেড়াজালে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

নানা দীর্ঘসূত্রতা আর আইনি জটিলতায় বিশ্বব্যাংকের সাহায্যপুষ্ট ৩ হাজার ২’শ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ‘বাংলাদেশ অভ্যন্তরিণ নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১’এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়টি এখনো অনিশ্চয়তার কবলে। প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের ঋনের পরিমান ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩২০ কোটি টাকা ব্যয় করার কথা। ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর এ সংক্রান্ত ‘উন্নয়ন প্রকল্প সারপত্র-ডিপিপি’ জাতীয় অর্থনৈতিক কমিশনের নির্বাহী কমিটি-একনেক’র চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে। কিন্তু গত দু’বছরেরও অধিক সময়ে প্রকল্পের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত নকশাসহ কাজ বাস্তবায়নে পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা গেছে। তাও নানা জটিলতায় ধীর গতিতে এগুচ্ছে। বিষয়টি এখনো পরিকল্পনা কমিশনের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়।
বিশ্ব ব্যাংকের সাথে দীর্ঘদিনের সফল আলোচনার প্রেক্ষিতে আইডিএ ফান্ডের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১’ প্রনয়ন ও বাস্তবায়নে সিদ্ধান্ত হয়। এ লক্ষে বিআইডব্লিউটিএ ৩ হাজার দু’শ কোটি টাকার একটি ডিপিপি প্রনয়ন করে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ২০১৬-এর ১০ নভেম্বর প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। ২০১৬-এর ২১ ডিসেম্বর সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে এ সংক্রান্ত অর্থনৈতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৭-এর ১৯মার্চ প্রকল্পটি নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ ও অর্থ বিভাগের মধ্যে ‘সাবসিডিয়ারী গ্রান্ট এগ্রিমেন্ট’ স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু এরপরে গত প্রায় আড়াই বছর প্রকল্পের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই।
সরকার চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ নৌ করিডর এবং বরিশাল ও নারায়নগঞ্জ-এর বর্ধিতাংশ অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বানিজ্য এবং ভারতের সাথে নৌপথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকার রুট বা নৌপথ হিসেবে শনাক্ত করেছে। দেশের প্রায় ৮০ভাগ অভ্যন্তরীণ নৌযান এসব করিডোর দিয়ে চলাচল করে। যাত্রী ও পণ্য পবিহনের ক্ষেত্রে ঢাকা, বরিশাল, নারায়নগঞ্জ ও চাঁদপুর নদী বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।
এসব বিবেচনায় এ নৌ করিডর উন্নয়ন সহ ল্যান্ডিং স্টেশন উন্নয়নে সরকার বিশেষ গুরুত্বারোপ করছে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম করিডরের আশুগঞ্জ, বরিশাল, নারায়নগঞ্জ মূল নদী ও শাখায় প্রায় ৯শ কিলোমিটার নৌপথে ‘পারফর্মেন্স বেজড কনট্রাক্ট-পিবিসি’ ড্রেজিং-এর মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষন ও সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি এ নৌ করিডরের ষাটনল, চর ভৈরবী, চাঁদপুর, মেহেন্দিগঞ্জ, স›দ্বীপ ও নলচিরাতে নৌ নিরাপত্তার জন্য ৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। ঐ নৌরুটের চাঁদপুর-শরিয়তপুর, ভোলা-লক্ষীপুর ও বরিশালের ভেদুরিয়া-লাহারহাট ফেরি ক্রসিং এলাকায় সংরক্ষণ ড্রেজিং-এর পরিকল্পনাও রয়েছে এ প্রকল্পের আওতায়। একইসাথে বরিশাল, চাঁদপুর, নরায়নগঞ্জ ও ঢাকার শ্মশানঘাটে ৪টি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল এবং ঢাকার পানগাঁও ও আশুগঞ্জ কার্গো টার্মিনালের উন্নয়ন এ প্রকল্পের আওতাভূক্ত রয়েছে। এরমধ্যে চাঁদপুর, পানগাঁও ও শ্মশানঘাটে নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ এবং বিদ্যমান বরিশাল ও নারায়নগঞ্জ টার্মিনালের স¤প্রসারণ, আধুনিকায়নসহ উন্নয়ন প্রকল্পভূক্ত রয়েছে।
একইসাথে নারায়নগঞ্জে বিআইডব্লিউটিএ’র ডেক ও ইঞ্জিন পার্সোনেল ট্রেনিং সেন্টারটির আধুনিকিকরনসহ দুটি মাল্টিপারপাস ভেসেল ও হাইড্রোগ্রাফিক অনুসন্ধানমূলক সরঞ্জামাদি সংগ্রহও এ প্রকল্পভূক্ত রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে প্রকল্প পরিচালকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে। নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রনালয়ও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ঠ আন্তরিক বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিআইডব্লিউটিএ

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ