Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যুক্তরাজ্যে প্রতি বছর অর্ধশতাধিক নার্সের আত্মহত্যা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

যুক্তরাজ্যে হতাশাজনিত কারণে প্রতিবছর গড়ে ৫৪ জন নার্স আত্মহত্যা করে। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল ৭ বছরে তিন শতাধিক নার্স আত্মহত্যা করেছে। অতিরিক্ত কাজের চাপ ও অপর্যাপ্ত বেতনসহ বিভিন্ন রকমের হতাশা থেকেই তারা এমন ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণের প্রয়োজনের কথা সামনে এসেছে। আলোচনা ও মেন্টরিংয়ের মধ্য দিয়ে এই সংকট নিরসনের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, সাত বছরে ৩০৫ জন নার্স আত্মহত্যা করেছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ৩২ জন আত্মহত্যা করেছে। ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫১। ২০১৪ সালে সর্বোচ্চ ৫৪ জন নার্স আত্মহত্যা করেছিল। সাম্প্রতিক আরেক গবেষণায় জানা গেছে, নারী নার্সদের ক্ষেত্রে আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশি থাকে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, পূর্ববর্তী রেকর্ডের সাপেক্ষে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে আত্মহত্যার পরিমাণ ২৩ শতাংশ বেশি। দ্য মিরর বলছে, কনজারভেটিভ পার্টি জাতীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের বাজেট কমানোর কারণে তার গভীর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে নার্সদের ওপর।
রয়্যাল কলেজ অব নার্সিংও (আরসিএন) মনে করছে কাজের সময় সহায়তার পরিবেশ যথেষ্ট ভালো নয়। এছাড়া দেশজুড়ে ৪০ হাজার কর্মীর স্বল্পতা থাকায় তাদেরকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। তারা মনে করছে, নার্সদের আত্মহত্যা প্রতিরোধে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ দরকার। আরসিএন প্রধান ডেম ডোনা কিনেইর বলেন, ‘নার্সরা সেখানে বিষন্নয়তায় ভোগে, তাদের পর্যাপ্ত সহকর্মী নেই ফলে অনেক সময় ধরে কাজ করতে হয়। আমাদের কর্মীরা বারবারই বলে আসছে যে তাদের ঊর্ধ্বতনরা তাদের এই মানসিক পরিস্থিতি এড়িয়ে যাচ্ছে কিংবা গুরুত্ব দিতে চাইছে না। তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সবগুলো সংস্থার উচিত বিষয়টাতে গুরুত্ব দেওয়া। পুরুষদের চেয়ে কেন নারী নার্সরা বেশি আত্মহত্যা করছে তা খুঁজে বের করা জরুরি।’
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. আলিস কোল বলেন, আত্মহত্যার প্রধানতম কারণ নার্সরা কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকিপ‚র্ণ কাজে জড়িত থাকায় সুনির্দিষ্ট করে বেশি চাপ বেশি অনুভব করেন। তীব্র হতাশার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তাদের। নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্য, হতাশা ও আত্মহত্যা নিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলতে চায় না। ডা. আলিস আরও বলেন, বাড়ির কাজেও নারী নার্সদের বড় ভ‚মিকা পালন করতে হয়। ফলে পরিবার ও রোগীদের যতœ নিতে গিয়ে নিজেদের খেয়াল রাখা হয় না। অনবরত এই চাপে তারা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যায়। এছাড়া আর্থিক দুশ্চিন্ত ও ঋণের বোঝাও অনেক সময় আত্মহত্যার সিদ্ধান্তে প্ররোচিত করে তাদের।’
ড. আলিস পরামর্শ দিয়েছেন, হাসপাতালের চাপ সামলানোর পাশাপাশি নার্সিং শিক্ষার্থীদের শেখানো উচিত যে কীভাবে আবেগ নিয়ন্ত্রণে রেখে রোগীকে সেবা দিতে হবে। একইসঙ্গে নিজের যতœ নেওয়ার গুরুত্ব বোঝাতে হবে তাদের। সব নার্সদেরই একটা সুরক্ষা পরিকল্পনার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে হবে।’ সূত্র: দ্য মিরর, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ