শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
‘‘বুনোবৃষ্টির প্ররোচনা’’-এ শৃঙ্গার রসের তেমন প্রাবল্য নেই, যা আছে গল্পের নায়ক মাহমুদের চিন্তায়; তবে তার বর্ণনাও শিল্পিত। চারিদিকে অঝরে বৃষ্টি হ”েছ। মাহমুদের স্ত্রী মরিয়ম কলেজে গেছে। বাড়িতে আছে যুবতী কাজের মেয়ে জমিলা। জমিলা বৃষ্টির মধ্যে সিক্তবসনে কাপড়কাচার মধ্যে মাহমুদ তাকে লক্ষ্য করে; নিবিড় ভাবে সে পর্যবেক্ষণ করে জমিলার দেহসৌষ্ঠব। তার মনে সম্ভোগ রসের উদয় হলেও তা কেটে যায় ছায়া মাহমুদ রূপী বিবেকের কথায়। জমিলা এতদিন ধরে যে অমানুষিক পরিশ্রম করেছে তাতে কি সে তার যথার্থ মূল্য পেয়েছে? মাহমুদ তার সদুত্তর দিতে পারে না। এ গল্পে শৃঙ্গার রসের সঙ্গে যাদুবাস্তবতা যুক্ত হয়েছে, আছে ফ্রয়েডীয় মনোবৈকল্যও।
আল মাহমুদের গল্প সম্পর্কে প্রখ্যাত কথাশিল্পী আবু রুশদ মন্তব্য করেছেন,‘‘বাংলাদেশে আল মাহমুদের সমতুল্য অন্য কোনো কবির হাত থেকে এত কয়টা ভালো গল্প বেড়িয়েছে বলে আমার জানা নেই। এটা তাঁর সাহিত্যিক গুরুত্বে ঈর্ষণীয় মাত্রা যোগ করবে বলে আমার বিশ্বাস।’’ পরিশেষে বলা যায়, আল মাহমুদের গল্পের মুল আকর্ষণ পাঠককে গল্পের ভিতর টেনে নিয়ে যাওয়ার অসাধারণ ক্ষমতা। এই ক্ষমতা যতটা কাহিনীর কারণে তার চেয়ে বেশি ভাষার কারুকাজ ও রূপক- উপমার ব্যঞ্জনায়। জীবনের পরিমÐল রচনায় অভ্রান্ত কৌশল যৌন-নৈপুণ্য ও তা অবলোকন করে কামনাকে অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কযুক্ত করে তুলেছে লেখকের কৌশলী হাত। শৃঙ্গার রস বা নর-নারীর আদিম ঈন্দ্রিয় অনুভুতির শৈল্পিক উপস্থাপনা কৌশল এবং পরিবেশ পরিস্থিতির এমন বাস্তব বর্ণনা বাংলা সাহিত্যের খুব কম গল্পেই আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।