Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জামালের নায়ক হারিয়ে যাওয়া নাসির

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

সামনে বিশ্বকাপ। দল নির্বাচন নিয়ে দিন-রাত এক করে চলেছেন নির্বাচকেরা। এর মাঝেই গতকাল দুপুরে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের কাছে এক সাংবাদিক জানতে চাইলেন, ‘নাসির হোসেন কি সত্যি হারিয়ে গেল?’ গত বছর হাঁটুর চোটে পড়ে লম্বা সময় থাকলেন মাঠের বাইরে। গত জানুয়ারিতে বিপিএলে ফেরাটা ভালো হয়নি। এই প্রিমিয়ার লিগেও নাসিরের পারফরম্যান্স বলার মতো নেই। সময়ের স্রোতে তবে কি বাংলাদেশের ক্রিকেটে আরেকটি নক্ষত্র পতন? প্রশ্নটা জোরালো হওয়ার আগেই জেগে উঠলেন নাসির। শক্তিশালী আবাহনীর বিপক্ষে হলেন ম্যাচের নায়ক।

আগে বল হাতে নিজের অফ স্পিনে আবাহনীকে ধসিয়ে দিলেন। সেখান থেকে মোসাদ্দেক হোসেনের দারুণ সেঞ্চুরিতে লড়াইয়ে ফেরে আবাহনী। সেই রান তাড়ায় শেখ জামালের বিপর্যয় পড়লে ব্যাট হাতেও প্রতিরোধ গড়েন নাসির। ব্যাটে বলে তার এমন জ্বলে উঠার দিনে রোমাঞ্চকর জয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত হয়েছে শেখ জামালের।

বিকেএসপিতে একাদশ রাউন্ডের ম্যাচ ৭ বল হাতে রেখে শেখ জামাল জিতেছে ৩ উইকেটে। এই জয়ে ১১ ম্যাচের ছয়টি জিতে ১২ পয়েন্ট শেখ জামালের। নিজেদের শেষ ম্যাচে মোহামেডান আর গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্স জিতলে তাদেরও হবে ১২ পয়েন্ট। কিন্তু হেড-টু-হেডে এগিয়ে থাকায় আর কোন সমীকরণের দরকার হচ্ছে না শেখ জামালের। সমান ম্যাচে টানা দ্বিতীয় ও সব মিলিয়ে তৃতীয় হারের স্বাদ পেল আবাহনী। ২০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে প্রাথমিক পর্ব শেষ করা লিজেন্ডন্স অব রূপগঞ্জের চেয়ে ৪ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়লো তারা।

আগের দিনের বৃষ্টিতে উইকেটে ছিল ভেজা ভাব, আবহাওয়াও ছিল মেঘলা। এমন পরিস্থিতিতে টস জিতে আবাহনীকে ব্যাট করতে দিয়েই চেপে ধরে শেখ জামাল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বল হাতে নেওয়া নাসির শুরুতেই ফেরান সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত আর জাহিদ জাভেদকে। আরেকদিনে জহুরুলকে ছেঁটে ফেলেন সালাউদ্দিন শাকিল। ১৪ রানেই তাই ৪ উইকেট খুইয়ে বসে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এরপরও মোসাদ্দেকের ওই প্রতিরোধে লড়াইয়ের পূঁজি পেয়েছিল তারা। কিন্তু বেলা বাড়তে ব্যাট করার জন্য ভালো হতে থাকা উইকেটে ম্যাচ ঠিকই বের করে নেয় শেখ জামাল।

২১২ রানের লক্ষ্যে নেমে ১২ রানেই ২ উইকেট হারায় জামাল। অমিতকে নিয়ে ইমতিয়াজ হোসেন ৬৯ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন। কিন্তু দলের ৮১ রানে ইমতিয়াজ ফেরার পর তড়িঘড়ি ফিরে যান নুরুল হাসান সোহান। এরপরই অমিতকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো শুরু নাসিরের। দুজনের জুটিতে ৬০ রানের বেশিরভাগই আনেন নাসির। সর্বোচ্চ ৫৬ করে ফেরেন অমিত। ৫৬ বলে ৪৫ করে আউট হন নাসির। তখন আবার জেগেছিল শঙ্কা। কিন্তু ৪৯ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে খেলা শেষ করে দিয়ে আসেন তানবীর হায়দার। অলরাউন্ড নৈপুণ্যের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন নাসির।

ফতুল্লায় রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে প্রাইম দোলেশ্বরকে হারিয়েও রেলিগেশন শঙ্কায় পড়ে আছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে তাইবুর রহমানের অপরাজিত ৭০,মার্শাল আইয়ুবের ৫০ ও ফরহাদ হোসেনের ৪০ রানে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ২৫০ রানের সংগ্রহ পায় দোলেশ্বর। মাহমুদুল হাসান অপরাজিত ছিলেন ৩৯ রানে। লক্ষ্য তাড়ায় টপ অর্ডার ফজলে মাহমুদ (৭৪), ওপেনার মিজানুর রহমান (৪২) ও অধিনায়ক শরিফউল্লাহর (৪১) ব্যাটে মাত্র এক উইকেট আর এক বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে ব্রাদার্স।

১১ ম্যাচে দলটির ঝুলিতে মাত্র ৬ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে তাদের চেয়ে দুই পয়েন্ট কমে ১২ দলের মধ্যে টেবিলের একেবারে তলানিতে উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাব। এক পয়েন্ট কম নিয়ে ১১ নম্বরে বিকেএসপি। আর এক ম্যাচ কম খেলেও সমান পয়েন্ট নিয়ে নবম খেলাঘর। নিজেদের শেষ ম্যাচে খেলাঘর না জিতলেও ব্রাদার্সের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে জয় পাওয়ায় তাদের রেশিগেশন লিগ খেলতে হবে না।

তবে এদিন সকলের দৃষ্টিই ছিল মিরপুরে। যেখানে লিগ টেবিলে শীর্ষস্থান ধরে রাখতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের জেতাটা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তাদের হয়ে চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরা তাসকিন আহমেদের জন্য ম্যাচটা ছিল আরও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপ দলে থাকতে মরিয়া তাসকিন অবশ্য তেমন ভাল করতে পারেননি, কিন্তু ম্যাচ ফিটনেস দেখিয়ে নিজের দাবি জানিয়েছেন ঠিকই।

শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একাদশ ও শেষ রাউন্ডের ম্যাচে উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবকে রূপগঞ্জ হারিয়েছে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। আগে ব্যাট করে নাবিল সামাদ, ঋষি ধাওয়ানদের তোপে মাত্র ১৮০ রান করতে পারে উত্তরা। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানে রান পাওয়ার দিনে ওই লক্ষ্য ৫৬ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে জিতেছে রূপগঞ্জ।

এদিন পাঁচ ওভার বল করেন তাসকিন, তাতে ৩৬ রান দিয়ে থেকেছেন উইকেট শূন্য। প্রথম স্পেলে বল করেছিলেন ৪ ওভার। দ্বিতীয় স্পেলে এক ওভার। খরুচে হওয়ায় আর বল পাননি। চোট সেরে মাত্রই ফেরায় দেখা গেছে জড়তা, গতি ছিল কম। লাইনলেন্থও ছিল না ধারালো। তবে ফিটনেসের ঘাটতি টের পাওয়া যায়নি।
উত্তরা-রূপগঞ্জ, মিরপুর
উত্তরা : ৫০ ওভারে ১৮০/৮ (ইমন ৫৫, শানাজ ২৭, মিনহাজুল ৩৭, শাকির ৩৩; শহিদ ১/৩১, ধাওয়ান ২/৪৫, নাবিল ৩/২৯, তাসকিন ০/৩৬, মুমিনুল ০/১৮, মুক্তার ০/১৬)।
রূপগঞ্জ : ৪০.৪ ওভারে ১৮১/১ (মারুফ ৬২*, মোহাম্মদ নাঈম ৬৩, মুমিনুল ৪৭*; মোহাইমিনুল ১/৩৪, সাজ্জাদ ০/২৭, ইমন ০/১৩, মিনহাজ ০/৪)। ফল : রূপগঞ্জ ৯ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : নাবিল সামাদ।

দোলেশ্বর-ব্রাদার্স, বিকেএসপি
প্রাইম দোলেশ্বর : ৫০ ওভারে ২৫০/৫ (ইমরান ২১, ফরহাদ ৪০, মার্শাল ৫০, তাইবুর ৭০*, মাহমুদুল ৩৯*; বিশ্বনাথ ২/৪৫, শাহজাদা ১/৫০, শরিফউল্লাহ ১/৪০, ইয়াসির ১/৩১)।
ব্রাদার্স ইউনিয়ন : ৪৯.৫ ওভারে ২৫১/৯ (মিজানুর ৪২, মাহমুদ ৭৪, শরিফউল্লাহ ৪১, শাহজাদা ২৯; সানি ৪/৬২, রেজা ১/৫২, আবু জায়েদ ১/৩৭, এনামুল জুনি. ৩/৪৬)।
ফল : ব্রাদার্স ১ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : ফজলে মাহমুদ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নাসির

১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ