Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্রাইস্টচার্চের সন্দেহভাজন হামলাকারীর মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বন্দুক হামলা চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যায় সন্দেহভাজন ব্রেন্টন ট্যারান্টের মানসিক স্বাস্থ্য পরিক্ষার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নিউ জিল্যন্ডের উচ্চ আদালতের বিচারক ক্যামেরন মান্দের বলেছেন, বিশেষজ্ঞরা তাকে দেখে বিচারের উপযুক্ত কিনা তা নির্ধারণ করবেন। ট্যারান্টের বিরুদ্ধে হত্যার ৫০টি ও হত্যাচেষ্টার ৩৯টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত ১৫ মার্চ (শুক্রবার) ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামের সন্দেহভাজন হামলাকারীর লক্ষ্যবস্তু হয় নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদ। শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস এভিনিউয়ের আল ন‚র মসজিদসহ লিনউডের আরেকটি মসজিদে তার তাÐবের বলি হয় অর্ধশত মানুষ। ব্রেন্টন তার হামলাটি ফেসবুকে লাইভ স্ট্রিমিং করে। স্বয়ংক্রিয় বন্দুক হাতে হামলাকারীর এগিয়ে যাওয়া,মসজিদের প্রবেশকক্ষ থেকে বিভিন্ন কক্ষে নির্বিচারি গুলি বর্ষণ আর রক্তাক্ত নৃশংস পরিস্থিতির ভিডিও মুহ‚র্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। ব্রেন্টনের মধ্যে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী প্রবণতাও পাওয়া গেছে।
শুক্রবার কারাগার থেকে ভিডিওলিঙ্কের মাধ্যমে আদালতের শুনানিতে হাজির করা হয় ট্যারান্টকে। আদালতে সেসময় হামলার শিকার হওয়া অনেকের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। বিবিসি জানিয়েছে, আদালতের সংক্ষিপ্ত শুনানিতে ট্যারান্টকে নিশ্চুপ হয়ে শুনতে দেখা গেছে। ওই সময়ে তার কাছ থেকে মন্তব্য শোনা যায়নি। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে সন্দেহভাজন হামলাকারী বিচারক ও আইনজীবীদের দেখতে পারছিল। তবে আদালতে উপস্থিত সাধারণ মানুষদের দিকে ক্যামেরা ঘোরানো হয়নি। আদালত তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেয়। আগামী ১৪ জুন পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আল ন‚র মসজিদে হামলায় বাবাকে হারিয়েছেন ওমর নবি। শুক্রবার আদালতের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তাকে মেরে ফেলতে চাই না। আমরা চাই সে এখানে দুর্ভোগ পোহাক। আমরা চাই তার শাস্তি হোক। আপনারা জানেন ৫০ জনকে হত্যা ও বহু মানুষকে আহত করার শাস্তি কেমন হতে পারে।
লিনউডের মসজিদে হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তোফাজ্জল আলম। তিনিও আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি এমন ৫০ জন বন্ধুকে হারিয়েছে যাদের সঙ্গে প্রতি শুক্রবারই দেখা হতো। গুলি চালানোর সময় তাকে দেখতে পাইনি। আমি দেখতে চাই ৫০ জনকে হত্যার পর তার কেমন লেগেছে। তা দেখতেই আমি আদালতে এসেছি।
ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদের হামলার পরই সন্দেহভাজন হিসেবে ট্যারান্টকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রথমে গাড়ি চালিয়ে সে আল ন‚র মসজিদে যায়। কাছেই গাড়ি পার্ক করেই মসজিদের প্রবেশ পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে গুলি করা শুরু করে। মসজিদের ভিতরে প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে সে নারী, শিশু আর পুরুষদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। মাথায় লাগানো ক্যামেরা দিয়ে হামলার ঘটনা সরাসরি স¤প্রচার করে সে।
আল ন‚রে হামলার পর গাড়ি চালিয়ে সে পাঁচ কিলোমিটার দ‚রে লিনউড মসজিদে যায়। এআর-১৫সহ আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রে সজ্জিত হামলাকারী ওই মসজিদেও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। ধারণা করা হচ্ছে অস্ত্রের সক্ষমতা বাড়াতে ম্যাগাজিনে পরিবর্তন এনেছিল সে।
আটকের পর থেকেই অকল্যান্ড কারাগারে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে তাকে। নিউ জিল্যান্ডের সবচেয়ে কঠিন কারাগার বিবেচনা করা হয় পারেপরেমো শহরের এই কারাগারকে।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রাইস্টচার্চ

৬ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ