পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমিতো বের হতে পারছি না। পঙ্গু মানুষ। আমি মনে হয় আর বাঁচব না। সবাই অফিস থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। আমি কোনো উপায় না পেয়ে অফিসের চেয়ারে বসে আছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করিস। তোরা ভালো থাকিস।
জীবনের শেষ সময়ে ছোট ভাই মেহফুজ জুবায়ের পলাশের সঙ্গে ফোনে কথাগুলো বলেন মঞ্জুর হাসান (৫০)। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাÐের সময় দুপুর আড়াইটার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে শেষ কথা হয় মঞ্জুর হাসানের। তার বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া পূর্বপাড়া গ্রামে। তিনি মৃত মুনছুর রহমানের ছেলে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঞ্জুর হাসান ছাত্রজীবন থেকে ঢাকায় থাকতেন। ছাত্রজীবন শেষে চাকরি শুরু করেন। এরপর সংসার। এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ঢাকার ইব্রাহিমপুরে বসবাস করতেন। কাশেম গ্রæপ অব ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে চাকুরি করতেন। ঘটনার দিন মঞ্জুর হাসান ভবনের ২১তলায় কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে অবস্থায় করছিলেন। আগুন থেকে বাঁচতে সবাই যখন ছোটাছুটি করছিলেন তিনি কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে অফিসের চেয়ারে বসেছিলেন। আর জীবনের শেষ সময়টুকু স্বজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। কিন্তু এক সময় ফোনে কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। বার বার রিং হলেও অপর প্রান্ত থেকে আর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গতকাল শুক্রবার সকালে নিহতের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় গ্রামের লোকজন মঞ্জুর হাসানের বিষয় নিয়ে কথা বলছিলেন। নিহতের পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকেন। তবে গত কয়েকদিন থেকে নিহতের ছোট ভাই শিমুল বাড়িতে আছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাইয়ের মৃত্যুর কথা জানতে পান তিনি। বাড়িতে কেউ নাই। শুধু গ্রামের লোকজন মঞ্জুরের লাশ দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন।
নিহতের ছোট ভাই শিমুল বলেন, চাকরিরত অবস্থায় ২০০০ সালে অফিসের সামনের রাস্তায় ভাই এক সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যান। এরপর থেকে ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারতেন না। এক প্রকার পঙ্গু জীবন যাপন করতেন। কিন্তু তারপরও কোম্পানি ভাইকে চাকরি থেকে বাদ দেয়নি। অফিসে যখন আগুন লাগে সবাই বাঁচার জন্য ছোটাছুটি করছিল। কিন্তু ভাই পঙ্গু হওয়ায় কিছু করার উপায় ছিল না। অফিসে বসেই ফোনে আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তার শেষ কথা ছিল আমি তো বের হতে পারছি না, এখানে হয়ত আমার শেষ সময় যাবে। এক সময় তার ফোনের সংযোগ কেটে যায়। এরপর ফোনে রিং হলেও রিসিভ হয়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শেষ কথা হয় স্বজনদের সঙ্গে। উদ্ধার কর্মীরা তার লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে সেখানে তাকে শনাক্ত করা হয়। নিহতের লাশনওগাঁয় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
নিহতের চাচাতো ভাই সাবেক সেনা সদস্য ফজলুর রহমান বলেন, যখন ঢাকায় থাকতাম নিয়মিত তার সঙ্গে দেখা করতাম। তার অফিসে যেতাম। তাকে ধরে ওঠা-বসাতে করাতে হতো। যখন আগুন লাগার সংবাদ পেলাম তখনই ধারণা করেছি হয়ত সে আর বের হতে পারবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।