Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনে বড় জালিয়াতির অভিযোগ থাকসিন সিনাওয়াত্রার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৯, ৬:৩৭ পিএম

থাইল্যান্ডে রোববার অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বড় আকারে অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। এসব অনিয়মের প্রমাণ আছে জানিয়ে সোমবার বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, এমন বৈষম্যে তিনি উদ্বিগ্ন।
এই নির্বাচনে থাকসিন সিনাওয়াত্রার প্রতি অনুগত পুয়ে থাই পার্টি বিজয়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু না, পপুলার ভোটের বেশির ভাগ ভোট পায় সেনাপন্থি পালাং প্রচা রাথ পার্টি (পিপিআরপি)। পুয়ে থাই পার্টি পার্লামেন্টে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, এ দলটি মোটের ওপর বেশি ভোট পায় নি। ফলে এখন কোন দল যে সরকার গঠন করতে সক্ষম হবে তা স্পষ্ট নয়। এ অবস্থায় ভোটের ফল প্রকাশে বেশ বিলম্ব করা হয়। এতে অনিয়মের অভিযোগ আসতে থাকে। কর্মকর্তারা বলেন, কিছু ভুলের কারণে ডাটা প্রকাশ করতে সমস্যা হচ্ছে। সোমবার এই ফল ঘোষণার কথা থাকলেও এখন বলা হচ্ছে, সরকারি ফল ঘোষণা হবে মে মাসে। এর ফলে সন্দেহ আরো ঘনীভূত হচ্ছে।
ক্ষমতা হারিয়ে নির্বাসনে থাকলেও এখনও থাইল্যান্ডে ব্যাপক প্রভাবশালী রাজনীতিক থাকসিন সিনাওয়াত্রা। তিনি হংকং থেকে বিবিসি থাই সংস্করণকে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছেন নির্বাচন নিয়ে। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে প্রচুর অনিয়ম হয়েছে। তার ভাষায়, এসব অনিয়মের মাধ্যমে দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পশ্চাতে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এটা দেখে আমি উদ্বিগ্ন। অনিয়মের বিষয়ে থাকসিন সিনাওয়াত্রা একটি উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পেটচাবুন প্রদেশের দৃশ্যটাই দেখুন। সেখানকার ব্যালটবাক্স নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাতে স্থানীয় একটি অফিসে ব্যালট পেপার ভরা হয়। তিনি আরো বলেন, অনেক সংসদীয় আসনে মোট যে পরিমাণ মানুষ ভোট দিয়েছেন তার চেয়ে ব্যালট পেপার অনেক বেশি। পিপিআরপি’র ভোট লাফ দিয়ে বেড়ে গেছে। তারা তৃতীয় অবস্থান থেকে প্রথম অবস্থানে চলে এসেছে। থাকসিন বলেন, অনেক স্থানে পিপিআরপি পরাজিত হওয়ার অবস্থা থেকে বিজয়ী হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আমার দেশ তার বিশ্বাসযোগ্যতাকে ধ্বংস করছে বলে আমি দেখতে পাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে রক্তপাতহীন এক সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। তারপর দেশে ফিরেছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ গঠন করা হয়। ফলে তিনি স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান। পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে পরবর্তীতে নির্বাচনে তার ছোটবোন ইংল্যাক সিনাওয়াত্রা দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তাকেও ২০১৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এরপর দীর্ঘ ৫ বছর পরে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় নির্বাচন।
ব্যাংকক থেকে বিবিসির সাংবাদিক জোনাথন হেড বলছেন, সামরিক অভ্যুত্থানের ৫ বছর পরও সামরিক সরকার ও তাদের রক্ষণশীল সমর্থকরা থাই রাজনীতি থেকে থাকসিনকে সরানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণায় তার নাম ও ছবির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। যদি তার সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন তথ্য পাওয়া যায় তাহলে সেই দলকে বিলুপ্ত করার ঝুঁকি ছিল।
থাকসিন সিনাওয়াত্রার অনেক সমর্থকের সন্দেহ নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে। এক্ষেত্রে থাকসিন যে অভিযোগ করেছেন তারা সে বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে থাইল্যান্ডের নির্বাচনে সব সময়ই কিছু নিয়ম লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। তবে থাকসিন যে অভিযোগ এনেছেন তাতে নির্বাচনের সার্বিক ফল পাল্টে যাবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে দৃশ্যত তেমনটা মনে হয় না। এক্ষেত্রে হাত রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: থাইল্যান্ড


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ