পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলায় নিউজিল্যান্ডকে সতর্ক করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তায়্যিব এরদোগান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের গ্যালিপোলিসে অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল জোটবাহিনী। তিনি সে প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন সামনে। মসজিদে হামলার বিষয়ে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়ে বললেন, যারাই মুসলিম বিরোধিতায় তুরস্কে প্রবেশ করবে তাকেই কফিনে করে ফেরত যেতে হবে, যেমনটা তাদের পূর্বপুরুষদের ক্ষেত্রে ঘটেছিল। হুরিয়েত নিউজ সাইটকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অস্ট্রেলিয়ান ও নিউজিল্যান্ডসহ তাদের মিত্ররা গালিপোলিস উপদ্বীপে আগ্রাসন চালিয়েছিল। এরদোগান বলেন, তুরস্কের ওপর সম্ভাব্য হামলার অংশ হিসেবে নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলা হয়েছে। তবে কেউ যদি তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে হামলার চেষ্টা করে তাহলে হামলাকারীদের কফিন ফেরত পাঠানো হবে। নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলার বিষয়ে এরদোগান দেশটির সরকারের প্রতি সিরিজ তদন্তের আহŸান জানান। সমাবেশে এরদোগান বলেন, “আমরা এখানে হাজার বছর ধরে আছি এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকব ইনশাল্লাহ। তোমরা ইস্তাম্বুলকে কনস্টান্টিনোপলে পরিণত করতে পারবে না। তোমাদের দাদারাও এসেছিল এবং লাশ হয়ে ফেরত গেছে। কোনো সন্দেহে নেই তোমাদেরকেও আমরা লাশ বানিয়ে ফেরত পাঠাব।” গত শুক্রবারের হত্যাকাÐ সম্পর্কে এরদোগান নিউজিল্যান্ড সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়ে বলেন, “আমরা আশা করি নিউজিল্যান্ড সরকার বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নেবে। তারা যেন পশ্চিমা দেশগুলোর মতো হাল্কাভাবে না নেয়।” গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে এরদোগান বলেন, নিউজিল্যান্ডের ঘাতক ২০১৬ সালে দুইবার তুরস্ক সফর করেছে। প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, মুসলিমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে ওরা আমাদের বিরুদ্ধে এ ধরণের হামলা চালাতে পারবে না। কিন্তু যদি মুসলিমরা সংগঠিত না হয়, তারা এমন হামলা চালাতে পারবে। কাজেই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা একে অন্যের দেখাশোনা করবো। এই ভাষণের সময় প্রেসিডেন্ট এরদোগান তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কামাল কিলিচডারুগলোর সমালোচনা করেন। বিবিসির মার্ক লোয়েন বলছেন, তুরস্কের গণমাধ্যম, যারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারপন্থী, তারা এই ঘটনায় প্রেসিডেন্ট এরদোগানকেই সমর্থন করছে। তারা দেখাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট এরদোগান ইসলামোফোবিয়ার জোয়ার থেকে মুসলিমদের রক্ষার চেষ্টা করছেন। তুরস্কের একটি পত্রিকার শিরোনাম এরকম: ‘আমরা নিউজিল্যান্ডে সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছেন যারা, তাদের পাশে আছি, পশ্চিমা দুনিয়া নীরব।’ প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার জুমা নামাজের সময় ব্রেনটন টেরেন্ট নামে এক উগ্র খ্রিস্টান সন্ত্রাসী ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে গুলি চালিয়ে অন্তত ৫০ মুসল্লিকে হত্যা করে। এর আগে ওই সন্ত্রাসী একটি মেনিফেস্টো পাঠায় যাতে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরকে খ্রিস্টানদের সম্পত্তি বলে উল্লেখ করে তা তুরস্কের হাত থেকে উদ্ধারের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। এছাড়া, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানকে ‘যুদ্ধবাজ’ নেতা বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে এতে। তুরস্ককে খ্রিস্টানদের সবচেয়ে পুরনো শত্রæ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই মেনিফেস্টোতে। এতে ইস্তাম্বুলকে লক্ষ্য করে বলা হয়- “আমরা কনস্টান্টিনোপলে আসছি এবং শহরের প্রতিটি মসজিদ ও মিনার ধ্বংস করব। হাজি সোফিয়াকে মিনার থেকে মুক্ত করা হবে এবং কনস্টান্টিনোপল আবারো খ্রিস্টানদের দখলে আসবে।” ১৯১৫ সালে তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কানাক্কালে প্রদেশে অটোমান সেনাদের হাতে ব্রিটিশ সেনাদের পরাজয়ের বার্ষিকী স্মরণে আয়োজিত এক সমাবেশে সোমবার বক্তব্য দেন এরদোগান। ১৯১৫ সালের ওই যুদ্ধে ব্রিটেনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সেনারাও অংশ নেয়। নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।