Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

‘আবু সিনা ছাত্রাবাস’ রক্ষার দাবিতে সিলেটে মানববন্ধন

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৯, ৫:২৬ পিএম

সিলেটে ঐতিহাসিক স্থাপনা ভেঙে হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগের প্রতিবাদে হেরিটেজ ও পরিবেশবাদী সংস্থাগুলো ২দিনের কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন ও আবু সিনা ছাত্রাবাস পরিদর্শন করা হয়। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কর্মসূচির প্রথম দিন সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধন শেষে আন্দোলনকারীরা আবু সিনা ছাত্রাবাস পরিদর্শন করে।
আগামীকাল বুধবার হেরিটেজ নিয়ে কর্মরত সংগঠন সেভ দ্য হেরিটেজ এন্ড এনভায়রনমেন্ট এর উদ্যোগে বিকাল ৪টায় আবু সিনা ছাত্রাবাস প্রাঙ্গণে ‘প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি’ অনুষ্ঠিত হবে।
সিলেটের ঐতিহ্য রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ নাগরিক সমাজ ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটর উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, কালের সাক্ষী ‘আবু সিনা ছাত্রাবাস’ ঐতিহাসিক ভবনটিকে সংস্কার করে সুরক্ষা করতে হবে। অনুপম স্থাপত্যশৈলীর ঐতিহাসিক সে ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার আয়োজন চূড়ান্ত। বাংলাদেশ পুরাকীর্তি আইন ১৯৬৮ অনুযায়ী এটি ভাঙ্গা সম্পূর্ণ বেআইনি।
এ ভবনে সিলেটের প্রথম সংবাদপত্র ‘শ্রীহট্ট প্রকাশ’ প্রকাশিত হয় ১৮৭৬ সালে। পরে ১৯৩৬ সালে এ বাড়িতে মানুষের চিকিৎসাসেবার জন্য ছোট পরিসরে হাসপাতাল চালু করা হয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় এ হাসপাতালের বর্ধিতাংশে বার্মা-ইংরেজ সৈনিকদের চিকিৎসা দানের লক্ষ্যে মিলিটারি হাসপাতাল চালু করা হয়।
পরবর্তীতে ১৯৪৮ সালে এ ভবনে মেডিকেল শিক্ষাদানের জন্য নির্মাণ করা হয় ‘লাইসেন্সড মেডিকেল ফ্যাকাল্টি’ (এলএমএফ)। ১৯৬২ সালে এটিকে মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত করা হয়।
১৯৪৮ সালে এ ভবনের দেয়াল নির্মাণ করা হয়। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাড়িটি রক্ষা পায়নি। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৮-৭৯ সালে হাসপাতালটি কাজলহাওরে পরিপূর্ণভাবে স্থানান্তরিত হলে ভবনটি ‘আবু সিনা ছাত্রাবাস’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।
বাপা, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর করিম কিম এর পরিচালনায় মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আজিজ আহমদ সেলিম, সিলেট সাম্যবাদী দলের সেক্রেটারী কমরেড ধিরেন সিংহ, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক তপন মিত্র, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, তথ্যচিত্র নির্মাতা নিরঞ্জন দে, আব্দুল হাই আল-হাদি, টিআইবি’র সহকারী ব্যবস্থাপক আশফাকুন নুর, স্থপতি শুভজিৎ চৌধুরী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, সিলেট নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় আসাম প্যাটার্নের ‘ইউ’ আকৃতির একটি একতলা বিশাল ভবন। দেখলেই মনে হয় পুরনো জমিদার বাড়ি। প্রাচীন এই ভবনটি এই প্রজন্মের নগরবাসীর কাছে ‘আবু সিনা ছাত্রাবাস’ নামে পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধসহ আর বহু ইতিহাসের সাক্ষী পুরনো এই ভবনটি সম্প্রতি ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই ভবন ভেঙ্গে নির্মাণ করা হচ্ছে আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট সিলেট জেলা হাসপাতাল। ইতিমধ্যে ভবনের একাংশ ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এ নিয়ে সিলেটের সচেতন মানুষদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দাবি উঠেছে ভবনটি না ভেঙ্গে সেখানে মিউজিয়াম তৈরি করার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানববন্ধন

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ