পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাসদের তাত্ত্বিক গুরু সিরাজুল আলম খানই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ ছিলেন বলে দাবি করেছেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব।
২ মার্চ ‘স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় এই দাবি করেন তিনি।
বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলন যখন তুঙ্গে, সেই সময় ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা প্রথম উত্তোলন করেছিলেন তৎকালীন ডাকসুর ভিপি রব।
তিনি বলেন, “পতাকা তৈরির উদ্যোক্তা, ২ মার্চ পতকা উত্তোলনের উদ্যোক্তা, ৩ মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার বা স্বাধীনতার ঘোষণার উদ্যোক্তা, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বঙ্গবন্ধু উপাধি যে মানুষটির পরিকল্পনা করেছেন তার নাম হচ্ছে সিরাজুল আলম খান। সেই মানুষটিকে কি আমরা স্মরণ করব না, ইতিহাসে কি তাকে মূল্যায়ন করব না?”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে ষাটের দশকের প্রথমার্ধে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার নিউক্লিয়াস গঠিত হয়। পরবর্তীতে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এই ছাত্রনেতারা।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে বিরোধের জের ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। এরপর ১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে রাজনৈতিক দল জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়। জাসদের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রব।
সিরাজুল আলম খান কখনোই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের পরামর্শক হিসেবে তাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। ৭৮ বছর বয়সী সিরাজুল আলম খান এখন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
সিরাজুল আলম খান (ফাইল ছবি) সিরাজুল আলম খান (ফাইল ছবি) তাকে সম্মান জানানোর দাবি তুলে রব বলেন, “একাত্তর সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তার ১০ বছর পূর্বে একটা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নিরপেক্ষ একটা বিপ্লবী স্বাধীন বাংলা পরিষদ কে গঠন করেছিল? ২ মার্চ পতাকা আমি তুলেছি, ৩ মার্চে স্বাধীনতার ইশতেহার শাহজাহান সিরাজ পাঠ করেছেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বক্তৃতা দিয়েছেন, ২৫ মার্চ রাত থেকে শুরু করে ৯ মাসে আমাদের লক্ষ লক্ষ বাঙালি সৈনিক, ছাত্র-যুবক-শ্রমিক-কৃষক-জনতা প্রাণ দিয়েছেন।
“এর মূল পরিকল্পনাকারীটা কে? সেই ব্যক্তিটার নাম আমরা অনেকে জানি না। তার নাম হল, সিরাজুল আলম খান।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও সিরাজুল আলম খানকে তার ‘রাজনৈতিক পরামর্শক’ হিসেবে স্বীকার করেছিলেন বলে দাবি করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির আ স ম আব্দুর রব।
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে যখন বিদেশি সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করছিল, তোমার পরামর্শদাতা কে? তখন তিনি (বঙ্গবন্ধু) বলতে ছিলেন, আমার একজন পলিটিক্যাল অ্যাডভাইজার আছে লোকজনের সম্মুখে আসে না। সিরাজুল আলম খানকে দেখিয়ে বলছিলেন, এই লোকটা আমরা পলিটিক্যাল অ্যাডভাইজার।”
রব এই বয়ান দিলেও গত বছর মার্চেই এক বক্তব্যে স্বাধীনতার আগে সিরাজুল আলম খানের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
এই প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আগে-পরে তার সঙ্গে সিরাজুল আলম খানের কথোপকথন তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ওই ভাষণেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে বঙ্গবন্ধুকে ‘চাপ দিয়েছিলেন’ সিরাজুল আলম খানসহ তার সহযোদ্ধারা। ভাষণে সে ঘোষণা না আসায় ‘জনগণ নিরাশ হয়ে চলে গেছে’ বলে বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন তারা, যার প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি।
“কিছু লোক বক্তৃতার আগে পরামর্শ, বক্তৃতার পরে এই কথা বলার পেছনে কী রহস্যটা থাকতে পারে, সেটা ৭৫ এর পরে বা পরবর্তীতে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখলে এখন মনে হয়। তারা যে সব সময় একটা ষড়যন্ত্রের সাথে ছিল; সেটা কিন্তু বোঝা যায়।”
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।