Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে: অধ্যাপক ড. আব্দুর রব

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৫:৩৮ পিএম

 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি’র সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুর রব বলেছেন, ফেব্রুয়ারি মাস ভাষার মাস। এ মাস আমাদেরকে মাতৃভাষা ও ভাষার জন্য জীবনদানকারী বীর শহীদদের স্মরণ করিয়ে দেয়। যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি নিজেদের ভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা, তাদের প্রতি রয়েছে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। প্রতিদান দিবসে তাঁরা আল্লাহর নিকট পাবেন উত্তম প্রতিদান। 

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে যুব উন্নয়ন সংসদ আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে ‘ভাষা আন্দোলন ও বাকস্বাধীনতা’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অধ্যাপক ড. আব্দুর রব বলেন,  এই সিম্পোজিয়াম থেকে আমরা জানতে চাই, ৫২’র চেতনা আজ কোথায়? স্বাধীনতার এতো বছর পরেও জনগণ কেন কথা বলার অধিকার হারা। শুধু তাই নয় কাগজে কলমে, পত্র-পত্রিকাসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নাগরিকের ভাষা প্রয়োগ বা কথা বলার অধিকার কি সমুন্নত আছে? ন্যায়সঙ্গত কোনো অধিকারের কথাও তো প্রকাশ্যে বলা যাচ্ছে না। ভাষার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের সিংহভাগই মুসলম ধর্মে বিশ্বাসী। আর মুসলমান পরকালে বিশ্বাসী। একজন মুসলমানের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে, পরকালের সুখ-শান্তি লাভ করা। ভাষা শহীদের মর্যাদায় আমাদের করণীয় হচ্ছে, তাদের জন্য দোয়া করা। যার বিনিময়ে শহীদ তাদের পরকালীন জীবন হবে সুখ ও শান্তিময়।

 
তিনি আরও বলেন ‘মাতৃভাষা মানুষের জন্মগত অধিকার। মানুষ যে দেশে জন্মগ্রহণ করে সে দেশের ভাষাই তার মাতৃভাষা। জন্মগতভাবে আমরা বাংলাদেশি আর বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এ ভাষার ইতিহাস ও আন্দোলন অত্যন্ত দীর্ঘ। আজকে বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। আমাদেরকে ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। বাংলা ভাষা নিয়ে যুব সমাজকে গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘নিজ সন্তানদের বাংলাভাষা চর্চায় উৎসাহিত করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষার প্রচলনের জন্য যারা কাজ করছেন তাদেরকে পুরস্কৃত করা উচিত। ভিন দেশি অপসংস্কৃতির হাত থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা খুবই জরুরি।’

সভাপতির বক্তব্যে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সাইফুর রহমান বলেন, এ দেশে মুসলমানরা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছে। সর্বশেষ সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারদের রক্তের বিনিময়ে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেয়েছে। রক্তের বিনিময়ে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের ওই অঙ্গীকার থেকে দূরে সরে এসে বাংলা ভাষাকে লাঞ্ছিত করা যাবে না। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী ও ইসলামি মূল্যবোধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়-এই সত্যটি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। ভাষা মানুষের বিচ্ছিন্নতা দূর করে, পরস্পরকে ঐক্যবদ্ধ করে। কাজেই দেশ ও জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে বাংলা ভাষা চর্চাকে বিকশিত ও উন্নত করাই আমাদের অন্যতম কর্তব্য।

ভাষা আন্দোলন ও বাক-স্বাধীনতা শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট কবি জাকির আবু জাফর। তিনি বলেন, ‘উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ। ভাষা আন্দোলনে যেমন সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবি আদায় করেছিল, ঠিক তেমনি আজকে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ভোটাধিকার, বাক-বাধীনতা, ধর্মী অনুষ্ঠানের স্বাধীনতা (ওয়াজ মাহফিল) অনেকটা সংকুচিত ও ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠায় সকলকে দল-মত ও শ্রেণি-পেশার ঊর্ধ্বে উঠে ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তাহলেই এ জাতির মুক্তি সম্ভব।
 
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, ১৯৫২ সালে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী আমাদের বাক স্বাধীনতাকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। একইভাবে আজ সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের মায়ের ভাষায় কথা বলার বাক-স্বাধীনতা আদায়ের জন্য বর্তমান অবৈধ ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।

ডা: আতিয়ার রহমান বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। এ আন্দোলন শুধু মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের আন্দোলন ছিল না, বরং নিজস্ব জাতিসত্তা, স্বাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র রক্ষারও আন্দোলন ছিল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ধাপে ধাপে বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান হয়েছে এবং একাত্তরে স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে তা পূর্ণতা পেয়েছে।

সিম্পোজিয়ামে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা বলেছেন, বাংলা ভাষা রক্ষার্থে ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। আজ থেকে ৭২ বছর আগে আমরা রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় আমরা আমাদের বাক-স্বধীনতা অনেকটাই সংকুচিত। আমরা স্বাধীন ভাবে মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি না। আমরা ভাষাভিত্তিক জাতি গঠন করতে পারলেও অতীতের সরকারগুলোর অব্যবস্থাপনা ও অযোগ্যতার কারণে জাতির কাঙ্খিত উন্নতি করতে পারি নাই। দেশের উন্নয়নের জন্য মায়ের ভাষায় কথা বলার বাক-স্বাধীনতা থাকা জরুরি।


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ড. আব্দুর রব
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->