পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
বাংলা ভাষা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের গরবের অন্ত ছিল না। বাংলাদেশের তুলনায় তাদের মধ্যে একটি হামবড়া ভাব ছিল। এক ধরনের Superiority Complex বা বড় দাদা সুলভ ভাব ছিল। তবে তাদের এ ধরনের বড়ত্বের আলগা ভাব ৬৬ বছর আগেই দূর হওয়া উচিত ছিল, যখন সেদিনের পূর্ব বাংলা এবং আজকের বাংলাদেশ ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছিল। দুঃখের বিষয়, তাদের সেই বড়দা সুলভ পোজ-পাজ এখনও যায়নি। বাংলা ভাষা সম্পর্কে এবং সঠিক বাঙালি হওয়া সম্পর্কে ওরা মাঝে মাঝেই আমাদেরকে নসিহত করেন। আর আমাদের এক শ্রেণির তথাকথিত প্রগতিবাদীদের কি হীনমন্যতা, তারা ক্ষেত্র বিশেষে তাদেরকে তোয়াজ করে চলে এবং স্পেশাল গেস্ট করে আমাদের অনুষ্ঠানে নিয়ে আসে। আমাদের এখানেও ফেসবুকে, এমনকি কোনো কোনো সংবাদপত্রের ছোটগল্পে এক শ্রেণির অর্বাচীন এই বলে আফসোস করেন, ‘আহা, দুই বাংলা এক হলে কী সুন্দরই না হতো। আচ্ছা, দুই বাংলাকে কি এক করা যায় না?’
এই ধরনের হা-হুতাশ যারা করেন তাদেরকে যেমন অর্বাচীন বলি, তেমনি তাদের প্রতি করুণাও হয়। কিছুই না বুঝে, কোনো রকম পড়াশোনা না করে শুধুমাত্র ইমোশন বা আবেগের ওপর ওরা এসব কথা বলে যান। দুই বাংলা এক করা বা আলাদা রাখা আমার আজকের আলোচনার মূল উপজীব্য নয়। তার পরেও বাংলা ভাষা নিয়ে আলোচনা করলে সেটি অবধারিতভাবে এসে পড়ে। যেমন কান টানলে মাথা আসে। তাই প্রশ্ন করতে চাই, দুই বাংলা এক হবে কীভাবে? আমরা কি স্বাধীন অস্তিত্ব বিলীন করে ওদের মাঝে ঢুকে যাবো? নাকি ওরা ভারত থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের সাথে যোগ দেবে? কোনোটাই বাস্তবে সম্ভব নয়। আমার আজকের বক্তব্য হলো, যারা বাংলা নিয়ে বড়াই করেন তাদের ওখানে বাংলার কী করুণ হাল।
কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে অতীতে অনেক কথা শুনেছি। অনেক ভালো ভালো কথা। অনেক বছর আমার পশ্চিমবঙ্গ যাওয়ার সুযোগ হয়নি। অতঃপর ২০১৪ সালে কলকাতায় ৩ দিন অবস্থান করি। এরপর ২০১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে ৫ দিন থাকি। এই ২ দফা সফরে পশ্চিমবঙ্গ বিশেষ করে তাদের বাঙালিত্ব এবং বাংলা ভাষা সম্পর্কে আমার সম্পূর্ণ মোহ ভঙ্গ হয়।
নেতাজি বিমান বন্দরে দেখেছি, বিমান বন্দরের কয়েক শত কর্মচারির মধ্যে প্রায় সকলেই বাঙালি। নেতাজি বিমান বন্দরের যে কাউন্টারেই গিয়েছি, সেই কাউন্টারেই বাঙালি কর্মচারি দেখে তাদের সাথে বাংলা ভাষাতেই কথা বলেছি। কিন্তু আমি অবাক হয়ে দেখলাম যে, আমি যতই তাদের সাথে বাংলায় কথা বলি ততই তারা তার জবাব দেয় হিন্দিতে। বিমান বন্দরের রেস্ট রুম ভাড়ার জন্য যখন সংশ্লিষ্ট কর্মচারির সাথে আমি কথা বলেছি এবং যখন সে হিন্দিতে জবাব দিয়েছে তখন আমি রেগে গেছি। আমি তাকে বলি যে, ভাই আমি তো বাঙালি। আপনিও বাঙালি। আপনাকে বাংলায় প্রশ্ন করলে আপনি আমাকে হিন্দিতে জবাব দিচ্ছেন কেন? দেখলাম, লোকটি থতমত খেয়ে গেল। তখন মাথা নিচু করে জবাব দিল, দাদা, বোঝেন তো, ওটা অভ্যাস হয়ে গেছে। আমি আরও অবাক হই যখন দেখি যে, পশ্চিমবঙ্গেরই দু’জন মানুষ বিমান বন্দরের কনভেয়ার বেল্টে হিন্দিতে কথা বলছে। আমি তাদের কথার ফাঁকে অবাঞ্ছিতভাবে ঢুকে পড়ি। আমি বলি, ভাই, আপনারা দুজনই তো পশ্চিমবঙ্গের। তাহলে হিন্দিতে কথা বলছেন কেন? ওরা আমার কথায় লজ্জা পেয়ে সত্যি কথাটাই বললো। বললো, আর বলবেন না দাদা, হিন্দি আমাদেরকে গিলে ফেলেছে।
দুই
এই হলো পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে বাংলার হাল-হকিকত। এতক্ষণ ধরে আমার কথা বললাম। এবার ওদের মুখেই শুনুন, ওদের বাংলা ভাষার বর্তমানে কী করুণ দশা। এমন অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। আপনারা জানেন, পশ্চিমবঙ্গের শ্রেষ্ঠ তিন জন বাঙালি কথা সাহিত্যিকের নাম বলতে গেলে গেলে শীর্ষেন্দুর নাম অবশ্যই আসবে। অপর দু’জন হলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এবং সমরেশ মজুমদার। অবশ্য অন্যেরাও আছেন। যেমন সুচিত্রা ভট্টাচার্য্য, শঙ্কর, বুদ্ধদেব গুহ, সমরশে বসুসহ আরো অনেকে। অসংখ্য উপন্যাসের রচয়িতা সমরেশ, সুনীল এবং শীর্ষেন্দু। আমার নিজের সংগ্রহেই রয়েছে শীর্ষেন্দুর কম করে হলেও অন্তত ৩০টি উপন্যাস।
সেই শীর্ষেন্দু পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষার করুণ দশা সম্পর্কে কী বলেছেন, দেখুন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি বাংলা পত্রিকায় তার মন্তব্য বেরিয়েছে। এ সম্পর্কে প্রকাশিত রিপোর্টটি পাঠিয়েছেন কলকাতা থেকে দীপক দেবনাথ। খবরটির শিরোনাম, ‘পশ্চিমবঙ্গে বাংলা নিয়ে শীর্ষেন্দুর আক্ষেপ।’ শীর্ষেন্দু বলেন, ‘বাংলা ভাষা এই পশ্চিমবঙ্গে যথাযথ সম্মান ও স্বীকৃতি পাচ্ছে না। তাঁর অভিমত, বিষয়টি নিয়ে আত্ম সমীক্ষার প্রয়োজন আছে। কলকাতা সাহিত্য উৎসবের শেষ দিন শনিবার ‘দুই দেশ-এক বাংলা’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলা ভাষার প্রতি আবেগ ও ভালোবাসা নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে তুলনা টেনেছেন তিনি। শীর্ষেন্দু বলেন, ‘বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও আবেগ বাংলাদেশের নাগরিকদের অনেক বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা যা করে তা কিছুই নয়।’
তিন
বাংলা ভাষা নিয়ে ওদের কতই না গরব, অর্থাৎ গর্ব। অতুল প্রসাদ সেনের সেই গান নিয়ে আমাদের বাংলাদেশেও কতই না অহংকার। ভাষার মাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাস এলেই দুটি গান খুব শোনা যায়। একটি হলো,
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
একুশে ফ্রেবুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি।
আর একটি হলো অতুল প্রসাদ সেনের,
মোদের গরব, মোদের আশা
আ মরি বাংলা ভাষা।
তোমার কোলে, তোমার বোলে,
কতই শান্তি ভালবাসা।
কিন্তু অন্তত পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষা নিয়ে সেই গরব, সেই আশা নয়। বাংলা ভাষার বোলে (জবানিতে) সেই শান্তি সেই ভালবাসা আর নাই। এটি আমার কথা নয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিক মালবী গুপ্ত বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, নাহ্ বলতেই হচ্ছে, ‘আ মরি বাংলা ভাষা’ আর ‘মোদের গরব’ও নয়, ‘মোদের আশা’ও নয়। অন্তত পশ্চিমবঙ্গে। থাকলে, আমার মনে হয়, বাংলা ভাষাকে আজ এমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হতো না। তার অস্তিত্বের সংকট সম্ভাবনায় অনেককেই ইদানীং এত বিচলিতও হতে হতো না। বিশেষত নবীন প্রজন্মের মুখে মুখে আজ উদভ্রান্তের মতো ধাক্কা খেয়ে ফিরতে হতো না হিন্দি, ইংরেজি মেশানো এক জগাখিচুড়ি বাংলা ভাষাকে। এর পর তিনি বলেছেন, জানা যাচ্ছে গত ৬০ বছরে প্রায় ২৫০টি ভারতীয় ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কী জানি, বাংলা ভাষাও দূর ভবিষ্যতে এমন বিপদ সম্ভাবনার তালিকায় নাম লেখাবে কী না।
এর পর তিনি বলেছেন, মাতৃভাষার আন্দোলন বাংলাদেশকে প্রসব করেছে, যে আন্দোলনের হাত ধরে সারা বিশ্ব ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পেয়েছে, সেই ভাষা নিয়ে সেই দেশবাসীর চূড়ান্ত আবেগ এবং গভীর ভালবাসা হয়তো স্বাভাবিক। অপর দিকে, পশ্চিমবঙ্গের জন্ম বাংলাদেশের মতো কোনো রক্তক্ষয়ী ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়ে হয় নি। রাজ্যবাসীদের কাছে বাংলাভাষা অনেকটাই যেন পড়ে পাওয়া চৌদ্দ আনা। তাই তাকে নিয়ে কোনো বিশেষ আবেগ নেই আমাদের। বরং যা রয়েছে তা হলো কিছুটা অবজ্ঞা মিশ্রিত অবহেলা। তাই বোধহয়, যে ভাষাটির জন্ম ও চর্চা হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে, যে ভাষা বাঙালিদের বিপুল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক- সেই ভাষার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছুটা নাকে কাঁদুনি গেয়েই আমরা পশ্চিমবঙ্গ বাসীরা ক্ষান্ত থাকি।
চার
পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিক মালবী গুপ্ত এখানেই থামেননি। এর পর তিনি বিবিসিকে বলছেন, আত্ম বিস্মৃত বাঙালি জাতি আমরা বাংলাকে নিয়ে বোধহয় একটা হীনমন্যতাতেও ভুগি। কারণ প্রায়শই দেখা যায়, যত শিক্ষিতই হোক, ইংরেজি না বলতে পারলে আমাদের তথাকথিত ‘শিক্ষিত সমাজ’, তাকে যেন একটু খাটো নজরেই দেখে। বহু বাঙালিই আড্ডায়, আলোচনায় এমনকি নিজেদের বাড়িতেও বাংলা নয়, ইংরেজি বলতেই বেশি পছন্দ করেন। বেশি ‘কমফোর্টেবল ফিল’ করেন তাঁরা। নতুন প্রজন্মও বিশেষ করে কলকাতাবাসী যেন সেই পছন্দের অনুসারী হয়ে বাংলার বদলে ইংরেজি ও হিন্দি, নয়তো এই দু’টি ভাষা মিশিয়ে অদ্ভুত এক জগা খিচুড়ি বাংলা বলে। আবার অফিস-আদালতে বাংলা ভাষায় লেখা সরকারি কোনো নির্দেশিকা বা কোনো ঘোষণাপত্রে চোখ রাখলে, মনে হয় যেন ঊনবিংশ শতকি বাংলা পড়ছি।
এখন আবার সভা সমিতিতে আমাদের রাজ্যের নেতা-নেত্রী ও মন্ত্রীদের শ্রীমুখ থেকে অশ্রুপূর্ব বাংলায় যে বক্তৃতা, কখনো আবার ছড়া-গানের ফুলঝুরি আমাদের কর্ণপটাহকে বিদীর্ণ করে- তখন আমার সত্যি মনে হয়, ‘মাগো তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালবাসা’র বদলে- ‘কত অশান্তি, কত যন্ত্রণাই না আমাদের ভোগ করতে হচ্ছে।’ অতঃপর তিনি বলছেন, এখনকার সিনেমায়, সিরিয়ালে ব্যবহৃত নানা হিন্দি শব্দ, ডায়ালগের ভগ্নাংশ, বাংলা ভাষায় তা সে যতই অর্থহীন হোক না কেন, তার যথেচ্ছ ব্যবহারেও আমরা কেমন নির্বিকার।
মালবী গুপ্তর উদ্ধৃতি লম্বা হয়ে যাচ্ছে। তাই তার আর একটি উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসির রিপোর্টটি শেষ করছি। তিনি বলছেন, আমার মনে হয়, বাংলাভাষা সম্পর্কে এই অবজ্ঞাই ছেলে-মেয়েদের মাতৃভাষা সম্পর্কে অনাগ্রহী করেছে। অভিভাবকরাও মনে করেন, বাংলাটা না জানলেও চলবে। এই অনাগ্রহ আর অবহেলার মধ্যেই কিন্তু ভাষার মৃত্যুবীজ লুকিয়ে থাকে।
পাঁচ
পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষার এই বেহাল দশা শুধুমাত্র তাদের অফিস-আদালত এবং ব্যবসা-বাণিজ্যেই নয়। তাদের ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমেও একই অবস্থা। এ সম্পর্কে আজ আর বিস্তারিত আলোচনা করবো না। আজ একটি উদাহরণ দিয়েই শেষ করবো। পশ্চিমবঙ্গের যে কয়টি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো ‘জি বাংলা’। সেই জি বাংলায় একটি জনপ্রিয় প্রোগ্রাম হয়। প্রোগ্রামটির নাম সা-রে-গা-মা-পা। এটি সঙ্গীত জগতে নতুন প্রতিভা খুঁজে বের করার অনুষ্ঠান। বছরে অন্তত দুবার এই অনুষ্ঠান হয় এবং প্রতিবার অন্তত তিন মাস স্থায়ী হয়। দেড় ঘণ্টার এই অনুষ্ঠানে গড়ে ছয়টি করে গান হয়। কোনো কোনো সময় সাতটিও হয়। টেলিভিশনের নাম জি বাংলা। কিন্তু যে ৬/৭টি গান হয় তার মধ্যে ৭টিই অথবা ৬টিই হয় হিন্দি গান। ভারতের হিন্দি গানের যারা জনপ্রিয় শিল্পী তাদের গানই পরিবেশিত হয়। এখন আপনারাই বলুন, পশ্চিমবঙ্গের একটি বাংলা চ্যানেলে গানের অনুষ্ঠানে প্রায় সবকটি হিন্দি গান পরিবেশিত হচ্ছে। তাহলে কোথায় আজ পশ্চিমবঙ্গে বাংলার স্থান?
পাকিস্তান আমলে কেউ যদি ব্যক্তিগত পর্যায়ে উর্দু বলতেন তাহলে তার পিন্ডি চটকানো হতো। আজ হিন্দি ভাষার প্রবল ঢেউয়ে বাংলাদেশ সয়লাব। অথচ, আমাদের তথাকথিত প্রগতিবাদী বন্ধুদের কোনো বিকার নাই। তাদের ভাবসাব দেখে মানুষের মনে এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে যে, ভারত যা কিছুই করবে তাই এদের কাছে রোল মডেল। আর অন্যেরা বিশেষ করে মুসলিম ভাবাদর্শে যা কিছুই করা হবে তার সব কিছুই মৌলবাদী এবং সেই কারণে পরিত্যায্য।
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।