মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
২৫ জানুয়ারি নেপালের ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি) কো-চেয়ারম্যান পুষ্প কমল দহল প্রচন্ড ভেনেজুয়েলায় সাম্প্রতিক মার্কিন হস্তক্ষেপকে ‘সাম্রাজ্যবাদী ক্যু’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন। অধিকাংশ নেপালি তার এ মন্তব্যে হতভম্ব হয়ে গেছেন।
ভেনেজুয়েলার সাথে নেপালের কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র নেপালের বড় দাতা দেশগুলোর একটি। তাছাড়া এনসিপি নিজেদের দেশের বাইরের বিষয়ে এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ নিয়েও খুব একটা কথা বলে না। সার্কভুক্ত দেশ শ্রীলংকা এবং মালদ্বীপের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে তারা মুখ বন্ধ রেখেছিল। তাহলে প্রচন্ডের এই হঠাৎ মন্তব্যের ব্যাখ্যা কি?
এই বিবৃতি দেয়ার একদিন আগে নেপালের জাতিসংঘ অফিস এবং কাঠমান্ডু-ভিত্তিক নয়টি পশ্চিমা দেশের দূতাবাস থেকে নেপাল সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় যাতে তারা ট্রানজিশনাল ন্যায় বিচারের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান জানায়। ১৯৯৬-২০০৬ সাল পর্যন্ত সময়কালে যে মাওবাদী বিদ্রোহ ও সহিংসতা হয়েছিল, তাতে ১৭ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল এবং প্রায় ২ হাজার মানুষ নিখোঁজ হয়। ওই বিদ্রোহের ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের একচেটিয়া সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছে আদালত। মাওবাদী নেতারা অতীতের ওই সময়টাকে বৈধ যুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে এবং ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে কোন মাওবাদী নেতা বা কমান্ডারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়াটা তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখানে দ্বিমত রয়েছে। তাদের বিশ্বাস এই সঙ্ঘাতের ক্ষতটার চিকিৎসা না করে ফেলে রাখাটা বিপজ্জনক। যাদের পরিবারের সদস্যরা নিহত হয়েছে বা হারিয়ে গেছে, ন্যায় বিচার পাওয়াটা তাদের অধিকার। বিচার বিভাগ এই দাবির পক্ষে। অন্যদিকে ভারত আর চীন নেপালের এই ট্রানজিশনাল বিচারের ব্যাপারে নিরবতার পথ বেছে নিয়েছে। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ২৫ জানুয়ারি যে বিবৃতি ইস্যু করা হয়েছে, সেখানে চীন আর ভারত স্বাক্ষর করেনি। নেপালের আঞ্চলিক প্রধান দুই শক্তি যেখানে প্রস্তাবের সাথে নেই, তাহলে কার নেতৃত্বে এই প্রচারণা চালানো হচ্ছে? সাবেক মাওবাদী নেতার মনে হয়েছে এই স্বাক্ষর সংগ্রহ প্রচারণার পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র – আর সে কারণেই প্রচন্ডের এই তীব্র প্রতিক্রিয়া।
২০১৮ সালে প্রচন্ডর মাওবাদী দল বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সিপিএন-ইউএমএলের সাথে যোগ দিয়ে এনসিপি গঠন করে, যে দলটি এ মুহূর্তে ক্ষমতায় রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলটির সহ-প্রধানের এমন মন্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র ক্রুদ্ধ হয়েছে এবং সরকারের কাছে তারা এ বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছে।
জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে কথা জানিয়েছে, তা আমেরিকান উদ্বেগ প্রশমন করতে পারেনি। (প্রধানমন্ত্রী ওলি পরে প্রচন্ডর বক্তব্যকে একটা ‘ত্রুটি’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যদিও প্রচন্ড নিজে তার বক্তব্যকে সমর্থন করে যাচ্ছেন।)
নেপালের কমিউনিস্টরা ঐতিহ্যগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সাম্রাজ্যবাদ’ এবং ভারতের ‘সম্প্রসারণবাদের’ বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এসেছে। কিন্তু দেশটির ভৌগলিক অবস্থান এবং এনসিপি এখন ক্ষমতায় থাকার কারণে ভারতের সঙ্গে তাদের বন্ধুসুলভ আচরণ করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে এ ধরনের কোন বাধ্যবাধকতা অনুভব করে না তারা। বাস্তব বা কাল্পনিক কোন বহির্শত্রুর কল্পনা করার যে পুরনো কমিউনিস্ট সংস্কৃতি, সেটিও এখানে কাজ করেছে। সূত্র : এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।