Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ধুলা দূষণ বন্ধের দাবিতে পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

রাজধানীর ড্রেন ও স্যুয়ারেজের ময়লা আবর্জনা রাস্তার দুপাশে দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হয়। এতে যানবাহন চলাচলের সময় ধুলা-বালি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যে কারণে শুষ্ক মৌসুমে ধুলা দূষণের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। ধুলা দূষণে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানী, এলার্জি, চর্মরোগসহ নানা জটিল রোগব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ধুলা দূষণে জনদূর্ভোগের পাশাপাশি একদিকে যেমন স্বাস্থ্যগত সমস্যা হচ্ছে তেমনি আর্থিক ও পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় অবিলম্বে ধুলা দূষণ বন্ধে চাই জরুরী কার্যকর পদক্ষেপ এবং দায়ীদের শাস্তি।

গতকাল শনিবর সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামসহ (নাসফ) সমমনা কয়েকটি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এক মানববন্ধনে বক্তারা এ দাবী জানান।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নাসফের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৈয়ব আলী, পবার সম্পাদক ফেরদৌস আহেমদ উজ্জল, সামাজিক আন্দোলন সংস্থার চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির ভূইঞা, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের এএনএম মাসুম বিল্লাহ, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের আমির হাসান মামুদ, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির মানবেন্দ্র দেব, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি মোহাম্মদ নাজিমউদ্দীন, নাসফের সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, ক্যামেলিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, রাজধানীতে ধূলা দূষণ প্রকট আকার ধারণ করেছে। ধূলা দূষণে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ধূলাজনিত রোগব্যাধির প্রকোপ। রাস্তার
পাশে দোকানের খাবার ধূলায় বিষাক্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে রোগ জীবাণুমিশ্রিত ধূলা ফুসফুসে প্রবেশ করে সর্দি, কাশি, ফুসফুস ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস, শ্বাসজনিত কষ্ট, হাঁপানী, যক্ষা, এলার্জি, চোখ জ্বালা, মাথা ব্যথা, বমি ভাব, চর্মরোগসহ নানা জটিল রোগের সৃষ্টি করছে। শিশু, গর্ভবতী নারী, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় ধূলা দূষণের ফলে তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য একটি মারাত্বক হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।

বক্তারা বলেন, ধূলার কারণে দোকানের জিনিসপত্র, কম্পিউটারসহ নানা ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। ঘরবাড়ি আসবাবপত্রসহ কাপড় চোপড়ে ধূলা জমে যেভাবে প্রতিদিন নগর জীবনকে নোংরা করছে, তা পরিচ্ছন্ন রাখতেও নগরবাসীকে নষ্ট করতে হচ্ছে হাজার হাজার শ্রমঘণ্টা ও বিপুল পরিমাণ পানি এবং ডিটারজেন্ট। আর এসব ডিটারজেন্টের পরবর্তী গন্তব্য হচ্ছে নদী, লেক, জলাধারসমূহ। যা জলজ প্রাণীসহ সামগ্রিক জীববৈচিত্রের জন্যও ক্ষতিকর।

বক্তারা আরো বলেন, নগরবাসীর স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে অচিরেই ধূলা দূষণের উৎসসমূহ বন্ধ করতে হবে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ড্রেনেজ এবং রাস্তাঘাট উন্নয়ন, মেরামত ও সংস্কার কার্যক্রমের আওতায় নির্দিষ্ট পরিমাণ রাস্তা-জায়গা খোঁড়া-খুঁড়ি করে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন হওয়ামাত্র তা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এবং পর্যায়ক্রমে তা চালিয়ে যাওয়া, খোঁড়া-খুঁড়ির সময় যাতে ধূলা দূষণ না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। ভবন নির্মাণ এবং ভাঙ্গার সময় যথাযথ নিয়ম মেনে তা করতে হবে এবং পাকা ভবন নির্মাণের সময় মাটি, বালু, ইটসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী রাস্তা-ফুটপাতে রাখা যাবে না। ড্রেনের ময়লা এবং রাস্তা ঝাড়ু দিয়ে ময়লা আবর্জনা জমিয়ে না রেখে সাথে সাথে অন্যত্র অপসারণের ব্যবস্থা করতে হবে। গৃহস্থালী ও বাজারের ময়লা সঠিক নিয়মে দ্রুত সংগ্রহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ময়লা পরিবহণের গাড়িগুলোতে ভালোভাবে আচ্ছাদিত করে ময়লা পরিবহণ করতে হবে। ধূলা দূষণের সাথে জড়িত দায়ী ব্যাক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সর্বোপরি ধূলা দূষণের সকল উৎস বন্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসা, রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জনদুর্ভোগ লাঘবে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা এবং তা নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানববন্ধন

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ