Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরবের জনসভায় থেকে কি বার্তা দিলেন ফ্রান্সিস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৭:১৭ পিএম

পোপ ফ্রান্সিস মঙ্গলবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে তার ঐতিহাসিক সফর শেষ করেছেন। এই প্রথম কোন পোপ আরব উপদ্বীপে জনসভা করলেন। জনসভায় তিনি সবাইকে ঈশ্বরের অনুসরণে বিনয়ী থাকতে বলেছেন। ফ্রান্সিসের এই জনসভায় যত খ্রিস্টান উপস্থিত ছিলেন, ইসলামের জন্মভ‚মিতে এর আগে কখনোই এত খ্রিস্টান একত্রে জমায়েত হয়নি বলে মনে করেন ধর্ম বিশ্লেষকরা। এর আগের দিন তিনি যুদ্ধকে প্রত্যাখ্যান এবং শান্তির জন্য খ্রিস্টান ও মুসলিম নেতাদের একত্রে কাজ করার জন্য উদাক্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আমিরাতের জায়েদ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে এদিন প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার লোক জমায়েত হয়। পোপের খোলা ছাদের গাড়ি সেখানে এসে পৌঁছতেই স্টেডিয়ামের ভেতরে এবং বাইরে থেকে ভক্তেরা হর্ষধ্বনি করতে থাকেন। এ সময় অনেকেই গাইছিলেন ক্যাথলিকদের ধর্মীয় সঙ্গীত ‘ভিভা ইল পাপা’ এবং ‘আমরা আপনাকে ভালোবাসি’।
জনসভার আয়োজকরা বলেন, প্রায় ১০০ টি দেশ থেকে ভক্তরা এসেছিলেন যা ইউএইতে বসবাসরত ৯০ লাখ মানুষের মধ্যে বৈচিত্র্যের নিদর্শন হয়ে থাকবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৯০ লাখ বসবাসকারীর মধ্যে ক্যাথলিকদের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। তাদের প্রায় সবাই বিদেশী যারা তেল সমৃদ্ধ এই এলাকায় বিনিয়োগ ও নির্মাণে কাজে নিযুক্ত আছেন। তাদরে বেশিরভাগই ফিলিপিনো এবং ভারতীয়, যাদের অনেকেই এখানে কাজ করতে পরিবার রেখে এসেছেন।
জনসভায় পোপ ইতালীয় ভাষায় ভাষণ দেন। যা আরবীতে অনুবাদ করে শোনানো হয় এবং দৈত্যাকার স্ক্রীনে ইংরেজী সাবটাইটেল দেখানো হয়। ফ্রান্সিস তার অনুসারীদের যাদের বেশিরভাগই দ্ররিদ্র এবং শ্রমিক উদ্দেশ্যে বলেন, বিশ্বাসী হতে তাদের মহান ‘অতিমানবীয়’ কাজ করতে হবেনা। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বড় আকাশছোঁয়া দালান, সমৃদ্ধি ও বিলাসিতার জন্য পরিচিত একটি দেশে তার এই ভাষণ ছিল নম্র থাকার বার্তা।
ফ্রান্সিস বলেন, ‘ঈসা (আঃ) আমাদেরকে অসাধারণ কাজ করতে বলেননি যার আকর্ষণীয় প্রকাশ দেখে আমাদের মনোযোগ নষ্ট হবে। তিনি আমাদেরকে একটিমাত্র শিল্পকর্মই তৈরি করতে বলেছিলেন, প্রত্যেকের পক্ষে যেটা সম্ভব; সেটা আমাদের নিজেদের জীবন।’
গত সোমবার, পোপ আমিরাতের নেতাদের সাথে সাক্ষাত করেন এবং মিসরের প্রাচীন সুন্নি মুসলিম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল-আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম শেখ আহমেদ আল-তৈয়বের সাথে ‘ভ্রাতৃত্বের বন্ধন’ প্রচারের লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তিনি ধর্মীয় নেতাদের প্রতি যুদ্ধের ‘নির্মম পরিণতি’ প্রত্যাখ্যান এবং ‘সশস্ত্র সেনাবাহিনী রাখার যুক্তি, সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধি ও দেয়াল তোলা’ এসবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আহ্বান জানান।
আমিরাতের রাজধানীতে ক্ষমতাশালী প্রিন্স, শতাধিক ইমাম, মুফতি, মন্ত্রী, ধর্মীয় নেতাদের সামনে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘এর কোনও বিকল্প নেই যে, আমরা একসাথে ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব অথবা কোনও ভবিষ্যৎ থাকবে না।’ তিনি এমন সময় এই কথা বললেন যখন সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থনে সউদী যুদ্ধ আরব বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ ইয়েমেনকে দুর্ভিক্ষের মুখে নিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘যারা শান্তি চায় তাদের সাথে ঈশ্বর থাকেন।’
পূর্বসুরী শান্তিরদূত সেইন্ট ফ্রান্সিস অব আসিসি মিসরীয় এক সুলতানের সাথে সাক্ষাতের ৮০০ বছর পরে তার এই সফর মুসলমান বিশ্বের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে পবিত্র দর্শনের আরেকটি প্রচেষ্টার নিদর্শন হয়ে থাকবে যা পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের সময় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। সূত্র: ইউরো নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পোপ

১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ