Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

রোহিঙ্গাদের কারণে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে কক্সবাজার

বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৪:১১ পিএম | আপডেট : ৫:২৭ পিএম, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
রোহিঙ্গাদের কারণে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে কক্সবাজার। তাদের বসতি স্থাপন ও জ্বালানির জন্য ইতোমধ্যে উজাড় হয়েছে ৬ হাজার একরের বেশি বনভূমি। প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে কৃষি জমি, পাহাড় ও পরিবেশ । এসব কারণে নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
এদিকে মিয়ানমার থেকে নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দুঃখ  দুর্দশার খবর নিতে এবং স্বচক্ষে তাদের অবস্থা দেখতে ও রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ দেশে এসেছেন হলিউড অভিনেত্রী ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বিশেষ দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। ৪ দিনের সফরে তিনি এখন কক্সবাজারে পৌঁছে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করছেন।  
 
পরিবেশকর্মীরা বলছেন, ধ্বংস হওয়া বনভূমিতে পরিকল্পিতভাবে বনায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। অবশ্য বন বিভাগের দাবি, ক্যাম্প ও তার আশপাশের এলাকায় বনায়নের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা। এখানে রাস্তার দু’পাশে দেখা যেতো পাহাড় আর পাহাড়ে ছোট-বড় গাছ-গাছালি ও সবুজে ঘেরা ফসলি জমি। কিন্তু এখন আর নেই, সে দৃশ্য অনেকটাই অনুপস্থিত।

এখন দেখা মিলবে কেবলই ক্ষতচিহ্ন আর রোহিঙ্গাদের বসতি। গত ১৬ মাস ধরে রোহিঙ্গা ও এনজি সংস্থাগুলো যেভাবে পেরেছে সবুজে ঘেরা গাছ-গাছালি, পাহাড় ও ফসলি জমি ধ্বংস করে গড়ে তুলেছে বসতি ও স্থাপনা। ফলে এখন বিপন্ন হতে চলেছে এখানকার জীব-বৈচিত্র্যও। আর নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে স্থানীয়রা।
রোহিঙ্গাদের কারণে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে এগুচ্ছে কক্সবাজার। তাই দ্রুত ধ্বংস হওয়া বনভূমিতে পরিকল্পিতভাবে বনায়নের উদ্যোগ নেয়ার দাবি পরিবেশকর্মীদের।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দিপু বলেন, পাহাড় রক্ষার জন্য এবং পরিবেশ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্য পরিকল্পিত কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি, বনায়ন করা হয়নি। আমরা মনে করি পরিকল্পিতভাবে বনায়ন করা উচিৎ।’
তবে কক্সবাজারের বিভাগীয় বন ককর্মকর্তার দাবি, পরিবেশের যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠাতে ক্যাম্প ও তার আশপাশের এলাকায় বনায়ন সৃজনের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।’
বনবিভাগের হিসাবে, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে উখিয়া ও টেকনাফের ছয় হাজার একর বনভূমিতে। তবে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর দাবি, তা আট হাজার একর বনভূমি 
ছাড়িয়েছে।
এদিকে উখিয়া-টেকনাফের ৩০ টি আশ্রয় শিবিরে ১২ লাখের অধিক রোহিঙ্গা অবস্থান করলেও ইতোমধ্যে গত ১৬ মাসে এসব শিবিরে নতুন করে জন্ম নিয়েছে অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা শিশু। অতিরিক্ত এই বিশাল জনগোষ্ঠীর চাপে কক্সবাজারবাসী এখন জর্জরিত। 
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কাজ করলেও মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে অগ্রগতি হচ্ছেনা বলেই মনে করেন পর্যবেক্ষক মহল।
আজকেও (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সফরে এসে রোহিঙ্গা শিবিরে ছুটে গেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত হলিউড অভিনেত্রী ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বিশেষ দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া নির্যাতিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখতে বাংলাদেশ দেশে এসেছেন হলিউড অভিনেত্রী ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বিশেষ দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। ৪ দিনের সফরে তিনি এখন কক্সবাজারে পৌঁছে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করছেন।  

সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে নভোএয়ারের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান বিশ্বখ্যাত এ অভিনেত্রী। তিনি আগামীকাল ৫ ফেব্রুয়ারি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।

জানাগেছে, ২০১৭ সালে তিনি রোহিঙ্গা নারীদের অসহায়ভাবে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার বর্ণনা শুনে ঢাকায় আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। 

ওই সালের নভেম্বরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ভ্যানকুভারে জাতিসংঘ পিসকিপিং মিনিস্টেরিয়েলে জোলি যৌন নিপীড়নের শিকার নারীদের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। তার আগে যৌন নিপীড়ন বিষয়ক এক বৈঠকে আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহফুজুর রহমান রোহিঙ্গা ইস্যুতে জোলির সমর্থন চেয়েছিলেন।

পরবর্তী সময়ে ভ্যানকুভারে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জোলি তার বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় প্রতিটি রোহিঙ্গা নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে।’ তার সত্যতা যাচাই করতে তিনি এখন রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করছেন এবং সেখানে  রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সাথে কথা বলছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অ্যাঞ্জেলিনা জোলি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ