শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
অমর একুশে গ্রন্থ’মেলা ২০১৯ শুরু হয়েছে। বইমেলা শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এটি পরিণত হয়েছে বাঙালির প্রাণের মেলা, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের মেলায়। প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমে বইপ্রেমীদের এই মিলনমেলা। লাখ লাখ মানুষ সমাবেত হয় এখানে। জমে ওঠে লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের জমজমাট আড্ডা।
১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসের সামনের বটতলায় চটের ওপর কলকাতা থেকে আনা ৩২টি বই সাজিয়ে বিক্রি শুরু করা সেই শ্রী চিত্তরঞ্জন সাহা আজ নেই। তিনিই আমাদের প্রাণের এই মেলার প্রারম্ভক। শুরুতে বইমেলা মাসব্যাপি হত না। ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সীমাদ্ধ ছিল। ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমি বইমেলা উপলক্ষে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশেষ হ্রাসকৃত মূল্যে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বই বিক্রির ব্যবস্থা করে। বাংলা একাডেমির পাশাপাশি মুক্তধারা প্রকাশনী, স্টান্ডার্ড পাবলিশার্স এবং আরও কয়েকজন বাংলা একাডেমির মাঠে নিজেদের প্রকাশিত বই বিক্রি শুরু করে।
১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বে নেন ড. আশরাফ সিদ্দিকী। তিনি বইমেলাকে বাংলা একাডেমির সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। তারপর ১৯৭৯ সালে মেলার সঙ্গে যুক্ত হয় চিত্তরঞ্জন সাহা প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি।
১৯৮৪ সালে পাঠক এবং প্রকাশকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বইমেলার সময়কাল বাড়িয়ে পুরো মাসব্যাপি করার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। ২০১৪ সাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রুপানন্তরিত করে বিশাল আয়তনে বইমেলার আয়োজন করে চলেছে।
বইমেলা চলাকালীন প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা সভা, কবিতা পাঠের আসর, লেখক আড্ডাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজ করে থাকে বাংলা একাডেমি। এছাড়া লেখককুঞ্জে লেখকদের সাথে পাঠকদের মন বিনিময়ের আয়োজনও করে থাকে। পাঠকেরা লেখকদের বইয়ের ব্যপারে আলোচনা সমালোচনা করে থাকে এই লেখককুঞ্জে। বইমেলার তথ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিনিয়ত নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের খবর, প্রতিদিন প্রকাশিত বই, লেখক ও প্রকাশকের নাম প্রকাশ করা হয়। বিভিন্ন রেডিও ও টেলিভিশন চ্যানেল মেলার মিডিয়া স্পন্সর হয়ে মেলার তাৎক্ষণিক খবরাখবর দর্শক শ্রোতাদের অবহিত করে।
বইমেলা উপলক্ষে শত শত বই প্রকাশিত হয়। এসব বইয়ের মধ্যে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, শিশু-কিশোর রচনা, প্রবন্ধ, আত্মজীবনী ও অনূবাদ বই। বিগত বছরগুলো শিশু-কিশোর উপযোগী বইগুলো পাঠক চাহিদার শীর্ষে থাকতে দেখা গেছে। এরপর উপন্যাস ও কবিতার বই বিক্রি হচ্ছে। বইমেলা উপলক্ষে প্রথম দিনই বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে। এসব বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বই হলো: আব্দুল জলিলের ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’ ভাষা আন্দোলন দিনাজুপুরের ইতিহাস ছাড়াও যতীন সরকার, কামল লোহানী, শওকত আলী, মুস্তফা নূরউল ইসলাম, সেলিনা হোসেনের মতো বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান ব্যক্তিদের ‘কিশোরবেলা’ প্রকাশ করেছে শুদ্ধ প্রকাশ। অন্বেষা প্রকাশ করেছে শামস সাইদের ‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভ্যুত্থান পব’ বেহুলাবাংলা প্রকাশন প্রকাশ করেছে বাসার তাসাউফ এর ‘স্বর্গগ্রামের মানুষ’ নামের মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস। শুদ্ধ প্রকাশ থেকে এই লেখকের গল্পগ্রš’ ‘পিতৃশোক ও দীর্ঘশ্বাসের গল্প’ বইটিও প্রকাশিত হয়েছে। একই প্রকাশনী থেকে এসেছে আহমেদ উল্লাহ্র ‘দুঃস্বপ্নের দেয়াল’ শিরিন ফেরদাউসের ‘জ্যোৎস্না-গন্ধা’ বইটি বের করেছে বেহুলাবাংলা। কথাসাহিত্যিক সোহেল নওরোজের উপন্যাস ‘গল্পটি শুনতে চেয়ো না’ প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স।
-বাসার তাসাউফ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।