Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্বের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক নির্বাচন

মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বীর প্রতীক | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

আত্মসমালোচনা করা কঠিন কাজ; তারপরও করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে অসহিষ্ণুতা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। তাই অসহিষ্ণু পাঠকের পক্ষ থেকে আক্রমণ হতে পারে, এ কারণেও অনেকে আত্মসমালোচনা করেন না; কারণ আত্মসমালোচনা অপ্রিয়। যা হোক, এই অনুচ্ছেদের মূল আলোচনায় ফিরে আসি। বাংলায় প্রবাদবাক্য আছে : ‘নামে কিবা আসে যায়’। যেমন কিনা ‘কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন’। মানে ছেলেটা কানা বা অন্ধ, কিন্তু বলা হচ্ছে, তার চোখের আকৃতি পদ্মফুলের মতো। কালো একটি ছেলের নাম ‘গোলাপ মিয়া’ রাখলেও ছেলেটির গায়ের রঙ নামের কারণে বদলে যায় না। কিন্তু এই প্রবাদবাক্যের তাৎপর্য সব জায়গায় এক নয়। ব্যস্ত পত্রিকার পাঠকের জন্য বিষয়বস্তুর দিকে ফোকাস করতে পারলে ভালো। তাই আজকের কলামের সম্মানিত পাঠকদের নিকট নিবেদন থাকবে, তারা যদি গত সপ্তাহের কলাম না পড়ে থাকেন, তাহলে যেন একবার কষ্ট করে পড়ে নেন।
৩০ ডিসেম্বর তারিখের সংসদ নির্বাচন, সমসাময়িক গণতান্ত্রিক বিশ্বের ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় নির্বাচন হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে গেছে। পৃথিবীতে কি শুধু বাংলাদেশেই কলঙ্কময় নির্বাচন হয়? উত্তর হলো, না। বাংলাদেশে বিতর্কিত নির্বাচন অতীতেও হয়েছে, ৩০ ডিসেম্বরও হলো। কিন্তু বাংলাদেশ একলা নয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ বা নির্বাচনী পর্যবেক্ষকগণ যেসব মানদÐের ওপর ভিত্তি করে কোনো একটি দেশের কোনো একটি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বা পার্লামেন্ট নির্বাচনকে বিতর্কিত বলে আখ্যায়িত করে থাকেন, তার বেশির ভাগই আমাদের নির্বাচনে উপস্থিত ছিল। কলঙ্কিত বা বিতর্কিত বা জালিয়াতিপূর্ণ বা প্রতারণাপূর্ণ নির্বাচনের তালিকাগুলোতে বাংলাদেশের একাধিক নির্বাচনের নাম যেমন আছে, তেমনি আরো বহু দেশের বহু নির্বাচনের নাম আছে। উদাহরণস্বরূপ কয়েকটি উল্লেখ করছি। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি প্রেসিডেন্টসিয়াল নির্বাচনও বিতর্কিত হিসেবে তালিকাভুক্ত, যথা- ১৮২৪, ১৮৭৬, ১৮৮৮, ১৯৬০, ২০০০ এবং ২০১৬ সালের নির্বাচন। পৃথিবীতে কিছু দেশ আছে যাদের অনেকগুলো নামের সাথে আমরা সুপরিচিত, আবার অনেকগুলোর সাথে সুপরিচিত নই। এ রকম কিছু দেশের নাম এখানে উল্লেখ করছি উদাহরণস্বরূপ; যে দেশগুলোর নাম কলঙ্কিত নির্বাচন প্রসঙ্গে বারবার যেকোনো তালিকায় বা আলোচনায় উঠে আসে। যথা- আর্মেনিয়া, সার্বিয়া, শাদ, রোমানিয়া, ইউক্রেন, ইথিওপিয়া, মিসর বা ইজিপ্ট, নাইজেরিয়া, জিম্বাবুয়ে, পাকিস্তান ইত্যাদি। আমাদের নির্বাচনের দু-একটি বৈশিষ্ট্য সীমিতভাবে আলোচনা করছি।
বাংলাদেশে অনেকগুলো টেলিভিশন চ্যানেল আছে। দু’টি চ্যানেল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন, যথা বিটিভি এবং বিটিভি ওয়ার্ল্ড। বহু দশক ধরেই বিভিটিকে মানুষ সাহেব-বিবি-গোলামের টিভি বা ‘সাহেব-বিবি-গোলামের বাক্স’ বলেই জানে। কারণ, এই টিভি চ্যানেলে সরকারের প্রশংসা ব্যতীত, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বক্তব্য ব্যতীত অন্য কোনো বক্তব্য প্রচারিত হয়নি বা হয় না। এই প্রবণতা শুরু হয়েছিল আশির দশকে যখন বাংলাদেশ সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। সেই প্রবণতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে পেতে গত দশ বছরে একটি প্রলয়ঙ্করী সর্বগ্রাসী রূপ পেয়েছে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রশংসা এবং প্রচারণা ছাড়া এই টিভির অন্য কোনো বড় কাজ দর্শকের চোখে পড়ে না। যত প্রকারের অনুষ্ঠান এখানে ডিজাইন করা হয়, সবগুলোরই মূলে থাকে সরকারের প্রশংসা প্রচার। আমাদের দেশের অন্য টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সবই ব্যক্তিমালিকানাধীন। ব্যক্তিমালিকানাধীন কোনো চ্যানেল পাওয়া একটি চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। কারণ, যে ব্যক্তি টিভি চ্যানেলের মালিক হতে চান, সরকারি দলের প্রতি তার রাজনৈতিক আনুগত্য মোটামুটিভাবে প্রমাণিত বা মোটামুটিভাবে নিশ্চিত হতে হবে। চ্যানেল পাওয়ার পর ওই চ্যানেলে প্রচারিত অনুষ্ঠান বা বক্তব্যের মাধ্যমে সরকারি দলের প্রতি আনুগত্য প্রমাণ অব্যাহত থাকতে হবে। একটি চ্যানেলের মালিক হওয়া সহজ কথা নয়। অর্থসম্পদ লাগবে, রাজনৈতিক কানেকশন লাগবে। বাংলাদেশের অন্যতম পুরনো ব্যক্তিমালিকানাধীন চ্যানেল হলো একুশে টিভি। তার মালিকানায় পরিবর্তন এসেছে কম-বেশি দুই বছর আগে এবং তা এসেছিল ‘ঝটিকা আক্রমণ’ পদ্ধতিতে। যমুনা টিভি চালু হওয়ার আগে প্রায় এক দশকের বেশি সময় বিভিন্ন প্রকারের বাধাবিপত্তি ও মামলা-মোকদ্দমা মোকাবেলা করেছে এবং আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমেই চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পেয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের দু-চার দিন আগে ঢাকায় এক আসনে একটি হোটেলে সাংবাদিকদের ওপর মারাত্মক আক্রমণ করা হয়েছিল। নির্বাচনের এক-দুই দিন আগে যমুনা টিভির প্রচারণা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল কারিগরি বল প্রয়োগ করে। পাঁচ-ছয় বছর আগে হেফাজতে ইসলামের মতিঝিল আন্দোলনের সময় দিগন্ত টিভি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল এবং পরে ইসলামিক টিভিও বন্ধ করে দেয়া হয়। চ্যানেল-১ নামে একটি টিভি চ্যানেল ছিল। সেটি এখন থেকে প্রায় আট-নয় বছর আগে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ কথাগুলো দিয়ে বোঝাতে চাচ্ছি, টেলিভিশনগুলো স্বাধীন নয়, স্বাধীন হওয়া সম্ভব নয়। যদি কোনো গবেষণা সংস্থা কয়েকটি আঙ্গিকে গবেষণা করে, তাহলে আমার বক্তব্যের বাস্তবতা পাবে। বক্তব্য হলো এই যে, নির্বাচনের আগে দুই মাস এবং নির্বাচনের দিন প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী, সুপরিচিত ব্যক্তিবর্গ তথা হেভিওয়েটরা কতটুকু টেলিভিশন কাভারেজ পেয়েছেন এবং বিরোধী শিবির তথা বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কতটুকু কাভারেজ পেয়েছে? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পাঁচ-ছয় মাস আগে থেকেই তার দলের পক্ষে ভোট চেয়ে যাচ্ছিলেন; বিভিন্ন জনসভায় হাত তুলে মানুষকে ওয়াদা করাচ্ছিলেন এবং টেলিভিশনে এই দৃশ্যগুলো দেখানো হতো। এটা ছিল টেলিভিশন দর্শকদের ওপর মনস্তাত্তি¡ক চাপ প্রয়োগের একটি পন্থা। সরকারের অনুকূলে প্রচারণা এক বিষয় এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিকূলে প্রচারণা আরেক বিষয়। ২৭ বা ২৮ বা ২৯টি ব্যক্তিমালিকানা টেলিভিশন চ্যানেলের মধ্যে কিছু চ্যানেল কট্টরভাবে সরকারপন্থী। এইরূপ কট্টরভাবে সরকারপন্থী টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রায় সারাক্ষণই বিরোধী শিবিরের বিরুদ্ধে প্রচারণা উপস্থাপন করত। অর্থাৎ একটি দেশে মিডিয়া স্বাধীন হওয়া প্রয়োজন, এটা যেমন আকাক্সিক্ষত, তেমনি এটাও সত্য, মিডিয়ার মধ্যেও স্বাধীন থাকার আকাক্সক্ষা থাকতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের মিডিয়ার একটি অংশ স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার আকাক্সক্ষাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কট্টরভাবে সরকারপন্থী হয়ে গেছে, এটা দুঃখজনক। কিন্তু এর বিহিত আবিষ্কার করাও কঠিন। বাংলাদেশে একটি অতি আশ্চর্যজনক বাস্তবতা আবিষ্কার হয়েছে; কট্টরভাবে বা উগ্রভাবে ‘সরকারপন্থী’ টেলিভিশনগুলো মানুষের মনের ওপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। কারণ, মানুষ তাদেরকে ব্র্যান্ডিং করে ফেলেছিল সরকারপন্থী হিসেবে। অতএব তারা যা-ই বলত, সেটাকে সরকারের প্রচারণা ধরে নিত। নির্বাচনের পরও কট্টরভাবে সরকারপন্থী মিডিয়া বদ্ধপরিকর এটা প্রমাণ করতে যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হয়নি।
২০১৪ সালের জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের অনিয়মগুলো দেশবাসী ও পৃথিবীর সামনে উপস্থাপিত হয়েছিল সাহসী গণমাধ্যমকর্মী, তথা সাহসী ও পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিশ্বস্ত সাংবাদিকগণের কারণেই। যেসব টিভি সাংবাদিক ক্যামেরা ও রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে এরূপ দায়িত্ব পালন করেছিলেন, যেসব পত্রিকার সাংবাদিক রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে এরূপ দায়িত্ব পালন করেছিলেন; তাদের অনেককেই সাহসিকতার খেসারত তথা মূল্য দিতে হয়েছে। অনেক মুদ্রিত পত্রিকা বা অনলাইন পত্রিকা সাধারণ মানুষের মোবাইলে ধারণকৃত ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করেছে। এই ‘সাধারণ মানুষ’ হলেন সিটিজেন জার্নালিস্ট বা নাগরিক সাংবাদিক। যেসব পত্রিকা বা অনলাইন এরূপ প্রকাশ করেছে, তারাও মোটামুটি কর্তৃপক্ষীয় ধমক পেয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেন মিডিয়া এমন কিছু প্রকাশ করতে না পারে যার কারণে সরকার বা নির্বাচন কমিশন বিব্রত হবে, যার কারণে কারচুপি প্রকাশিত হতে পারে; সেজন্য সরকার তথা নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দু-তিন মাস আগেই কিছু পদক্ষেপ নেয়। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক একটি নির্দেশ জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। পরে সেটা শিথিল করা হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি। বেশির ভাগ কেন্দ্রে কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রিত ছিল সাংবাদিকদের গতিবিধি। শোনা যায়, বহু টিভি কর্তৃপক্ষ ও পত্রিকা কর্তৃপক্ষ তাদের সাংবাদিককে এ বিষয়ে সাবধান করে দিয়েছিলেন। অর্থাৎ সততা ও স্বচ্ছতার সাথে পেশাগত দায়িত্ব পালন এবং সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলা- এর মাঝখানে একটা ক¤েপ্রামাইজ তথা সমঝোতার দিকে সবাই ইশারা করেছেন। তারপরও ইচ্ছায় হোক, অনিচ্ছায় হোক, বহু সাংবাদিক বিপদে পড়ে যান। অনেক সাংবাদিক মোবাইল ফোন নিয়ে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে ভোটারদের পাশাপাশি বাধার মুখে পড়েছেন। এ ছাড়াও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক মারধরের শিকার হয়েছেন। ভাঙচুর করা এবং কেড়ে নেয়া হয়েছে তাদের ক্যামেরা বা মোবাইল ফোন। দুর্ভাগ্যের বিষয়, নির্বাচনের দিন সাংবাদিকদের ওপর এসব হামলার ঘটনা পরদিন প্রকাশিত, বেশির ভাগ গণমাধ্যমের সংবাদে খুব একটা গুরুত্ব পায়নি। এটাও নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের প্রকাশ মাত্র। অনেক ঘটনার মধ্যে একটি ঘটনা উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করছি। রাজধানীর ঢাকা-১২ নির্বাচনী আসনের অন্তর্গত মগবাজার বিটিসিএল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের সামনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে মারাত্মক হামলার শিকার হয়েছিলেন দৈনিক মানবজমিনের সিনিয়র রিপোর্টার কাফি কামাল। সেদিন ঘটনাক্রমে অন্য তিন সাংবাদিক কামালের ওপর আক্রমণস্থলের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। একজন সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছেন, এ খবর কানে আসার কারণেই তারা ঘটনাস্থলের দিকে দ্রæত গমন করেন নিজেদের নিরাপত্তার দিকে ভ্রুক্ষেপ না করেই। ওই তিনজন সাংবাদিকই হামলাকারীদের হাত থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় কাফি কামালকে উদ্ধার করেছিলেন। বর্তমানে তিনি নানারকম শারীরিক জটিলতাসহ মানসিক ট্রমায় ভুগছেন। হামলার সময় তার হাত থেকে কেড়ে নেয়া দামি আইফোন সেটটিও এখন পর্যন্ত ফেরত পাননি তিনি।
প্রার্থীগণ প্রচারণার জন্য কিছু প্রথাগত কাজ অনুসরণ করেন, যথা ইউনিয়ন ভিত্তিক বা ইউনিয়নের মধ্যে ওয়ার্ড ভিত্তিক অথবা ভোটকেন্দ্র ভিত্তিক নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন করেন। ক্যাম্প মানে হলো অতি অস্থায়ী ঘর, বাঁশের বেড়ার ঘর এবং অস্থায়ী ছাউনি। দেয়ালগুলো সাজানো থাকে পোস্টার দিয়ে। ভেতরে কিছু হালকা-পাতলা চেয়ার-টেবিল থাকে যেন কর্মী ও শুভাকাক্সক্ষীগণ বসতে পারে, কথাবার্তা বলতে পারে, চা-পানি খেতে পারে। এ ধরনের নির্বাচনী ক্যাম্পগুলো হয় কর্মীদের মিলনস্থান এবং মতামত বিনিময়, দৈনন্দিন কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদির কেন্দ্রবিন্দু। প্রার্থীরা নিজেদের জন্য পোস্টার ছাপান; বিধি মোতাবেক সেটি সাদা-কালো হতে হয়; এগুলো কোনো দেয়ালে আঠা দিয়ে লাগানোতে নিষেধাজ্ঞা আছে; রশির সাথে ঝুলাতে হয়। প্রচারণার আরেকটি আঙ্গিক হলো মাইকে করে ভোট চাওয়া; সুর করে ছন্দে ছন্দে অথবা সাদামাটা ভাষায় প্রার্থীর নাম নিয়ে, প্রতীকের নাম নিয়ে গাড়িতে বা রিকশায় করে এলাকায় প্রচারণা চালানো হয়। এবার বেশির ভাগ নির্বাচনী এলাকা বা আসনে সরকারপন্থী প্রার্থীদের পক্ষ থেকে শক্তি প্রয়োগ করে, বল প্রয়োগ করে, ভীতি প্রদর্শন করে ধানের শীষের পক্ষের প্রার্থীদের প্রথাগত প্রচারণায় দারুণ বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্প করতে দেয়া হয়নি অথবা করা হলেও ভেঙে ফেলা হয় অথবা জ্বালিয়ে ফেলা হয় এবং বলা হয়, আর যেন ক্যাম্প না বানায়। সিএনজি তথা বেবিট্যাক্সি বা অটোরিকশা নামক তিন চাকার গাড়িতে বা রিকশায় মাইক লাগিয়ে গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে প্রচারণার সময় বহু গাড়িঘোড়া ভাঙা হয়েছে, মাইক ভাঙা হয়েছে এবং যারা প্রচারণার কাজে ছিল তাদেরকে মারধর করা হয় এবং অনেককেই গ্রামছাড়া করা হয়েছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে দু-তিন দিন পর পুলিশ ধরে নিয়ে যায় এবং কোনো-না-কোনো বাহানায় মামলা দায়ের করা হয়। প্রার্থীদের পোস্টার লাগানো হয়, সরকারপন্থী লোকগণ এই পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে। যেহেতু পোস্টারগুলো রশিতে টাঙানো থাকে, তাই রশির যেকোনো এক পাশে গোড়ায় কেটে দিলেই রশিটি পোস্টারসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং অন্তত দশটি পোস্টার অকেজো হয়ে যায়। পোস্টার লাগানোর সময় ধানের শীষের বহু কর্মীকে মৌখিকভাবে নিষেধ করা হয়, বহু কর্মীকে মারধর করে নিষেধ করা হয়। ফলে বহু নির্বাচনী আসনে ধানের শীষের প্রার্থীদের পোস্টার ব্যাপকভাবে দেখা যায়নি। ১০-১৫ বছর ধরে ডিজিটাল ব্যানার ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। পোস্টারের ক্ষেত্রে যা হয়েছে, ডিজিটাল ব্যানারগুলোর ক্ষেত্রেও প্রায় একই কায়দায় নিষেধাজ্ঞা, হামলা, মারধর, ছিঁড়ে ফেলা ইত্যাদি ঘটেছে। প্রার্থীদের প্রচারণার আরেকটি দিক হলো জনসংযোগ করা ও মিছিল করা। পায়ে হেঁটে জনসংযোগ করলে সাথে মানুষ জমতে জমতে ছোটখাটো মিছিলের মতো হয়ে যায়। শুধু মিছিলের মাধ্যমেও জনসংযোগ হয়ে থাকে। বিপুলসংখ্যক আসনে ধানের শীষের প্রার্থীদের জনসংযোগের সময় ও মিছিলের সময় বাধা ও আক্রমণ আসে। অনেক ক্ষেত্রেই জনসংযোগ ও মিছিল করার আগেই সরকারপক্ষের লোকেরা জানিয়ে দেয়, যেন ধানের শীষের প্রার্থী ও তার লোকেরা জনসংযোগ বা মিছিলে না নামে এবং হুমকি দেয়া হয়, নামলে খবর আছে। বহু ক্ষেত্রে এই হুমকি উপেক্ষা করে ধানের শীষের প্রার্থীগণ জনসংযোগ ও মিছিলে নেমেছেন এবং নামার পর আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
নির্বাচনে অনেক রকমের অনিয়ম হয়। কয়েকটি উল্লেখ করছি। এক. ভোটের দিন সকালে মানুষকে নিজেদের বাড়ি থেকে বের হয়ে ভোটকেন্দ্রের দিকে আসার সময় বাধা দেয়া। দুই. ভোটকেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছতে পারলেও পোলিং বুথ বা ভোটকক্ষে ঢুকতে বিভিন্ন প্রকার বাধা দেয়া। তিন. ভোটের দিনের আগে ও ভোটের দিন মানুষকে ভয় দেখিয়ে অথবা নগদ টাকা ঘুষ দিয়ে বা নগদ টাকা উপহার দিয়ে সুনির্দিষ্ট মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করা বা প্রলুব্ধ করা। চার. ভোটকক্ষের ভেতরে একজন ভোটারের ওপর এমনভাবে চাপ সৃষ্টি করা যেন তিনি সুনির্দিষ্ট মার্কায় সিল মারেন। পাঁচ. ভোটারগণের ব্যালট পেপার সঠিক ভোটারকে না দিয়ে নিজেদের পছন্দের মানুষের হাতে দেয়া, যেন তারা সুনির্দিষ্ট মার্কায় সিল মেরে ওই মার্কার অনুকূলে ভোট বাড়াতে পারেন। ছয়. ভোট শুরু হওয়ার আগে অবৈধভাবে ব্যালট পেপারগুলোতে সিল মেরে বাক্সে ভরা এবং গোনার সময় এই বাক্সগুলোকে আগে আগে গোনা। সাত. অবৈধভাবে ভর্তি করা ব্যালট বাক্স লুকিয়ে রাখা এবং দিনের বেলা স্বচ্ছ বাক্সে ভোট নেয়া, কিন্তু ভোট গণনার সময় বাক্সগুলো অদলবদল করে ফেলা। আট. ভোট গোনার সময় ক্ষমতাসীন দলের মার্কা বেশি বেশি গোনা যথা- ১, ২, ৩, ৫, ৬, ৭, ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৯, ২০, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৫০ এরূপ। অপরপক্ষে সরকারবিরোধী পক্ষের ব্যালটগুলো কম করে গোনা যথা- ১, ২, ৩, ৩, ৪, ৫, ৬, ৬, ৭, ৮, ৯, ৯, ৯ এরূপ। নয়. জোর করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে, শক্তি প্রয়োগ করে বিরোধী পক্ষের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া; যাতে করে কী নিয়মে ভোট হলো তার কোনো সাক্ষী না থাকে এবং কী নিয়মে গণনা হলো তার কোনো সাক্ষী না থাকে এবং যেমন ইচ্ছা তেমন ফল প্রকাশ ও প্রচার করা যায়।
এবারে আটটি বিশেষ অনিয়ম ছিল। প্রথম অনিয়ম হলো, তিন-চার-পাঁচ-দশ সপ্তাহব্যাপী পরিকল্পিত অভিযানের মাধ্যমে এমন ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা, যেন ধানের শীষের পক্ষের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ও সংগঠক শ্রেণীর ব্যক্তিরা বাড়িতে থাকতে না পারেন; এলাকায় থাকতে না পারেন। দ্বিতীয় অনিয়ম হলো, ধানের শীষের পক্ষের প্রার্থীদের প্রচারণায় সর্বপ্রকার বাধার সৃষ্টি করা (এই কলামেরই ওপরের একটি অনুচ্ছেদে বিস্তারিত আলোচনা আছে)। তৃতীয় অনিয়ম হলো, ২৯ ডিসেম্বর দিনের শেষে সন্ধ্যার পরপরই তথা রাত্রিবেলা ভোটকেন্দ্র দখল করা এবং দখলের পর অবৈধভাবে ব্যালটে সিল মারা ও ব্যালট বাক্স ভর্তি করা; কিছুমাত্র ব্যালট ও কিছুমাত্র বাক্স অবশিষ্ট রাখা। চতুর্থ অনিয়ম হলো, এলাকায় এমন ত্রাসের সৃষ্টি করা বা এমন ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা, যেন ভোটের দিন মানুষ ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না পারে। পঞ্চম অনিয়ম হলো, দিনের বেলায়ও অবশিষ্ট ব্যালট পেপারগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো সিল মারা এবং বাক্স ভর্তি করা। ষষ্ঠ অনিয়ম হলো, ধানের শীষের পক্ষের যে কয়জন এজেন্ট বহু কষ্টেসৃষ্টে বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কেন্দ্রে ঢুকতে পারল, তাদেরকে অতি শিগগিরই বের করে দেয়া। সপ্তম অনিয়ম হলো, নিজেদের ইচ্ছামতো ভোটের ফলাফল সাজানো ও প্রকাশ করা। অষ্টম এবং গুরুত্বপূর্ণগুলোর মধ্যে শেষ অনিয়ম হলো, এই পুরো সিরিজ-অনিয়মের প্রক্রিয়ায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রাখা।
লেখক : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পাটি



 

Show all comments
  • T.M.ferdausur Rahman ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনকে যারা কলঙ্কিত ও ভুয়া না বলে, ইনিয়ে বিনিয়ে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করে, আসলে তারাই ভুয়া এবং কলঙ্কিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Himu ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 1
    আপনারা যা বলেছেন আমরা জনগণ তাই দেখেছি। কিন্তু সমস্যা হল ক্ষমতার স্বাদ পেলে সবাই পাল্টে যায়। যেমন পাল্টে গেছে ইনু, মেনন ও দিলিপ বড়ুয়ারা।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    Each people of Bangladesh asked for anyone Truly or dial any Number of Bangladesh they will say what happened in national Election 2018.....
    Total Reply(0) Reply
  • Jatirdada ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    হায় হায় দেশের কি হবে? আমি অত কিছু বুঝিনা শান্তিপূর্ন ভাবে বাঁচতে চাই!
    Total Reply(0) Reply
  • রুপালী ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    এ নির্বাচন হবে ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়
    Total Reply(0) Reply
  • রুপালী ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    এ নির্বাচন হবে ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়
    Total Reply(0) Reply
  • Mehedi Al Amin ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    No doubt about it.
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    So, the only solution for the end of the debate, and for long term peace in Bangladesh is - to arrange free, fair and neutral national election under non-political neutral care taker govt. I think no party will be loser from the system.
    Total Reply(0) Reply
  • ডাঃমোহাম্মদ মেহেদী হাসান ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    কোনো কোনো আসনে প্রার্থী একটি ভোটও পায়নি অর্থাৎ নিজের ভোটও নিজে পায়নি,কি তামাশা ! আবার অনেকে বলছেন ৩০ তারিখের ভোট ২৯ তারিখেই হয়ে গেছে৷
    Total Reply(0) Reply
  • M A Karim ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    50% vote were bonus for designated candidates.
    Total Reply(0) Reply
  • Md Forhad Sheikh ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
    very tainted election.
    Total Reply(0) Reply
  • mohammad rahman ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
    বিনা ভোটের ইলেকশনের পর আওয়ামি লীগ এবার করল রাতের ভোটের ইলেকশন
    Total Reply(0) Reply
  • Sengupta ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
    খুব সহসাই বিলুপ্ত হচ্ছে ২০ দলীয় জোট, বাম গণতান্ত্রিক জোট আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।আমাদের ধারণা ঐ সব জোট একটা এডহক ব্যবস্থা।সংসদ অধিবেশন শুরুর পরে দ্বন্ধ কলহে এসব জোটের কোন খোঁজ থাকবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • অবয়ব ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
    প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করতেই বললেন, মাত্র ১০০টি ভোট পড়েছে। কিন্তু ব্যালট বাক্স ভর্তি এত ভোট কোথা থেকে এল?’
    Total Reply(0) Reply
  • শেখ সায়ফুল্লাহ ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
    ছোট বেলা থেকেই শুনে আসছি জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। এবার আমাদের দেখানো হল জনগণ আসলেই কোন ক্ষমতা রাখে না। এখন ক্ষমতা রাখে পুলিশ‍! এর আগের নির্বাচনগুলোতেও ভোট ডাকাতির কথা শুনেছি। ছবি দেখেছি ভোট ডাকাতির, খবর পড়েছি। ভিডিও দেখেছি। কিন্তু সেখানে দলীয় লোকেরা মিলে-মিশে ভোট ডাকাতি করেছে। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিল সহযোগীর ভূমিকায়। কিন্তু এবার ক্ষোদ পুলিশ নেমেছিল ভোট ডাকাতি করতে। বিভিন্ন কেন্দ্রে পুলিশ ঢুকতে দিচ্ছিলন না সাধারণ ভোটারদের, তার ভিডিও দেখলাম, পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে শান্ত-শিষ্ট একটা ভোটকেন্দ্রকে আতঙ্কের জনপদ বানিয়ে দখল করে নিল, সেটাও দেখলাম! এর পরও একে যারা নির্বাচন বলে তাদের উর্বর মস্তিস্কের জন্য দুঃখিত হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। - - - আওয়ামীলীগ এখন ক্ষমতা এককভাবে কুক্ষিগত করে নিয়েছে। ক্ষমতা খুব খারাপ জিনিস। আর এরকম একক ক্ষমতা আরো ভয়ঙ্কর জিনিস। বিগত ১০ বছরের আওয়ামিলীগের যে খুনী চেহারা দেখেছি এবার সেটা পৈশাচিকতায় রূপ নিতে বাধ্য। নির্বাচনের পর নোয়াখালীর সুবর্ণচরের ঘটনা তার স্বাক্ষী! এই পৈশাচিকতা রুখতে হলে সবাইকে অন্তত দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। অন্যথায় কেউই এই পৈশাচিকতার হাত থেকে রক্ষা পাবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Saifur Sahin ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
    দেশের ভালোটা আমরাই বুঝি, তোমাদের দরকার নেই !! তোমার ভোটটাও থাক আমারি, আমরাই দিয়ে দেই !!
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
    ৩০ তারিখে কি আসলে ভোট উৎসব হয়েছে নাকি ভোট ডাকাতি হয়েছে? এই নিয়ে একটা জরীপ ইনকিলাব করতে পারে। তবে বামদল গুলো যা বলছে তা কিন্তু ভুল না, এবারের নির্বাচন আসলে সব দিক থেকেই ডাকাতির নির্বাচন হয়েছে। ভোট চুরি মানে হলো লোকচক্ষুর আড়ালে ভোট দেয়া আর ভোট ডাকাতি হলো প্রকাশ্যে সবার সামনে নিজের মার্কায় সিল মারা। ভাবতে অবাক লাগে, এমন নির্বাচন করে ইসি, পুলিশ পার্টি করে বেড়ায়। আর আমরা এতোসব দেখেও কোন প্রতিবাদ করতে পারছি না! তবে আশার কথা হলো এই যে, সব অন্ধকারের শেষে কিন্তু আলো থাকে। দেখা যাক আর কতদিন অপেক্ষায় থাকতে হবে ঐ আলো দেখার জন্যে।
    Total Reply(0) Reply
  • শাহাদাত ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
    আওয়ামীদের যদি ন্যূনতম লজ্জা শরম থাকে তাহলে বলতে পারে না তারা সুষ্ঠ নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। একমাত্র আওয়ামীরা ছাড়া দেশে কেউ বলে না যে এই নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে, সবাই এক বাক্যে বলছে এটা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কলংকময় ভোট ডাকাতি ও প্রহসনের নির্বাচন।
    Total Reply(0) Reply
  • তরিকত ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
    তার মানে নির্বাচন দুই প্রকার একটা হলো ভোটার বিহীন এবং আরেকটা হলো জাল ভোটের৷
    Total Reply(0) Reply
  • Lekhon ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১২ এএম says : 0
    ভোটের দিন আমার এক পরিচিত এলাকার ভাই সাথে দেখা হল । তিনি ছাত্র লীগ করে । চোখে তার ঘুম ঘুম ভাব । বললাম চোখে ঘুম কেন ভাই ?একটু হেসে বললো ৩০ তারিখের ভোটারদের কাজ আমরা ২৯ তারিখে রাত্রে করে ফেলছি ।
    Total Reply(0) Reply
  • মিরাজ হোসেন ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
    আমি নিজে সেন্টারের প্রথম ভোটার ছিলাম। ঢুকার টাইমে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আমাকে ভুল দিক দেখিয়ে দেয়। পরে ঘুরে এসে নিজের বুথ পেয়ে ৮.১০ এ ভোট দিতে যেয়ে দেখি বাক্স অর্ধেক ভরা। আগে কাউকে দেখি নাই, পরেও ১ জন ছিলো মাত্র। কেন্দ্রে তো ছবি তোলা যায় না- কীভাবে প্রমান রাখবো?
    Total Reply(0) Reply
  • মিরাজ হোসেন ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
    আমি নিজে সেন্টারের প্রথম ভোটার ছিলাম। ঢুকার টাইমে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আমাকে ভুল দিক দেখিয়ে দেয়। পরে ঘুরে এসে নিজের বুথ পেয়ে ৮.১০ এ ভোট দিতে যেয়ে দেখি বাক্স অর্ধেক ভরা। আগে কাউকে দেখি নাই, পরেও ১ জন ছিলো মাত্র। কেন্দ্রে তো ছবি তোলা যায় না- কীভাবে প্রমান রাখবো?
    Total Reply(0) Reply
  • আন্দালিব ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
    ছোটখাটো কিছু অব্যবস্থাপনাকে বড় করে পুরো নির্বাচনটিকে বিতর্কিত করার দায়ে এদের সবার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত, অন্তত যে লক্ষ কোটি ভোটার লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিলো তাদের ভোটাধিকারকে সন্দেহের ট্যাগ লাগানোর অসম্মান করায় তাদের বিচার হওয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • nasiruddin ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
    আগে বলতে শুনেছি আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশী তাকে দিবো । কিন্তু বর্তমান আওয়ামীলীগ এটাকে উল্টো দিকে নিয়ে গেছে। তারা বলে আমার ভোট আমি দেবো, তোমার ভোটও আমি দেবো।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
    কিসের কলংকিত নির্বাচন? কলংকিত হলে ২৯৯ টা আসন আওয়ামী লীগই পেত। ১৯৭৩ সালে বিরোধি দল পেয়েছিল ৭টা আসন। এবার একটি আসন বেশি পেয়েছে! এই খুশিতে বিএনপির উচিত শোকরানা মিলাদ পড়া!!
    Total Reply(0) Reply
  • বি চৌধুরী ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৪ এএম says : 0
    সবকিছুতেই রোলমডেল ! তাই এবার গণতন্ত্র হত্যা করে কলংকিত নির্বাচনের রোলমডেল হলো.
    Total Reply(0) Reply
  • সত্য কথা কে বলে ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৪ এএম says : 0
    ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ এরূপ নির্বাচন করেছিল এবং এ দেশের মানুষ তা প্রায় ভুলেই গিয়েছিল। ২০১৮ তে আওয়ামী লীগ আবারো দেশের মানুষকে তাদের অতীত জানার আগ্রহী করে দিল।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৪ এএম says : 0
    এটা কোনো নির্বাচনই ছিল না।এতবড় প্রহসন এর আগে কখনও হয়নি।
    Total Reply(0) Reply
  • মো: বাপ্পি হোসেন। ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৪ এএম says : 0
    প্রথম থেকে পড়ে মনে হচ্ছিল ঠিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন,যুক্তি দিয়ে দিয়ে এগিয়ে যাওয়া আমাকে কিছু ভাবতে সাহায্য করছিল,কিন্তু হতাট চিরাচরিত লেখাই ফিরে গেলেন,শেষের কথাগুলোর প্রমাণ খুব একটা জরালো হয়েছে বলে বোধ করি না। তবুও লেখাটি পড়ে ভাল লেগেছে।ধন্যবাদ,স্যার।
    Total Reply(0) Reply
  • Latiful caretaker govt. ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ৪:৫০ এএম says : 0
    Your humbly submission is supposed to have taken instances from 2001 how 4 party alliance came to power using and abused election system connivance with full support of latiful rahman shabuddin. Ballot of boat symbol were received in the crops feild. Thats why BNP and its alliance knows how poll gets rigging. Janab I like you but I cant accept your averments innthis regard.
    Total Reply(0) Reply
  • Rayhan ali ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ৮:৪৭ এএম says : 0
    False Election.
    Total Reply(0) Reply
  • jahid ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:২৫ পিএম says : 0
    এটাকেই বলে মীরজাফরই মার্কা নির্বাচন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন