মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
২০১৮ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ২৬ জন ব্যক্তির সম্পদের পরিমাণ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের সম্পদের সমান। পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি অ্যামাজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেফ বেজোসের আয়ের একশ’ ভাগের এক ভাগ প্রায় ১১ কোটি মানুষের দেশ ইথিওপিয়ার মোট স্বাস্থ্য বাজেটের সমান। মুকেশ আম্বানির আয়ের পরিমাণ ভারতের স্বাস্থ্য খাতে কেন্দ্র ও রাজ্যের বাজেটের চেয়ে বেশি। এমন আরও অবিশ্বাস্য সব পরিসংখ্যান উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অক্সফামের সমীক্ষায়। সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অক্সফামের সমীক্ষা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার বছরের পর ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিলিওনিয়রদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এই ধনীদের সমন্বিত সম্পদ বৃদ্ধি তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো, সমন্বিতভাবে তাদের সম্পদ দিনে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে, বিশ্বে সম্পদের দিক থেকে একদম নিচের কাতারের ৩৮০ কোটি মানুষের মোট সম্পদ সমন্বিতভাবে ১১ শতাংশ করে হ্রাস পেয়েছে। সংস্থাটির মতে, ধনীদের সম্পদের ওপর মাত্র ০ দশমিক ৫ ভাগ কর বাড়ালেই যত টাকা পাওয়া যাবে, তা দিয়ে যে ২৬ কোটি শিশু পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে না, তাদের স্কুলে ফেরত নেয়া সম্ভব এবং স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আরো ৩৩ লাখ মানুষের জীবন বাঁচানো যাবে।
সম্পদের বণ্টনের বৈষম্য তুলে ধরতে ভারতের উদাহরন দিয়ে বলা হয়, ভারতের ১ শতাংশ ধনী ব্যক্তির হাতেই রয়েছে ৫১.৫৩ শতাংশ জাতীয় সম্পদ। আবার ১০ শতাংশ ধনীর হাতেই রয়েছে দেশের মোট সম্পদের ৭৭.৪ শতাংশ। সেখানে অর্থনীতির সূচকের নীচের দিকে থাকা ৬০ শতাংশ জনসংখ্যার হাতে রয়েছে মাত্র ৪.৮ শতাংশ জাতীয় সম্পদ। আবার দেশের মাত্র ৯ জন ধনীর সম্পত্তির পরিমাণই দেশের ৫০ শতাংশ জনসংখ্যার মোট সম্পদের সমান। ২০১৮ সালে সেখানে এক শতাংশ ধনীর প্রতিদিনের আয় বেড়ে হয়েছে ২২০০ কোটি টাকা। দেশের কোটিপতিদের সম্পত্তি বেড়েছে ৩৯ শতাংশ। অন্য দিকে আয় সূচকের নীচের দিকে থাকা দেশের অর্ধেক জনসংখ্যার আয় বেড়েছে মাত্র ৩ শতাংশ।
এ বিষয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে অক্সফ্যামের ইন্টারন্যাশনাল এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর উইনি বায়ানিমার বলেন, ‘দেশের এক শতাংশ ধনী ব্যক্তির সঙ্গে বাকি জনসংখ্যার আয় এবং সম্পত্তির ব্যবধান কমাতে না পারলে এবং ভারসাম্য আনতে না পারলে গোটা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও গণতান্ত্রিক কাঠামোই ভেঙে পড়বে।’
অক্সফ্যামের ভারতের সিইও অমিতাভ বেহার আরও স্পষ্ট করেছেন বিষয়টি। ‘সমীক্ষা রিপোর্টে এটা স্পষ্ট, ধনী-গরিবের পার্থক্য কতটা। অর্থাৎ আর্থিক বৈষম্য কতটা প্রকট। সরকার এক দিকে চিকিৎসা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ কমাচ্ছে, অন্য দিকে ধনীদের কর কমিয়ে বা ছাড় দিয়ে বৈষম্য আরও বাড়িয়ে তুলছে। আর সেই বোঝা চাপছে গরিব ও নিম্নশ্রেণির গরিব-মধ্যবিত্ত মানুষের উপর।’
সারা বিশ্বের নিরিখে ধনীতম অংশের সম্পত্তি বৃদ্ধির হার ১২ শতাংশ। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার গরিব অর্ধেকের আয় কমেছে ১১ শতাংশ।
কোনও নির্দিষ্ট দেশে এবং সারা বিশ্বে আর্থিক বৈষম্য কতটা, তা নিয়ে প্রতি বছরই এই সমীক্ষা করে অক্সফাম। এই বৈষম্যের আশু বিপদ এবং তার মোকাবিলা কী ভাবে করা যায়, তা নিয়েও আলোকপাত করে এই সংস্থা।
অক্সফামের দাবি, সমীক্ষার ক্ষেত্রে সর্বসমক্ষে পাওয়া সর্বশেষ সরকারি তথ্যগুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ক্রেডিট সুইস ওয়েল্থ ডেটাবুক, ফোর্বসের বিলিয়নেয়ার্স লিস্টের মতো রিপোর্ট বা তথ্য। সূত্র: আল-জাজিরা, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।