Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মাঠে মাঠে বাহারি সবজির সমাহার

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, চান্দিনা (কুমিল্লা) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ক্রমেই বাড়ছে শীতের পদধ্বনি। শুভ্র কুয়াশার চাদর উপেক্ষা করে সবজি চাষে মত্ত কুমিল্লার কৃষক। লতা-পাতা আর ঘাসে চকচক করছে ভোরের শিশির। মাঠে মাঠে বাহারি সবজির খেলা। টমেটো, আলু, কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, করলা, মরিচ ও ধনেপাতার গন্ধে আমোদ চারদিকে। সবুজের সমারোহে একাকার মাঠের পর মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন সবুজের সমারোহ। নানা ধরনের সবজি চাষ করে কৃষকরা তা বাজারজাতকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সবুজ শাকসবজি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ জেলা কুমিল্লা। শীতের মৌসুমী সবজির ব্যাপক ফলন হয় জেলার বিভিন্ন জায়গায়। উপযোগী উর্বর মাটি ও সেচ সুবিধার কারণে মাঠ জুড়ে সবুজের হাসিতে হাসে চাষিরা। এখন কুমিল্লার মাঠে মাঠে শীতকালীন সবজির ছড়াছড়ি। ফলনও হয়েছে ভাল। বাজারেও উঠতে শুরু করেছে এসব সবজি।

কুমিল্লার চান্দিনা, বরুড়া, দাউদকান্দি, বুড়িচং ও দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ নানা প্রকারের শীতকালীন সবজির সমারোহ। এই যেন শীতের সবজিতে সবুজের হাসি। জেলার সর্ববৃহৎ সবজির পাইকারি বাজার ঐতিহ্যবাহী নিমসার বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রকারের শীতকালীন সবজিতে ঠাসা। চারপাশে সবজিতে ভরপুর। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার শিকারপুর, মোকাম, ডুবাইচর এলাকাটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায় ওই সব এলাকার ফসলি মাঠের চাষিরা সবুজ সবজি উৎপাদনে বারো মাসই ব্যস্ত সময় কাটয়। এজন্যেই এ বুড়িচং উপজেলাটিকে বলা হয় সবজির রাজ্য। এখানের চাষিদের একটিই আক্ষেপ, সবজি সংরক্ষণে তাদের কোন হিমাগার নেই। জেলার সিংহভাগ সবজি উৎপাদিত হয় চান্দিনা, বরুড়া, দাউদকান্দি, বুড়িচং ও দেবিদ্বার উপজেলায়। তাই বাজারে আসছে প্রচুর তরি-তরকারি। চাষীদের কাছ থেকে নগরীর ও বিভিন্ন উপজেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জাতের সবজি ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে শহরে। উৎপাদিত এই সবজির সিংহভাগ চলে যায় ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ আশপাশের জেলা শহরেগুলোতে।

উৎপাদিত সবজির মধ্যে রয়েছে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, মূলা, গাজর, পালনশাক, লালশাক, সবুজ শাক, লাউ, শিম, মিষ্টি কুমড়া, ধনিয়া, করলা, দেশীয় গোল আলু ইত্যাদি। তবে এ মুহূর্তে মাঠে মাঠে শিম, বেগুন, বাঁধাকপিরই প্রাধান্য। স্থানীয় চাষী এমরান মিয়া জানান, বাজারে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ২০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি কেজি ২০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ৩০ টাকা, লাউ/কদু পিচ প্রতি ৩০ টাকা করে। চড়ামূল্যে বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি। সবজির বেশি দাম পেয়ে চাষিরা খুশি।

শিকারপুর গ্রামের সবজি চাষি আমির হোসেন, শ্রীমন্তপুরের গ্রামের কৃষক হযরত আলী ও চাষী মনির হোসেন জানান, সবজির পাইকার ব্যবসায়ীরাও সবজি চাষিদের কাছ থেকে সবজি ক্রয় করে তা স্থানীয় বাজারে বাজারজাতকরাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

এ বিষয়ে কুমিল্লা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক দিলীপ কুমার অধিকারী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কুমিল্লায় প্রচুর পরিমাণ সবজি চাষাবাদ হয়ে থাকে। কৃষকরা আগাম চাষ করে ব্যাপক সবজি উৎপাদন করে। রবি মৌসুমে আলুসহ ধনিয়াপাতা, মরিচসহ শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষাবাদ হয়। কৃষকরা চাহিদা অনুযায়ী বাজারে দামও পাচ্ছেন। এখনো পর্যন্ত সবজি চাষ হচ্ছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি চাষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাঠ

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ